Logo
Logo
×

আওয়ামী লীগ

তত্ত্বাবধায়কের দাবি নিয়ে আলোচনার সুযোগ নেই: আ.লীগ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০২৩, ১০:৫৪ পিএম

তত্ত্বাবধায়কের দাবি নিয়ে আলোচনার সুযোগ নেই: আ.লীগ

আওয়ামী লীগ নির্বাচনে শক্তিশালী রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী চায়। কিন্তু সংবিধানবিরোধী কোনো দাবি তারা মানবে না। বাংলাদেশে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। কারণ সংবিধান থেকে তত্তাবধায়ক সরকার উঠে গেছে। আওয়ামী লীগ সংবিধান থেকে এক ইঞ্চিও সরবে না। নতুন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে আলোচনার সুযোগ নেই। তবে প্রয়োজনে অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে। 

শনিবার বিকালে ঢাকা মহানগরের ১০টি স্থানে আয়োজিত আলাদা আলাদা শান্তি সমাবেশে আওয়ামী লীগ নেতারা এসব কথা বলেন। 

এ সময় তারা ষড়যন্ত্রের পথ পরিহার করে নির্বাচনে আসার জন্য বিএনপির প্রতি আহ্বান জানান। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, নির্বাচনই হলো ক্ষমতা বদলের একমাত্র পথ। সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেই নির্বাচন হবে অবাধ ও নিরপেক্ষ। নির্বাচনে না এসে জনগণের জানমালের ক্ষতি করার চেষ্টা হলে রাজপথেই অপশক্তিদের মোকাবিলা করা হবে, ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে। 

‘বিএনপি-জামায়াতের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, নৈরাজ্য ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে’ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এসব শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে। ১০টি সংসদীয় আসন ধরে আয়োজিত এসব শান্তি সমাবেশে বিভিন্ন থানা-ওয়ার্ড থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে যোগ দেন। শুধু ১০টি শান্তি সমাবেশই নয়, ঢাকা মহানগরের প্রতিটি ওয়ার্ড-থানা এলাকাতেও আওয়ামী লীগ সতর্ক অবস্থান নিয়ে শান্তি সমাবেশ ও মিছিল করেছে। একই দিন বিএনপির কর্মসূচি থাকলেও রাজধানীর কোথাও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। ঢাকা মহানগর ছাড়াও এদিন সারা দেশের মহানগরের থানায় থানায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মিছিল-সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন।

মোহাম্মদপুর : মোহাম্মদপুর টাউন হলের সামনে শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। এ সময় বিএনপি দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছে দাবি করে তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রের পথ ছেড়ে বিএনপিকে গণতন্ত্রের পথে আসতে হবে। নির্বাচন ছাড়া কোনো সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা যায় না। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিএনপি দেশবিরোধী অনেক ষড়যন্ত্র করেছে, তারেক রহমান লন্ডনে বসে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র করছে।

সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি টাউন হল থেকে মোহাম্মদপুর বাসস্টান্ডে গিয়ে শেষ হয়। শান্তি সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ এম এ সাত্তার এবং সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মিয়া চাঁন। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবাহান গোলাপ, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সংসদ সদস্য সাদেক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানা, যুব মহিলা লীগের সভাপতি আলেয়া সারোয়ার ডেইজি প্রমুখ।

বঙ্গবন্ধু এভিনিউ : বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান। এ সময় সংবিধানবিরোধী কোনো দাবি আওয়ামী লীগ মানবে না জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনে শক্তিশালী রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী চায় আওয়ামী লীগ। সরকারবিরোধীদের ক্ষমতা ভাগাভাগির স্বপ্ন পূরণ হবে না। বিএনপি প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু পরিবারের জন্য জীবন দিয়ে লড়াই করবে দলের নেতাকর্মীরা। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুস সাত্তার মাসুদের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সাঈদ খোকনসহ নগর নেতারা।

উত্তরা : উত্তরার আজমপুর আমির কমপ্লেক্সের সামনে শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম। এ সময় তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ রাজপথের দল, রাজপথেই থাকবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জনগণের ভোটে আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য ও মহানগরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিব হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতি, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শবনম জাহান শীলা প্রমুখ।

বাড্ডা : রাজধানীর বাড্ডায় ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপি। এ সময় নতুন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, বিএনপি বেহায়া-নির্লজ্জের মতো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করছে। বাংলাদেশে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার উঠে গেছে। আমরা সংবিধান থেকে এক ইঞ্চিও সরব না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কোনো আলোচনা নয়। আলোচনা হতে পারে অন্য কোনো বিষয় নিয়ে। আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক জাহানারা বেগম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কাদের খান, বশিরউদ্দিন আহমেদ, আবুল কাসেম প্রমুখ।

মিরপুর : মিরপুরের শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যেকোনো আঘাত মোকাবিলা করে দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রস্তুত রয়েছে। সন্ত্রাসীরা যতই অপচেষ্টা চালাক, দেশের মানুষ অতীতের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন। দেশের মানুষ আজ কোনো অশুভ শক্তিকে দেশকে গ্রাস ও দেশের স্বপ্ন ধ্বংস করতে দেবে না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যেকোনো অপকর্ম প্রতিহত করতে সবসময় সচেতন রয়েছে। আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক সামসুন নাহার চাপা, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, স্থানীয় সংসদ সদস্য আগা খান মিন্টু প্রমুখ।

ধানমন্ডি-৩২ : ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে আয়োজিত শান্তি সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, নির্বাচনকে ভণ্ডুল করার জন্য বিএনপি নানাভাবে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। দলটির নেতা তারেক রহমান লন্ডনে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। কুখ্যাত রাজাকারের ছেলেরা বিএনপির নেতৃত্ব দিচ্ছে। তারা বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া দেখতে পারে না।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, গণমাধ্যম খুললেই তাদের বকবকানি আমরা শুনি। এখন পরিস্থিতি এমন হয়েছে, যত কথা বলবে ততই আমাদের ভালো। বলেছিল- একশ বছরেও (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় আসবে না। একশ বছরই ইনশাআল্লাহ ক্ষমতায় থাকব। বলেছিল (আওয়ামী লীগ) ৩০টা আসন পাবে না। ইনশাআল্লাহ ওরাই ৩০ আসন জীবনে পাবে না।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল এমপির সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, ঢাকা-১০ আসনের এমপি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, ঢাকা মাহনগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক তাহমিনা সুলতানা, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মোজাম্মেল হক হেলাল, সদস্য শাহজাহান ভূঁইয়া মাখন প্রমুখ।

ডেমরা : ডেমরার চৌরাস্তায় শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও নৈরাজ্য কিছুতেই প্রতিষ্ঠিত হতে দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা দিনরাত রাজপথে নিজেদের শক্তি দিয়ে কঠোরভাবে প্রতিরোধ করবে। ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খান মাসুদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মিসবাহুর রহামান ভূঁইয়া রতন, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সারোয়ার কবির, কার্যনির্বাহী সদস্য সালাউদ্দিন বাদল, সদস্য রোকসানা ইসলাম চামেলী প্রমুখ।

কদমতলী : ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শান্তি মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকাশ কুমার ভৌমিকের নেতৃত্বে শ্যামপুর বাজার থেকে শুরু করে জুরাইন বিক্রমপুর প্লাজায় গিয়ে বিশাল এ মিছিল শেষ হয়। এ সময় ছিলেন সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাহিদা বেগম, কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি হাজী নুর হোসেন, সহ-সভাপতি ৫৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সফিকুর রহমান সাইজুল, গোলাম সারোয়ার মামুন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজ আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ ফজলুর রহমান ফজু, দপ্তর সম্পাদক আমিনুর রহমান তারা, শ্যামপুর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুক প্রমুখ।

এছাড়া ঢাকা-৭ আসনের ঢাকেশ্বরী বালুর মাঠে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির এতে উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা-৫ আসনের যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা-৪ সংসদীয় আসনে শ্যামপুর রেলগেটে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম উপস্থিত ছিলেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম