Logo
Logo
×

এশিয়া

রাজধানী রক্ষায় মরিয়া জান্তা

Icon

শাবনুর নাহার

প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৩, ০২:২৩ এএম

রাজধানী রক্ষায় মরিয়া জান্তা

মিয়ানমারে গত আড়াই বছরের শাসনামলে এবারই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে জান্তা সরকার। গত কয়েক মাস ধরে প্রতিদিনই প্রতিরোধ যুদ্ধের মুখে পড়ছে সেনাবাহিনী। ‘অপারেশন-১০২৭’খ্যাত সংঘবদ্ধ বিদ্রোহীগোষ্ঠীর ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের সঙ্গে যুদ্ধে একের পর এক ঘাঁটি হারাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী।

অবস্থা এমন যে, অর্ধেক মিয়ানমারই এখন বিদ্রোহীদের দখলে। এ পরিস্থিতিতে রাজধানী নেপিদো রক্ষায় মরিয়া হয়ে উঠেছে জান্তা। নভেম্বরের প্রথম থেকেই শুরু হয়েছে সেই তোড়জোড় প্রস্তুতি। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হামলা থেকে রক্ষার জন্য ইতোমধ্যেই রাজধানীর চারপাশে সেনাদের নিয়োগ করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১৪ হাজার সেনা। নির্দিষ্ট একটি দূরত্ব পরপর চতুর্দিকেই বসানো হয়েছে সেনা চৌকি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক পুলিশ কর্মকর্তা দেশটির সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাউকে বলেছে, লুই এবং পাইনমানা শহরের বাগো ইয়োমা পর্বতমালায় এসব স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন। স্থানীয় এক সূত্র জানিয়েছে, সেনাবাহিনী বাগো এবং শান ইয়োমার দিকে যাওয়ার পথে ৪টি চেকপয়েন্ট স্থাপন করেছে। প্রতিটিতে ৫ থেকে ১০ জন সশস্ত্র সেনা রয়েছে।

অপর একজন বাসিন্দা বলেছেন, অঞ্চলগুলোতে দুটি পদাতিক ব্যাটালিয়ন-৬০৪ এবং ৬০৫ মোতায়েন আছে। এই ইউনিটগুলোর বেশিরভাগ সেনাকে পাহারা দেওয়ার জন্য পাহাড়ি এলাকার চৌকিগুলোতে পাঠানো হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তারা রাজধানীতে গৃহস্থালির নিবন্ধন পরিদর্শনও বাড়িয়ে দিয়েছেন। সামরিক আধিকারীকদের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানিয়েছে, বাগো এবং ইয়াঙ্গুন অঞ্চল থেকে প্রায় ১০ হাজার কমব্যাট সেনাকে নেপিদোর কেন্দ্রীয় অঞ্চলের ঘাঁটিতে স্থানান্তর করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। যুদ্ধসেনা ছাড়াও ৪ হাজার কমান্ডো মোতায়েন করা হয়েছে। সাবেক সেনা ইউ লুইন বলেছেন, নেপিদোতে তারা (জান্তারা) ৭০টি নতুন ব্যারাকও নির্মাণ করছে। নেপিদোর প্রবেশপথ কঠোর করা হয়েছে। তবে রাজধানীর থা প্যা কোনে অঞ্চলের প্রবেশপথটি খুলে দেওয়া হয়েছে। এটি ২০২১ সালে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে বন্ধ থাকলেও চলতি বছরের ১২ নভেম্বর জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এ প্রবেশপথে অল্প কিছু পুলিশ পাহারায় রয়েছে।

মিয়ানমারের অভ্যুত্থানবিরোধী যোদ্ধারা রাজধানী নিয়ন্ত্রণের জন্য সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে নেমেছে। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে উভয় পক্ষই। সামরিক বাহিনী ও বিদ্রোহীদের সংঘাতে গৃহযুদ্ধের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। নেপিদোতে বসবাসকারী বাসিন্দারা উদ্বিগ্ন এবং ভীত হয়ে পড়েছেন। ফলে প্রাণভয়ে মিয়ানমার ছাড়ছেন হাজার হাজার নাগরিক। ফলশ্র“তিতে প্রতিবেশী দেশগুলোতে শরণার্থীর ঢল নামতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর এবার প্রথম বারের মতো বিদ্রোহীদের সবচেয়ে বড় প্রতিরোধের মুখে পড়েছে জান্তা সরকার। এতেই প্রাণভয়ে দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বেঁচে নিচ্ছেন শরণার্থী জীবন। এদিকে মিয়ানমার সংঘর্ষে আটকে পড়া দুই শতাধিক থাই নাগরিককে থাইল্যান্ডে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। রোববার থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নাগরিকদের চীন হয়ে নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

আরও জানিয়েছে, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সহায়তায় ২৬৬ জন থাই এবং একটি অনির্দিষ্ট সংখ্যক ফিলিপিনো ও সিঙ্গাপুরবাসীকে উত্তর শান রাজ্যের লাউকাইং থেকে মিয়ানমার-চীন সীমান্তে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম