
প্রিন্ট: ০৩ মার্চ ২০২৫, ০৫:৫৪ এএম
কম্বোডিয়ার হ্রদে ভাসমান টয়লেট

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০২৩, ১০:৫১ পিএম

ফাইল ছবি
আরও পড়ুন
আধুনিক বিশ্বে এখনো আদিম জীবন! এশিয়ার অন্যতম দরিদ্র দেশ কম্বোডিয়ার সাপ হ্রদের ওপর গড়ে ওঠা চংপ্রলে গ্রাম তার জলজ্যান্ত উদাহরণ। লোকালয় থেকে শত শত মাইল দূরের ছোট্ট জনপদ। রাস্তা নেই, সুপেয় পানি নেই। স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট দূরের কথা, জোড়াতালি দেওয়া একটা শৌচাগারও ছিল না এতদিন। হ্রদের পাড়েই চলত প্রাতঃকৃত্য। সে পানিতেই শূচি আবার সেখানেই শৌচ। অর্থাৎ যে পানিতে গোসল সে পানিতেই মলত্যাগ। এতে প্রায় সারা বছরই ডায়রিয়ায় ভুগে শত শত শিশু। আছে অন্যান্য সব পানিবাহিত রোগও। নাগরিক সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র এ হ্রদবাসী জনপদের স্বাস্থ্যসচেতনায় দেবদূতের মতো এগিয়ে এসেছে স্থানীয় সামাজিক উন্নয়কারী সংস্থা ওয়েটল্যান্ডস ওয়ার্ক (ডব্লিউডব্লিউ)। এএফপি।
সিমরিপ প্রদেশের উত্তর পশ্চিম সীমান্তে দেশটির বৃহত্তম মৎস ভান্ডার এ হ্রদের চার পাশে প্রায় ১০ মানুষের বাস। সবাই থাকেন ভাসমান বাড়িতে। হ্রদজুড়ে ২০ হাজার ভাসমান বাড়ি। কিন্তু একটাতেও ছিল না কোনো টয়লেট! ছিল না ন্যূনতম কোনো স্যানিটেশন ব্যবস্থা! হ্রদের দুই পাড় ঘিরে যে ৭০টি বাড়ি দেখা যায় সেখানেও নেই কোনো টয়লেট। একটি স্কুল আছে, তারও একই দশা-শৌচালয়বিহীন।
সম্প্রতি দেশটির স্থানীয় এনজিও সংস্থা ডব্লিউডব্লিউ হ্রদের বর্জ্য ফিল্টার করার জন্য ভাসমান টয়লেট তৈরি করে সমস্যাটি মোকাবিলা করার চেষ্টা করছে। তারা গ্রামটিতে ১৯টি ভাসমান টয়লেট স্থাপন করেছে। পানি পরিষ্কার করতে টয়লেটগুলোতে তিনটি ছোট ফিল্টার ট্যাঙ্ক ব্যবহার করা হয়। মানুষের বর্জ্য টয়লেট থেকে প্রথম ট্যাঙ্কে যায়। তারপর দ্বিতীয় এবং তৃতীয়। এছাড়া এর ভেতরে থাকা বায়োফিল্ম (জীবাণু-অণুজীবের একটি পাতলা ম্যাট্রিক্স) রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুগুলোকে নষ্ট করে দেয়। সংস্থাটি আশা করে যে, ভাসমান টয়লেটগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করলে হ্রদটিতে স্যানিটেশন ব্যবস্থা উন্নয়ন হবে। স্থানীয় বাসিন্দা সি ভর্ন (৫২) বলেন, আমরা এই জল ব্যবহার করি, পান করি এবং আমরা এই জলে মলত্যাগ করি। তার পরিবার বেশিরভাগ সময় অসুস্থ থাকে। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন আমি আমার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন। জলের দিকে তাকান, কোনো স্যানিটেশন নেই। আমি খুব চিন্তিত কিন্তু আমি কী করব বুঝতে পারছি না।
ওয়েটল্যান্ডস ওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা ট্যাবার হ্যান্ড এএফপিকে বলেন, আমরা ভাসমান গ্রামে স্যানিটেশনের কথা বলছি যেখানে আগে কখনো স্যানিটেশনের ব্যবস্থা ছিল না। ফলস্বরূপ ঘোলাজল পান করার জন্য যথেষ্ট পরিষ্কার না হলেও এটি ধোয়া এবং রান্নার জন্য ব্যবহার করা নিরাপদ। ওয়াটার এইড দাতব্য সংস্থার মতে, জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশের সঠিক টয়লেট সুবিধা নেই। যার কারণে ডায়রিয়ায় এখানকার পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের মৃত্যুর হার বেশি।