
প্রিন্ট: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:২৩ এএম
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক প্রসঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা
বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনাই মূল লক্ষ্য
আরও একশ পণ্য শুল্কমুক্ত তালিকায় যুক্ত করার উদ্যোগ * আমরাও সহযোগিতা করব এবং তারাও করবে-অর্থ উপদেষ্টা

বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
-67f587b16ac6d.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনাই মূল্য লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। মঙ্গলবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে আরও একশ পণ্যকে শুল্কমুক্ত তালিকায় যুক্ত করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আশা করছি এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
একই সময়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, সোমবার প্রধান উপদেষ্টা ট্রাম্প প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আমরা সারা দিয়েছি। ইতিবাচক কিছু প্রত্যাশা করছি। আমরাও সহযোগিতা করব এবং তারাও করবে। একটি উইন উইন অবস্থা।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের পণ্য আমদানির ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। সেটি মোকাবিলায় সরকার উল্লেখিত পদক্ষেপ নিয়েছে। বিশেষ করে বাণিজ্য সম্প্রসারণের মাধ্যমে ঘাটতি কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের সেনসাস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ৮৩৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করেছে ২২১ কোটি ডলারের পণ্য। এ হিসাবে বাংলাদেশের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত বা বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি ৬১৫ কোটি ডলারের।
বৈঠক শেষে বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, ইউনাইটেড স্টেটস অব ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ (ইউএসটিআর) অফিসকে পাঠানো চিঠির এখনো কোনো উত্তর আসেনি। অবশ্য সোমবার সন্ধ্যায় ইউএসটিআর অফিসে বাণিজ্য সম্প্রসারণের মাধ্যমে ঘাটতি বাণিজ্য কমিয়ে আনার কথা বলে চিঠি দিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছেন-যুক্তরাষ্ট্র সামগ্রিকভাবে শুল্ক আরোপের ফলে মানুষের মনে শঙ্কা সামাল দিতে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন কিনা-এর জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আমাদের মূল বিষয় হচ্ছে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো। এজন্য বিভিন্ন রকমের বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। আপনারা দেখেছেন সোমবার আমেরিকান প্রশাসন চায়নিজ... ট্যারিফ ঘোষণার বিপরীতে আরও ৫০ শতাংশ দিতে পারে। এ ধরনের পরিবর্তনশীল অবস্থায় যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া জটিল।
ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক : ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে যুক্তরাজ্য ও সিঙ্গাপুর থেকে দুই কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় হবে এক হাজার ২০১ কোটি টাকা। এর মধ্যে সিঙ্গাপুরভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ভিটল এশিয়া প্রা. লি. থেকে এক কার্গো এলএনজি আনা হবে। প্রতি এমএমবিটিইউ ১২.৩৮ মার্কিন ডলার হিসাবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আনতে ব্যয় হবে ৫৯৪ কোটি টাকা। এছাড়া আরেক কার্গো এলএনজি আনা হবে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মেসার্স টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড থেকে। সেখানে প্রতি এমএমবিটিইউ ১২.৬৭ মার্কিন ডলার হিসাবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে মোট ব্যয় হবে ৬০৭ কোটি টাকা।
সিদ্ধ চাল আমদানি : সিঙ্গাপুর থেকে ৫০ হাজার টন নন বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানি করা হবে। প্রতি কেজির দাম পড়বে ৫০.৮১ টাকা। আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে এ চাল কেনা হচ্ছে। এতে ব্যয় হবে ২৫৪ কোটি টাকা। সিঙ্গাপুর ভিত্তিক মেসার্স অ্যাগ্রোকরপ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড চাল সরবরাহ করবে।
ডাল ও সয়াবিন ক্রয় : টিসিবির জন্য ২৮০ কোটি টাকার সয়াবিন ও মসুর কিনবে সরকার। এর মধ্যে ১০ হাজার টন মসুর ডাল ও এক কোটি ২০ লাখ লিটার ভোজ্যতেল রয়েছে। শেখ অ্যাগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে প্রতি কেজি ৯২.৭৫ টাকা হিসাবে ডাল কেনা হবে। এতে ব্যয় হবে প্রায় ৯৩ কোটি টাকা। এছাড়া ভোজ্যতেল সরবরাহ করবে থাইল্যান্ডের লাইফ অ্যান্ড হেলথ (থাইল্যান্ড)। প্রতি লিটার ১৫৬ টাকা হিসাবে ব্যয় হবে ১৮৭ কোটি টাকা।