Logo
Logo
×

অর্থনীতি

শ্রমিকদের সব দাবি মেনে নিলো মালিকপক্ষ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৬ পিএম

শ্রমিকদের সব দাবি মেনে নিলো মালিকপক্ষ

দেশে চলমান শ্রমিক অসন্তোষের পরিপ্রেক্ষিতে আয়োজিত বৈঠকে শ্রমিকদের ১৮ দাবি মেনে নিয়েছে মালিকপক্ষ। 

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শ্রমিকপক্ষ এবং মালিকপক্ষের বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

একই সঙ্গে পবুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) থেকে সারাদেশের সব শিল্পকারখানা খোলা রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.), শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এ এইচ এম সফিউজ্জামান।

সভায় জানানো হয়, দেশে চলমান শ্রমিক অসন্তোষের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিকদের ১৮ দাবি মেনে নিয়েছে মালিকপক্ষ। এগুলো হলো, টিফিন বিল প্রদান, ১০ অক্টোবরের মধ্যে সব কারখানায় ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়ন, শ্রমঘন এলাকায় টিসিবি ও ওএমএসের মাধ্যমে রেশন প্রদান, শ্রমিকদের আগের বকেয়া ১০ অক্টোবরের মধ্যে পরিশোধ, ঝুট ব্যবসা মনিটরিং করে শ্রমিকদের মধ্যে থেকে ক্রেতা বের করা, কারখানার শ্রমিকদের কালো তালিকাভুক্ত করা বন্ধ করতে মনিটরিং বিষয়ে একমত হয়েছে উভয়পক্ষ।

এছাড়াও গত বছর ন্যূনতম মজুরি আন্দোলন ও বিভিন্ন সময়ে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে করা নিপীড়ন মামলা প্রত্যাহারের জন্য রিভিউ করে আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সমাধান করা, নিয়োগের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করা, জুলাই আন্দোলনে শহীদদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা, রানাপ্লাজা ও তাজরীন ফ্যাশনের বিষয়ে কমিটি গঠন, সব কারখানায় ডে কেয়ার সেন্টার নিশ্চিতের দাবি মানা হয়েছে।

অন্যায্যভাবে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করা, নারী কর্মীদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ১২০ দিন, ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণে তিন সদস্যের কমিটি গঠন, শ্রম আইন সংশোধন নিয়ে কাজ করা, প্রভিডেন্ট ফান্ড পর্যালোচলা করে শ্রমিক মালিকের আলোচনার মাধ্যমে চালু করা এবং প্রতি বছর দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি বিবেচনা করে বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট দিতে কমিটি গঠন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

গতকাল সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে সরকারের কাছে ১৮টি দাবি উত্থাপন করে শ্রমিক পক্ষ।

তাদের দাবিগুলো হলো

১. মজুরি বোর্ড পুনর্গঠনপূর্বক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি পুনর্নির্ধারণ করতে হবে।

২. যে সব কারখানায় ২০২৩ সালে সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরি ও এখনো বাস্তবায়ন করা হয়নি তা দ্রুত  বাস্তবায়ন করতে হবে।

৩. শ্রম আইন সংশোধন করতে হবে।

৪. কোনো শ্রমিকের চাকরি পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার পর চাকরি থেকে অব্যাহতি দিলে/চাকরিচ্যুত হলে একটি বেসিকের সমান অর্থ প্রদান করতে হবে, এর সাথে সাংঘর্ষিক শ্রম আইনের ২৭ ধারাসহ অন্য ধারাসমূহ সংশোধন করতে হবে।

৫. সব প্রকার বকেয়া মজুরি অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে।

৬. হাজিরা বোনাস (২২৫ টাকা), রাত ৮ টার পর বিদ্যমান টিফিন বিলের সাথে ১০ টাকা এবং বিদ্যমান নাইট বিল১০ টাকা বৃদ্ধি করে নূন্যতম ১০০ টাকা করা।

৭. সব কারখানায় প্রভিডেন্ড ফান্ড ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

৮. মূল্যস্ফীতি বিবেচনা করে শ্রম আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাৎসরিক ইনক্রিমেন্টের বিষয়ে কমিটি গঠন

৯. শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

১০. বিজিএমইএ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত বায়োমেট্রিক ব্ল্যাকলিস্টিং করা যাবে না; বায়োমেট্রিক তালিকা সরকারের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

১১. সব প্রকার হয়রানিমূলক এবং রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

১২. ঝুট ব্যবসার আধিপত্য বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, প্রয়োজনে এ বিষয়ে আইন করতে হবে।

১৩. কলকারখানায় বৈষম্যবিহীন নিয়োগ প্রদান করতে হবে।

১৪. জুলাই বিপ্লবে শহীদ এবং আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ এবং চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে।

১৫. রানা প্লাজা এবং তাজরীন ফ্যাশনস দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের কল্যাণে তদন্তান্তে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

১৬. শ্রম আইন অনুযায়ী সব কারখানায় ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন করতে হবে।

১৭. অন্যায্যভাবে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে।

১৮. নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটির মেয়াদ ১২০ দিন নির্ধারণ করতে হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম