জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে মহান বিজয় দিবস উদযাপন
নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৬ এএম
ছবি: সংগৃহীত
নিউ ইয়র্কে-জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। সোমবার ১৬ (ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত উক্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন প্রবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা, বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
অনুষ্ঠানটি শুরু হয় জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। আলোচনা পর্ব শুরুর আগে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্ম-উৎসর্গকারী বীর শহীদগণ এবং জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে বীর শহীদগণের স্মরণে একমিনিট নীরবতা পালন ও তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, ও মাননীয় পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বাণী পাঠ করা হয়। এরপর অনুষ্ঠানে ঢাকা থেকে প্রাপ্ত ‘গণমুক্তি অনিবার্য’ শীর্ষক একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানের উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রবাসী বাংলাদেশীগণ।
তারা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে একযোগে কাজ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে বৈষম্যবিহীন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, তার প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করেন প্রবাসী বাংলাদেশীগণ।
আগত অতিথিদের আলোচনা শেষে সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত। বক্তব্যের শুরুতেই তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহীদ ও দুইলাখ সম্ভ্রম হারা মা-বোনসহ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি এবং জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বীর শহীদগনের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন আমাদের সূর্যসন্তানগণ দেখেছিলেন, যে স্বপ্ন বাস্তবায়নে তারা অমূল্য প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন, তা বাস্তবায়নের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থান।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের চেতনার সামঞ্জস্য বর্ণনা করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য নির্মূলের মাধ্যমে যে বাংলাদেশ সৃষ্টির স্বপ্নে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন সেই একই প্রেরণায় ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান হয়েছে।
তিনি গণঅভ্যুত্থানের উত্তাল সময়ে প্রবাসী বাংলাদেশীদের সমর্থন এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দ্বারা গণঅভ্যুত্থানকে বেগবান করতে তাঁদের অবদান স্মরণ করেন এবং তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। এছাড়াও তিনি গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় অদম্য বাংলাদেশ ২.০ গড়ে তোলার জন্য সকল প্রবাসী বাংলাদেশীকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
নানা ধরনের চড়াই-উতরাই পেরিয়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে মন্তব্য করে রাষ্ট্রদূত মুহিত বলেন, অর্থনৈতিক যে সংকট সৃষ্টি হয়েছিল তা মোকাবেলায় ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সাফল্য প্রদর্শন করেছে।
এ বিষয়ে তিনি প্রবাসীদের রেমিট্যান্স প্রেরণের মাধ্যমে অবদান রাখার জন্য ধন্যবাদ জানান। এই মুহূর্তে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ যে সকল সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে তা মোকাবেলায় সকলের একতাবদ্ধ থাকার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।