ওয়েব সামিটে নেই বাংলাদেশ, আক্ষেপ অংশগ্রহণকারীদের
ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী, পর্তুগাল থেকে
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩১ পিএম
পর্তুগালে চার দিনব্যাপী বিশ্বের সবচেয়ে বড় তথ্যপ্রযুক্তি সম্মেলনে ১৫৩ টি দেশেরও বেশি নাগরিকরা এবং দেশগুলোর স্টার্টআপ অংশগ্রহণ করেছেন। তবে বাংলাদেশের কোন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেনি এ আয়োজনে।
শুধু এই আয়োজন নয় ২০১৬ সাল থেকে পর্তুগালে শুরু হওয়া এই ওয়েব সামিটে বাংলাদেশের কোন প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেনি তবে বাংলাদেশের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত এবং পাকিস্তান তাদের বেশ কিছু প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এখানে অংশগ্রহণ করেছেন।
এমনকি পর্তুগালে অবস্থিত ভারত এবং পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতগণ সেখানে অংশগ্রহণ করেছেন। যদিও সম্মেলনটির তৃতীয় দিন পর্যন্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বা কোন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার এই সম্মেলন অংশগ্রহণ করার কোন রেকর্ড পাওয়া যায়নি। তবে ইতিপূর্বে বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
ওয়েব সামিটে অংশগ্রহণকারী পর্তুগালে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশী মেহেদী হাসান আকাশ আক্ষেপের সুরে বলেন প্রযুক্তির সাথে ১৩ বছরের সম্পর্ক দ্বিতীয়বারের মতো এই আয়োজনে যুক্ত হয়েছি এবং মনের অজান্তেই শুধুমাত্র লাল সবুজের পতাকা খুঁজে ফিরেছি।
আমেরিকার থেকে জাহিদুল ইসলাম প্রবাসী বাংলাদেশী অংশগ্রহণ করেছেন এই সামিটে তবে তিনি শুধু অংশগ্রহণ করেননি নিজের একটি স্টার্টআপ নিয়ে এসেছেন। তবে এটি আমেরিকান স্টার্টআপ একই সাথে সাথে তিনি যদিও আমেরিকা এবং বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিক তবে তিনিও বাংলাদেশের প্রযুক্তির পশ্চাৎপদ ও পরিস্থিতিতে হৃদয় ভাঙ্গা আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন।
জাহিদুল ইসলাম আর্টিফিশিয়ল ইন্টেলিজেন্স ম্যানেজমেন্ট স্টার্টআপ (jutsui.ai)এর বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন - বাংলাদেশের সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কেননা তরুণদের আগ্রহ এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের থেকে সস্তা শ্রমের কারণে বাংলাদেশ অনেক সম্ভাবনাময়। অতি সাধারণ কিছু প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিশ্বমানের কর্মীতে রূপান্তর করা সম্ভব। তবে এর জন্য বাংলাদেশকে তথ্যপ্রযুক্তির উপর বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করতে হবে এমনকি উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্র তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ যুক্ত করে কিছুটা পরিবর্তন আনতে হবে।
অপরদিকে মেহেদী হাসান আকাশ বলেন, বাংলাদেশে নিজের স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠিত করার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু সুযোগ হয়নি এমনকি আইসিটি বিভাগের শীর্ষ কর্তাদের ইশারা ছাড়া কোন স্টার্টআপ আলোর মুখ দেখেনি। তাই এবার পর্তুগালেই শুরু করেছি ইনশাল্লাহ আগামী সামিটে আমার প্রতিষ্ঠান নিয়ে হাজির হব। যা হবে পর্তুগালের প্রতিষ্ঠান অথচ এটি বাংলাদেশের হতে পারত।
বিশ্ব মিডিয়া এই সম্মেলনকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে অথচ তিনটি গণমাধ্যম ঢাকা পোস্ট, যুগান্তর এবং সময় টেলিভিশন ছাড়া বাংলাদেশের কোন গণমাধ্যমে এখানে অংশ নেয়নি। নতুন তথ্য প্রযুক্তির সম্ভাবনাময় বাংলাদেশের জন্য তথ্য প্রযুক্তির গুরুত্ব প্রচারে এই ধরনের আয়োজনে মিডিয়ার অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ বলে যোগ করেন মেহেদী হাসান আকাশ।
তাই বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে বাংলাদেশের সরকার তথ্য প্রযুক্তির গুরুত্ব বিবেচনায় দেশের অভ্যন্তরে নতুন নতুন সম্ভাবনাময় কোম্পানি তৈরির জন্য স্টার্টআপ ল্যাব গঠনে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন এবং এই ধরনের মহাসম্মেলনে অংশগ্রহণ করার মধ্য দিয়ে তরুণদের উৎসাহিত করবেন এবং এর সাথে সাথে তথ্যপ্রযুক্তির রাজ্যে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তির সাফল্য বিশ্বের মাঝে তুলে ধরবেন বলে আশা করছেন এই আয়োজনে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশীরা।