মক্কার উম্মুল-কোরা বিশ্ববিদ্যালয়ে একখণ্ড বাংলাদেশ
নাজমুল হুদা হারুন
প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০১৯, ০৬:৫৬ এএম
ছবি: সংগৃহীত
সৌদি আরবের ঐতিহ্যবাহী উম্মুল-কোরা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে 'জাতিগত সংস্কৃতি উৎসব' আয়োজিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এই প্রথম প্রায় চল্লিশটি দেশের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এ জমকালো আয়োজনে লাল-সবুজের বাংলাদেশও অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করে।
১১ থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত চার দিনব্যাপী চলা সংস্কৃতি উৎসবটি সম্মানিত চ্যান্সেলরের পক্ষ হতে 'ছাত্র বিষয়ক অনুষদ'-এর সম্মানিত ডিন ড. উমর সুম্বুল উদ্বোধন করেন।
'কুল্লুল কুরা ফী উম্মিল কুরা তথা সমস্ত জনপদ মক্কায়' শিরোনামকে ধারণ করে আয়োজিত দৃষ্টিনন্দন এ অনুষ্ঠানটি আগত দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি হতে শুরু করে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, সহকারী ডিন, নানা পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষক-ছাত্রদের আগমনে উৎসবে যেন আনন্দের বন্যা বয়ে গেছে।
এতে প্রায় ১৫টি দেশের কূটনৈতিক শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে আগমন করেন। উৎসবের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার বাংলাদেশ দূতাবাস, রিয়াদ, সৌদি আরবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ড. আবুল হাসান ও শেষদিন বৃহস্পতিবার জেদ্দা কনস্যুলেটের কাউন্সিলর কামরুজ্জামান ভূঁইয়া আগমন করেন। শিক্ষার্থীদের এমন অংশগ্রহণ দেখে তারা অত্যন্ত বিমোহিত হন।
সাংস্কৃতিক উৎসবে প্রতিটি দেশই নিজেদের সমাজ-সংস্কৃতি-সভ্যতা-রীতিনীতি ও দৈনন্দিন জীবনের সামান্য কিছু চিত্র তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে।
নিজ দেশের খাবার, দেশীয় উপকরণ এবং জাতীয় পোশাক ইত্যাদি এ উৎসবে উপস্থাপনের মুখ্য দিক ছিল। অংশগ্রহণকৃত দেশগুলোর মাঝে বাংলাদেশিদের আয়োজন ছিল অনেকটা ব্যতিক্রমী ও মুগ্ধতায় পরিপূর্ণ।
'দেশ-দেশ, বাংলাদেশ' স্লোগানে মুখরিত ছিল চারদিক। প্রতিটি ইভেন্টে বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ ছিল দৃষ্টিনন্দন।প্যারেডে পুরো প্রদর্শন যেন ছেয়ে গেছে লাল-সবুজের পতাকায়। দেশের গ্রাম্য জীবনের কিছু খণ্ডচিত্র অভিনয়ে অভিনয়ে তুলে ধরার হয়েছে। দেশীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, ঐতিহাসিক স্থান ও পর্যটন কেন্দ্রগুলোর পরিচিতি সংবলিত স্থিরচিত্রে স্টলের দেয়ালে সাঁটানো ছিল।
দেশীয় পোশাক, স্বদেশি নানা ধরনের খাবার, মিষ্টান্ন ও হরেক রকমের পিঠাপুলিতে পূর্ণ ছিল পুরো কর্ণারটি। নবদুলার পরিচ্ছদ, দুলহানের জন্য ব্যবহৃত পালকি ও ঐতিহ্যবাহী ত্রি-চক্রযান রিকশা ইত্যাদির উপস্থাপন ছিল উল্লেখযোগ্য।
উল্লেখ্য, মক্কার উম্মুল কোরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় চল্লিশটি দেশের এক লাখ শিক্ষার্থীর মাঝে বহিরাগত শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ছয় হাজার।
তন্মধ্যে প্রায় সত্তরজন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এমফিল-পিএইচডিসহ বিভিন্ন স্তরে সুনামের সঙ্গে অধ্যয়ন করছে।
লেখক: শিক্ষার্থী, উম্মুল-কোরা বিশ্ববিদ্যালয়