ইতিহাসের পাতায় লেখা হলো এক নতুন নাম
রহমান মৃধা, সুইডেন থেকে
প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৩:১৪ এএম
বিয়াঙ্কা আন্দ্রেস্কু, (Bianca Andreescu ) মাত্র ১৯ বছর বয়স। দেখলাম তার পারফরমেন্স টেনিসের জগতের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন সেরেনা উইলিয়ামসের সঙ্গে।
একই সঙ্গে আজ থেকে ঠিক ২০ বছর আগে সেরেনা উইলিয়ামস নিজেও তার নাম লিখতে পেরেছিল টেনিসের পাতায় ইউ এস ওপেন গ্র্যান্ড স্লাম জিতে। তবে সেরেনার ২৪ তম গ্র্যান্ড স্লাম জেতা হলো না এবারও।
বিয়াঙ্কা আন্দ্রেস্কু ১০ বছর বয়সে বাবা-মার হাত ধরে রোমানিয়া ছেড়ে পাড়ি দিয়েছিল কানাডায়। সেই থেকে টেনিসের জগতে মোটিভেটেড এবং ডেডিকেটেড। গ্র্যান্ড স্লামে ১৯ বছর বয়সী বিয়াঙ্কা আন্দ্রেস্কুর চূড়ান্ত অভিষেকটি একটি স্মরণীয় ঘটনা কানাডার জন্যও।
ইতিহাসের প্রথম কানাডিয়ান হিসেবে কোনও গ্র্যান্ড স্লাম ওপেনের শিরোপা জিতল বিয়াঙ্কা। সে ভালো খেলে এবং তার মুভমেন্ট ভালো সবাই জানে কিন্তু আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে দর্শকদের কোনও সাপোর্ট ছাড়া (Arthur Ashe-stadiam) সে খেলেছে যা ছিল অসাধারণ টেনিসের জগতে। সেরেনাকে ৬-৩, ৭-৫ সেটে হারিয়ে ইউএস ওপেনের নতুন রানি হলো বিয়াঙ্কা আন্দ্রেস্কু।
সেরেনা গত বছর ইউএস ওপেনের ফাইনালে হেরেছে জাপানি তারকা নাওমি ওসাকার (Naomi Osaka) কাছে। গত বছর উইম্বলডন হেরেছে অ্যাঞ্জেলিক কেরবারের (Angelique Kerber) কাছে। এ বছর উইম্বলডনে হেরেছে সিমোনা হালেপের (Simona Halep) কাছে।
আর এবার বিয়াঙ্কা আন্দ্রেস্কুর কাছে।
ইতিহাসে নাম লিখতে চাইলে কি তা সম্ভব? নাকি অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারলে তা ইতিহাস হয়ে যায়? বিশ্ব রেকর্ড করা যেমন কঠিন আবার তা ভঙ্গ করাও কঠিন। সেরেনা ২৩ বার গ্র্যান্ড স্লাম জিতেছে অথচ পর পর চারবার ফাইনালে পরাজিত হলো!
ইতিহাসে মার্গারেট কোর্ট ছাড়া আর কোনও টেনিস তারকার এত গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপা নেই। কোর্টকে টপকিয়ে রেকর্ড ভঙ্গ করে নতুন করে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখা হলো না এবারও সেরেনার।
অন্যদিকে বছরের শুরুতে বিয়াঙ্কা ছিল ওয়ার্ল্ড র্যাঙ্কিংয়ে ১৭৮তম স্থানে। আজ তার র্যাঙ্কিং ওয়ার্ল্ড নং পাঁচ ইউএস ওপেনের শিরোপা জিতে। মাত্র নয় মাসের ব্যবধানে কত কিছুই না হয়ে গেল!
তরুণ খেলোয়াড়দের অনেকেই বড় সাফল্যের পর নিজেদেরকে শীর্ষে ধরে রাখতে পারছে না। ক্রমাগত প্রেশার বা আরও বড় এক্সপেকটেশন হঠাৎ তাদেরকে ভারসাম্যহীন করছে, যার কারণে বড় সাফল্যগুলো আর পুনরাবৃত্তি হচ্ছে না। সাম্প্রতিক গ্র্যান্ড স্লাম বিজয়ী বিয়াঙ্কা যদি সেই পরিস্থিতিটির মধ্যে পড়ে, কিভাবে সাফল্যের জন্য যে মেন্টাল টাফনেসের দরকার তা সে পাবে? মেন্টাল টাফনেস কিনতে পাওয়া যায় না। কঠিন পরিশ্রম এবং বার বার বিজয়ের ট্রফি হাতে পাওয়ার মধ্যে লুকিয়ে আছে মেন্টাল টাফনেস।
সমাজের সব বিষয়ের ওপর লিখালিখি করি, কারণ একটিই তা হলো আমরা জীবন চলার পথে সব কিছুর সঙ্গেই পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। আমার ছেলে-মেয়ে টেনেসির সঙ্গে জড়িত বিধায় খেলাধুলার সঙ্গে রয়েছে আমার এনগেজমেন্ট অন্যদের চেয়ে বেশি। খেলাধুলার জগতে আমি শুধু পরাজয় দেখিনা। আমি দেখি এর পেছনে কি কারণ জড়িত। একইভাবে জেতার পেছনে কি কারণ রয়েছে। কি নতুন শিক্ষণীয় (lesson learned ) থাকতে পারে ভালো থেকে আরও ভালো (good to great) করার জন্য ইত্যাদি।
খেলাধুলার জগতে সাফল্য অর্জন করতে দরকার কঠিন পরিশ্রমের সঙ্গে সাধনা এবং বাসনা। আর এই সাধনা এবং বাসনা থাকতে হবে শয়নে, স্বপনে, জাগরণে, ধ্যানে, জ্ঞানে এবং কর্মে। কারণ খেলাধুলার জগতে the winner takes all credit and second place is for looser...