ফিলিস্তিনের আল-কুদসে ইসরাইলী বাহিনীর হামলা ও দখলদারিত্বে বাংলাদেশের নিন্দা
সাগর চৌধুরী, সৌদি আরব থেকে
প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০১৯, ০২:৩৯ পিএম
ফিলিস্তিনের আল-কুদস আল-শরিফে ইসরাইলী দখলদারি বাহিনী কর্তৃক মুসলিম ফিলিস্তনিদের ওপর বর্বরোচিত হামলা এবং অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে ইসরাইলী বসতি সম্প্রসারণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ।
ওআইসির নির্বাহী কমিটির এক জরুরী সভায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এম পি এ নিন্দা জ্ঞাপন করেন।
বুধবার (১৭ জুলাই) সৌদি আরবের জেদ্দায় ওআইসির এক জরুরী সভায় আরও যোগ দেন রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ, রিয়াদ দূতাবাসের মিশন উপ-প্রধান ড. নজরুল ইসলাম ও অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইব্রাহিম আব্দুল আজিজ আল আসাফ সভায় সভাপতিত্ব করেন। ওআইসির মহাসচিব ড. ইউসুফ বিন আহমেদ আল ওথাইমিন সভায় উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ওআইসির নির্বাহী কমিটির সদস্য বিভিন্ন দেশের মন্ত্রীরাও সভায় যোগ দেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ ধরণের কার্যক্রম শুধুমাত্র মানবিক সংকট বৃদ্ধি করে এবং দুটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার
কার্যকর আলোচনার পথ বন্ধ করে দেয়। তিনি আল-কুদস আল-শরিফকে রাজধানী হিসেবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে বাংলাদেশের অবস্থান পূনর্ব্যক্ত করেন। শাহরিয়ার আলম বলেন ফিলিস্তিনে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও ইসরাইলী দখলদারিত্ব দূর করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব, সাধারণ পরিষদের সভাপতি, নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির কাছে ওআইসির সদস্যদের উদ্বেগ জানাতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনের মানুষের পাশে বাংলাদেশের সরকারের সমর্থন ও সহানুভূতি রয়েছে এবং এ ব্যাপারে বাংলাদেশের সংবিধানে বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিকতা ও সহানুভূতি প্রদর্শন করে সীমিত সম্পদ সত্ত্বেও বাংলাদেশে ১২ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতির কারণে এ পরিস্থিতিতেও জাতিসংঘের ফিলিস্তিন বিষয়ক ত্রান সহায়তায় (UNRWA) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিগত বছর ৫০ হাজার মার্কিন ডলার সহায়তা প্রদান করেছেন।
শাহরিয়ার আলম বলেন, বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমন এক মুসলিম উম্মাহর স্বপ্ন দেখতেন যেখানে সকল মুসলিম গৌরবের সঙ্গে জীবনযাপন করবে এবং সকল ধর্মের ও বর্ণের মানুষের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি ওআইসিকে কার্যকর ও সমস্যা সমাধানে সক্ষম একটি সংগঠন হিসেবে দেখতে চান। তিনি সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে ফিলিস্তিন সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করায় আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ওআইসির দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য হিসেবে এবং জাতিসংঘে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
সভার শুরুতে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. রিয়াদ আল মালিকি আল-কুদসে ইসরাইলী আগ্রাসনের সর্বশেষ পরিস্থিতি অবহিত করেন।
সভা শেষে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ওআইসির মহাসচিবের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণ করা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে মহাসচিবের সহায়তা কামনা করেন।