Logo
Logo
×

পরবাস

নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি ওম্যান পদে প্রবাসী বাংলাদেশির প্রার্থিতা ঘোষণা

Icon

হাকিকুল ইসলাম খোকন, নিউইয়র্ক থেকে

প্রকাশ: ১৪ মে ২০১৯, ০১:১৮ পিএম

নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি ওম্যান পদে প্রবাসী বাংলাদেশির প্রার্থিতা ঘোষণা

নিউইয়র্কে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে পরিচিত মুখ বাংলাদেশি-আমেরিকান মেরী জোবাইদা নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি ডিষ্ট্রিক্ট-৩৭ থেকে প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন।

তিনি প্রথম বাংলাদেশি-আমেরিকান যিনি এ আসনে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রাইমারীতে অ্যাসেম্বলিওম্যান পদে নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেছেন। তার প্রার্থীতার মধ্য দিয়ে তিনি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন নিউইয়র্কের বর্তমান অ্যাম্বলিওম্যান ক্যাথরিন নোলানকে।

অ্যাসেম্বলিওম্যান ক্যাথরিন দীর্ঘ প্রায় দুই দশক ধরে এ আসনের নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে নিউইয়র্কের রাজধানী আলবেনীর ক্যাপিটাল হিলে প্রতিনিধিত্ব করছেন।

২০২০ সালে অনুষ্ঠেয় নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের নির্বাচনে বিজয়ী হলে মেরি জোবাইদা প্রথমবারের মতো আলবেনি’র প্রতিনিধি সভায় যোগ দেয়ার সৌভাগ্য অর্জন করবেন। প্রতিনিধিত্ব করবেন নিউইয়র্কের ডিস্ট্রিক্ট-৩৭। ইতিমধ্যেই নিউইয়র্কের কমিউনিটিভিত্তিক একাধিক সংবাদমাধ্যম গুরুত্বের সঙ্গে তার প্রার্থীতার খবর প্রকাশিত হয়েছে।

সে সঙ্গে বাংলাদেশি কমিউনিটিসহ অন্যান্য কমিউনিটিতে খবরটি ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স ব্রীজ, লং আইল্যান্ড সিটি, সানি সাইড, উডসাইড, ম্যাসপাথ ও রিজউড নিয়ে অ্যাসেম্বশি ডিস্ট্রিক্ট-৩৭ আসন। ২০১০ সালের আদমশুমারির হিসেবে এ আসনে ১,২৯,১৮৭ মানুষের বসবাস।

জানা গেছে, ৩৫ বছর ধরে নিউইয়র্কের অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট-৩৭ থেকে নির্বাচিত হয়ে আসছেন ক্যাথরিন নোলান। এমনকি এক দশকে কেউ প্রাইমারি নির্বাচনে তাকে চ্যালেঞ্জটুকুও জানায়নি। দশ বছরে এবারই প্রথম ক্যাথরিন নোলান প্রাইমারিতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেন।

এদিকে ক্যাথরিন নোলান নিউইয়র্কের জনপ্রিয় রাজনীতিকদের একজন। গত বছর তিনি নিউইয়র্কের স্টেট অ্যাসেম্বলি হাউজের ডেপুটি স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পান। নিউইয়র্কের শিক্ষা-বিষয়ক কমিটির প্রধান হিসেবে শিক্ষাখাতে নানা সংস্কারের উদ্যোগ নেয়ার ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সম্প্রতি নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডে সিটিতে আমাজনের সদরদপ্তর স্থাপনের পক্ষে অবস্থান করা ক্যাথরিন নোলানের জনপ্রিয়তা সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা কমেছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

অপরদিকে বাংলাদেশি-আমেরিকান অ্যাকটিভিস্ট মেরী জোবাইদা প্রার্থিতা ঘোষণার মধ্য দিয়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। বাংলাদেশি কমিউনিটি সহ ইহুদী, জুইস, খ্রীস্টান ও স্প্যানিশ কমিউনিটি তার সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন।

মেরী জোবাইদা তার প্রার্থিতা ঘোষণার বিষয়ে জানান, দীর্ঘদিন থেকে দেখেছি ব্যালটে একজননেরই নাম। ভোটারদের কাছে আর কোনো বিকল্প ছিল না। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিষয়টি রীতিমতো বিস্ময়কর। গণতন্ত্রের এ চেহারা আমাকে বিস্মিত করেছে। আমি গণতন্ত্রে বিশ্বসী।

ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রাইমারীতে নিজের বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে মেরী জোবাইদা বলেন, ‘নির্বাচিত হলে সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা, আবাসন ও পরিবেশ নিয়ে সোচ্চার থাকবো। পাশাপাশি স্টেট অ্যাসেম্বলি হাউজ সদস্যদের নির্বাচনের মেয়াদ নির্দিষ্টকরণে কাজ করব। নাগরিকদের সম্পদের বৈষম্য নিয়ে সব সময় সোচ্চার মেরি জোবাইদা বলেন, ‘ধনী-গরিবের সম্পদের ফারাক আমাদের জন্য পীড়াদায়ক।’

নির্বাচনী তহবিল প্রসঙ্গে মেরী জোবাইদা বলেন, আগামী বছরের জুন মাসে দলের প্রাথমিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। নির্বাচনী খরচ ব্যয়ে ফান্ড রেইজ করা হবে। আমি জনসমর্থন নিয়ে নির্বাচন করায় বিশ্বাসী। কোন কালো অর্থ বা আবাসন ও নির্বাচনী দাতাদের কাছ থেকে কোন চাঁদা বা অনুদান নেবেন না বলে তিনি জানান।

নিজের প্রার্থীতার বিষয়টি নিশ্চিত করে মেরী জোবাইদা বলেছেন, এ দেশ (যুক্তরাষ্ট্র) আমাকে এত বেশি দিয়েছে যে, আমার মন থেকে আমি এদেশের মানুষের জন্য কিছু করতে চাই। এ দেশের গণতন্ত্রকে আরো শক্তিশালী করতে চাই। নিজেকে প্রগতিশীল ডেমোক্র্যাট হিসেবে উল্লেখ করে মেরী জোবাইদা বলেন, আমি মানুষের শক্তি আবারো মানুষের কাছে ফেরত দিতে চাই। নিজের ডিষ্ট্রিক্টে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক নির্বাচন দেখতে চাই, নির্বাচনে মানুষের অংশগ্রহণ চাই।

ব্যক্তিগত জীবনে তিন সন্তানের মা মেরী জোবাইদা নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ড সিটির কোর্ট স্কয়ারে গত দুই দশক ধরে স্বপরিবারে বাস করছেন। নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটিতে তিনি পরিচিত মুখ। নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি থেকে মিডিয়া, কালচার অ্যান্ড কমিউনিকেশনস-এ স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে সাংবাদিকতার পাশাপাশি সেবামূলক বিভিন্ন কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখে আসছেন। কমিউনিটির পাশাপাশি মূল ধারায়ও তার কাজের পরিধি বাড়িয়েছেন। বর্তমানে তিনি নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসে আরবান হেলথ প্ল্যানের আউটরিচ স্পেশালিস্ট হিসেবে কর্মরত।

এর আগে প্যানোরামা বাংলাদেশের ক্যারিয়ার অ্যাডভাইজার, নিউইয়র্কে বাংলাভাষার  অনলাইন টেলিভিশন চ্যানেল টাইম টিভি’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার ও সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকার ফিচার রাইটার হিসেবে কাজ করেছেন। ছাত্র জীবন থেকেই সাংগঠনিক সক্ষমতা অর্জন করেছেন মেরী জোবাইদা। লাগর্ডিয়া কমিউনিটি কলেজ (কিউনি)’র স্টুডেন্ট গভর্নমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের ভিপি ও এপিআই লিডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও নিউইউয়র্ক সিটি ইউনিভার্সিটির কমিটি ফর চাইল্ড কেয়ারের সিনেটর/চেয়ার ছিলেন। বরিশালে জন্মগ্রহণকারী মেরী জোবাইদা যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী জীবনের আগে ঢাকাস্থ লালমাটিয়া মহিলা কলেজ ও ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম