নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটে বর্ণিল বর্ষবরণ
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
হাসানুজ্জামান সাকী, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০১৯, ০৬:৩৬ পিএম
![নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটে বর্ণিল বর্ষবরণ](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2019/04/27/image-171602-1556369181.jpg)
নিউইয়র্কে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন, নৃত্য পরিবেশন করছেন বাফার শিল্পীরা। ছবি: যুগান্তর
বাংলা নববর্ষ উদযাপনে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট বর্ণিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে নাচ, গান, আবৃত্তি, বাদ্যযন্ত্র ও দেশীয় খাবার পরিবেশনের মাধ্যমে আবহমান বাংলার ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধ সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি বিপুলসংখ্যক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ড সিটির নর্দান বুলেভার্ডে কনস্যুলেট অফিসে অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা।
পরে সম্প্রতি শ্রীলঙ্কায় সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশি শিশু জায়ানসহ নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে তাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নিউইয়র্ক সফররত মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন, কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা, নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন ল্যু, অ্যাসেম্বলি উইম্যান ক্যাটালিনা ক্রুজ, সিটি কাউন্সিল সদস্য কস্তা কনস্টাটিনিডেস এবং যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, নিউইয়র্ক কনস্যুলেটকে একখণ্ড বাংলাদেশ মনে হচ্ছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে কমিউনিটির উন্নয়নে প্রবাসীদের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
জাতিসংঘে স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বাংলাদেশের জনগণ বিশ্বাস করেন ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।
তিনি জানান, বাংলা বর্ষবরণের ঐতিহ্যবাহী মঙ্গল শোভাযাত্রা ইউনেস্কোর ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা তার বক্তৃতায় বাঙালি সংস্কৃতির অসাম্প্রদায়িক চেতনার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি ইউনেস্কো কর্তৃক পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রাকে মানবজাতির বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় এবার বাংলা নববর্ষ উদযাপনে একটি নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে।
এদিকে বাংলা বর্ষবরণ উপলক্ষে বৈশাখের ঐতিহ্য এবং দেশের আবহমান সংস্কৃতির পরিচায়ক হস্তশিল্পসামগ্রীসহ অন্যান্য উপাদান দিয়ে সাজানো হয় নিউইয়র্কের কনস্যুলেট মিলনায়তন।
অনুষ্ঠানে বৈশাখের আগমনী গান ‘এসো হে বৈশাখ’ সমবেত কণ্ঠে পরিবেশন করেন নিউইয়র্ক কনস্যুলেটের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
এরপর বাংলা চলচ্চিত্রের গানে নৃত্য পরিবেশন করেন বাংলাদেশ একাডেমি অব ফাইন আর্টস-বাফা’র শিল্পীরা।
আবৃত্তি করেন আবিবা দ্যুতি ও বাদ্যযন্ত্র পরিবেশন করেন তবলায় তপন মোদক ও সেতারে মোর্শেদ খান।
শেষে লোকসঙ্গীত পরিবেশন করেন মুক্তিযোদ্ধা ও কারুশিল্পী তাজুল ইমাম। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন সাদিয়া খন্দকার।
অনুষ্ঠানে অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভয়েস অব আমেরিকা বাংলা বিভাগের প্রধান রোকেয়া হায়দার, একাত্তর টিভির সিইও সামিয়া জামান, কাজী নজরুল ইসলামের নাতি অনিন্দিতা কাজী, অভিনয়শিল্পী লুৎফুন্নাহার লতা, মূলধারার রাজনীতিক মোর্শেদ আলম, মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাসুদ হাসান, সরাফ সরকার, আবদুল মুকিত চৌধুরী ও গোলাম মিরাজ।
উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবদুস সামাদ আজাদ, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট ফকরুল ইসলাম দেলোয়ার, রোকেয়া আখতার, ড. বিলকিস রহমান দোলা ও ফরিদা ইয়াসমীন, আলোকচিত্র শিল্পী ওবায়দুল্লাহ মামুন, ব্যবসায়ী রাহাত মুক্তাদির।
জাতিসংঘ স্থায়ী মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি (মিডিয়া) নূর এলাহী মিনা, আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি লাবলু আনসার, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, সাংবাদিক আকবর হায়দার কিরন, ফকির সেলিম, দিদার আহমেদ, হাসানুজ্জামান সাকী, বেলাল আহমেদ, রাশেদ আহমেদ, কানু দত্ত ও তোফাজ্জল লিটন।
সাংস্কৃতিক সংগঠক নিসার শুড্ডু, ডা. প্রতাপ সাহা, অর্ঘ্য সারথী সিকদার, শাহীন তরফদার, আবীর আলমগীর, কবি রওশন হাসান, আবৃত্তিশিল্পী মিথুন আহমেদ ও গোপন সাহা, পুলিশ কর্মকর্তা রাজুব ভোমিক, ডিজাইনার রোজিনা আহমেদ রুনি, সঙ্গীতশিল্পী ফরিদা ইয়াসমীন, মানসী হাজরা ও সোনিয়া লাসমিন লাবনী, যন্ত্রশিল্পী শহীদ উদ্দিন, ভারতীয় বঙ্গ সম্মেলনের আয়োজক কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের কর্ণধার প্রবীর রায়, মিলন আয়ন প্রমুখ।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা, বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি এবং সফররত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রতিনিধি ও বিদেশি অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। পরে অতিথিদের ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাবারে আপ্যায়িত করা হয়।