
প্রিন্ট: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০৩ এএম
রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধরত ২ চীনা নাগরিক আটক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৬ পিএম

আরও পড়ুন
রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধরত দুই চীনা নাগরিককে আটক করেছে ইউক্রেন সেনাবাহিনী। কিয়েভের পূর্ব ডোনেস্কে তাদের পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এই দাবি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তার অভিযোগ, রাশিয়ার হয়ে আরও অনেক চীনা নাগরিক ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন।
জেলেনস্কির এমন মন্তব্যের পর বুধবার এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে নাগরিকদের যুদ্ধে অংশগ্রহণে এড়াতে অনুরোধ করা হয়েছে। পাশাপাশি কিয়েভের এমন অভিযোগের সত্যতা যাচাই করবেন বলেও জানিয়েছেন তারা। এএফপি।
ইউক্রেন যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার পর চীনা সেনাদের উপস্থিতিতে ক্ষুব্ধ জেলেনস্কি। তার মতে, বিষয়টি ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া আরও জটিল আকার ধারণ করছে। এমনকি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধের অবসান চান না বলে দাবি করেছেন তিনি। তিনি বলেন, ইউরোপের যুদ্ধে চীনসহ অন্যান্য দেশের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অংশগ্রহণে একটা বিষয় পরিষ্কার, যুদ্ধ বন্ধ করতে পুতিনের মধ্যে আন্তরিক কোনো ইচ্ছাই নেই। আটক চীনা ব্যক্তিরা সরাসরি বেইজিংয়ের আদেশে কাজ করছিল নাকি ব্যক্তিগত উদ্যোগে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করছিল- তা স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। এমনকি ইউক্রেনের কোনো দাবির সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।
উল্লেখ্য, বেইজিং ও মস্কোর মধ্যে ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার ঠিক আগে রাশিয়ার সঙ্গে ‘সীমাহীন কৌশলগত অংশীদারত্ব’ ঘোষণা করেছিল চীন। বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উত্থাপন করা হলেও। ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণ সামরিক অভিযানে চীনের প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বরং, ইউক্রেনের যুদ্ধ মীমাংসায় ভূমিকা রাখতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বেইজিং। তবে এর আগেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশ থেকে সহায়তা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যুদ্ধের শুরু থেকেই ইরানি ড্রোন এবং উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলাবারুদ ব্যবহার করে আসছে রুশ সেনাবাহিনী। এমনকি, ইউক্রেনের দখলকৃত কুরস্ক অঞ্চল মুক্ত করতে সেখানে পিয়ংইয়ংয়ের সেনারা রুশ বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করছে বলেও একাধিক সূত্রে দাবি করা হয়েছে। তবে অন্যান্য ঘটনার সঙ্গে এবার বড় একটা পার্থক্য রয়েছে বলে মনে করেন জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার সেনারা তো কুরস্কে আমাদের বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে আছে। কিন্তু আটক চীনারা ইউক্রেনের সীমানার অভ্যন্তরে আক্রমণ করেছিল। যদিও চীনা নাগরিকের রুশ সেনাবাহিনীতে যুদ্ধ করার বিষয়ে মন্তব্য করতে চায়নি ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ।
গভীর রাতে ইউক্রেনের হামলা, ১৫৮টি ড্রোন ধ্বংসের দাবি: রাশিয়ায় গভীর রাতে আবারও ব্যাপক ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। বুধবারের এই হামলায় শতাধিক ড্রোন ধ্বংসের দাবি করেছে রুশ সেনাবাহিনী।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেনের ১৫৮টি ড্রোন ধ্বংস করেছে তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিট। রাশিয়ার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ রোসাভিয়াতসিয়া জানিয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে বুধবার ভোরে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কয়েকটি বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়।
প্রাথমিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে বিধ্বস্ত ড্রোনের আঘাত থেকে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বাড়তি সতর্কতা স্বরূপ রোসটোভ অঞ্চলের ৪৮টি অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়। রুশ মন্ত্রণালয় কেবল ধ্বংসপ্রাপ্ত ড্রোনের সংখ্যা প্রকাশ করেছে। কিয়েভের পাঠানোর ড্রোনের মোট সংখ্যা তারা জানায়নি। হামলার বিষয়ে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। অবশ্য বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণের অভিযোগ কিয়েভ ও মস্কো উভয়েই অস্বীকার করে। তাদের দাবি, পরস্পরের যুদ্ধ সংক্রান্ত বা সামরিক স্থাপনাতেই হামলা চালানো হয়।
ঘটনাপ্রবাহ: ইউক্রেন যুদ্ধ
আরও পড়ুন