ইউক্রেনের পাশে ইউরোপ, চার দফা কর্মসূচি ঘোষণা

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৫, ১২:১৬ পিএম

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা করতে পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছেন ইউরোপের নেতারা। এ লক্ষ্যে চার দফা পরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়েছে।
ইউক্রেন নিয়ে আলোচনা করতে রোববার যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে এক সম্মেলনে বসেছিলেন ইউরোপের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানেরা।
পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো ও ইউরোপের ২৭ দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন।
‘সিকিউর আওয়ার ফিউচার’ শীর্ষক এই সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। সেই আলোচনা শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার।
বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলনে স্টারমার জানিয়েছেন, শীর্ষ বৈঠকে চার দফা কর্মসূচি নিয়ে মতৈক্য হয়েছে। এই চার দফা কর্মসূচি হলো, ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য দেওয়া হবে এবং রাশিয়ার উপর আর্থিক চাপ বহাল রাখা হবে। ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা বজায় রেখে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি আনতে হবে এবং শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক।
শান্তিচুক্তিতে ইউক্রেনের আত্মরক্ষার ক্ষমতা বৃদ্ধির কথা থাকবে। ভবিষ্যৎ আগ্রাসন বন্ধ করতে এটা জরুরি। এই চুক্তি যাতে ঠিকভাবে কার্যকর হয় সেটা নিশ্চিত করতে ‘কোয়ালিশন অফ দ্য উইলিং’ গঠন করা হবে এবং তারা পরবর্তীকালে শান্তি বজায় রাখার নিশ্চয়তা দেবে।
স্টারমার বলেছেন, যুক্তরাজ্য ইউক্রেনকে দুইশ কোটি ডলার দেবে, যাতে তারা পাঁচ হাজার এয়ার ডিফেন্স মিসাইল কিনতে পারে। এছাড়াও রাশিয়ার ফ্রিজ করা সম্পদের লভ্যাংশ থেকে ২২০ কোটি ইউরো ইউক্রেনকে ঋণ হিসাবে দেয়া হবে।
তিনি জানিয়েছেন, আমাদের অতীতের ভুল থেকে শিখতে হবে। আমরা কোনো দুর্বল চুক্তি চাই না, যা রাশিয়া আবার ভঙ্গ করতে পারে। বরং শক্তিশালী অবস্থানে থেকে চুক্তি করতে চাই।
স্টারমার বলেছেন, চুক্তির শর্ত রাশিয়া ঠিক করবে তা হবে না। আমরা চাই, যুক্তরাষ্ট্রও এই চুক্তি সমর্থন করুক। ট্রাম্পের সঙ্গে আমি এই বিষয়ে একমত যে, স্থায়ী শান্তি প্রয়োজন।
ট্রাম্প কি বন্ধু হিসাবে নির্ভরযোগ্য? এই প্রশ্নের জবাবে স্টারমার বলেছেন, শুক্রবার যা হয়েছে, সেরকম ঘটনা কেউই চায় না। তবে যুক্তরাষ্ট্র নির্ভরয়োগ্য নয়, এমন কথা আমি মানতে চাই না।
শীর্ষ বৈঠকে যোগ দিয়েছিল ফ্রান্স, পোল্যান্ড, সুইডেন, তুরস্ক, নরওয়ে, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, রোমানিয়া, ফিনল্যান্ড, ইতালি, স্পেন এবং ক্যানাডা।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন বলেছেন, ইউরোপকে সামরিক দিক দিয়ে আরো সজ্জিত হতে হবে।
ন্যাটোর সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক রুটে বলেছেন, যতদিন সম্ভব ইউক্রেন যাতে লড়তে পারে, সে জন্য এই বৈঠক ডাকা হয়েছিল।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ বলেছেন, ইউরোপের দেশগুলিকে প্রতিরক্ষাখাতে জিডিপি-র তিন থেকে সাড়ে তিন শতাংশ অর্থ খরচ করতে হবে। গত তিন বছর ধরে রাশিয়া ১০ শতাংশ অর্থ প্রতিরক্ষায় খরচ করছে। তাই ইউরোপকেও প্রস্তুত থাকতে হবে।
সম্মেলনে ছিলেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ। সম্মেলন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, যুদ্ধ শেষে ইউক্রেনে যেন একটি শক্তিশালী সামরিক বাহিনী থাকে, সেটা নিশ্চিত করা পশ্চিমা মিত্রদেশগুলোর মূল লক্ষ্য হবে। সবকিছুর ভিত্তি হবে ইউক্রেনের একটা শক্তিশালী সামরিক বাহিনী।
ডয়চে ভেলে