ডেনমার্কের নাগরিককে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হবে না
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২৪, ১০:৩০ এএম
১৯৯৫ সালে পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ায় বিমান থেকে কয়েক টন অস্ত্র ফেলা হয়েছিল। সেই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ডেনমার্কের নাগরিক নিলস হল্ক। ৬২ বছরের এই ব্যক্তি একমাত্র লোক, যাকে সে সময় ভারতের মাটিতে গ্রেফতার করা যায়নি। প্রথমে তিনি নেপালে পালিয়ে যান, পরে ১৯৯৬ সালে ডেনমার্কে ফিরে যান।
সেই থেকে হল্ককে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য বার বার আবেদন জানাচ্ছে ভারত। বস্তুত, ওই মামলায় বাকি যাদের গ্রেফতার হয়েছিল, তাদের বিচারের পর শাস্তিও দেওয়া হয়েছে। পরে তাদের দেশে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু হল্ককে কোনোদিন নিজেদের হেফাজতে নিতে পারেনি ভারত।
এ নিয়ে বৃহস্পতিবার ডেনমার্কের এক আদালতে শুনানি ছিল। সেখানে বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, হল্ককে তাদের হাতে তুলে দেওয়া যথেষ্ট নিরাপদ নয় বলেই মনে করছেন তিনি। ফলে প্রত্যার্পণের দাবি মানা হবে না।
তবে একই সঙ্গে বিচারক জানিয়েছেন, হল্ক অপরাধী কি না, সে বিষয়টি এই নির্দেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে বিবেচনা করা হয়নি। কেবলমাত্র প্রত্যার্পণ নিয়েই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
১৯৯৫ সালে পশ্চিমবঙ্গে আচমকাই ঢুকে পড়েছিল একটি রাশিয়ার বিমান। পুরুলিয়ায় সেই বিমান থেকে কয়েক টন অস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। পুরুলিয়া অস্ত্র বর্ষণ মামলা নামে যা পরিচিত। এরপর বিমানটি সেখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ভারতের বিমান বাহিনীর ফাইটার ওই বিমানটিকে আটকায়। ছয়জন ইউরোপীয় ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু পালিয়ে যান হল্ক। তিনি নেপালে গিয়ে গা ঢাকা দেন। পরে ডেনমার্কে ফিরে যান।
ভারত একাধিকবার ডেনমার্কের কাছে হল্ককে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছে। হল্কের জন্য আলাদা জেলের ব্যবস্থা করা হবে এবং তার সঙ্গে ডেনমার্কের পুলিশও ব্যবস্থাপনা দেখতে ভারতে আসতে পারেন বলে জানিয়েছে ভারত। কিন্তু এখনো পর্যন্ত ডেনমার্ক তা মেনে নেয়নি।
২০১০ সালে হল্ককে প্রত্যার্পণে রাজি হয়েছিল ডেনমার্কের কর্মকর্তারা। শর্ত ছিল, হল্ককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যাবে না এবং শাস্তি প্রদানের পর তাকে ডেনমার্কে ফিরিয়ে দিতে হবে। ডেনমার্কের জেলে সেই শাস্তি ভোগ করবেন তিনি।
কিন্তু ২০১১ সালে ডেনমার্কের আদালত এই চুক্তি বাতিল করে দেয়। এরপর ২০১৬ সালে ফের হল্ককে পাওয়ার জন্য আবেদন জানায় ভারত। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই বৃহস্পতিবার আদালতের এই রায়। তবে হল্কের আইনজীবীর ধারণা, ফের আদালতে এনিয়ে আপিল করা হবে।