রাজ আজও শুভর সঙ্গে জম্পেশ প্রেম করে: দেবশ্রী

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:০১ পিএম

ভাষা দিবসে আমাদের বাড়ির একমাত্র জামাই রাজ চক্রবর্তীর জন্মদিন। নানা কারণে নির্দিষ্ট দিনে ওকে নিয়ে কিছু লিখতে পারিনি। পরিচালক-প্রযোজক ও বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীকে সবাই চেনে, কিন্তু বাড়ির জামাই হিসেবে কেমন? আনন্দবাজার অনলাইনের মুখোমুখি হয়ে বললেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী দেবশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়। কলম ধরে পেছনে তাকাতেই রাশি রাশি স্মৃতির কথা— ভীষণ হইহুল্লোড় খাদ্যরসিক, মেছো বিড়াল আর বুদ্ধিমান ছেলে জানান অভিনেত্রী, যা যুগান্তর পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো—
টালিউডের পরিচালক-প্রযোজক রাজ চক্রবর্তী প্রেমিক হিসাবে কেমন? আর নায়িকারই বা তখন কি ভূমিকা ছিল—এমন প্রশ্নের উত্তরে অভিনেত্রী বলেন, তাকে চোখে হারাবেই। যেমন আমার বোন শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়। ওর ক্ষেত্রেও তাই-ই হয়েছে।
তিনি বলেন, বিয়ের আগে দেখেছি—প্রবল প্রেমিক রাজ। শুধুই প্রেমিক নয়, দায়িত্ববান প্রেমিক। বোনকে সারাক্ষণ আগলে রাখত। সেই প্রেমিক সত্তা আজও বর্তমান। রাজ আজও শুভর সঙ্গে জম্পেশ প্রেম করে। একই সঙ্গে আগলে রাখে। আমার তো মনে হয়, ওর এই স্বভাব একদিনের নয়। একই ভাবে বদলানোরও নয়।
স্বামী হিসাবে মোটেই আসামি নয় রাজ? দেবশ্রী বলেন, ভালো স্বামী হতে গেলে কিছু গুণ থাকা দরকার। যেমন ভীষণ ঠান্ডা মাথা, অফুরন্ত ধৈর্য আর ইতিবাচক মানসিকতা। সঙ্গে অতিথি আপ্যায়নে পটু হতে হবে। বউয়ের মন বুঝতে হবে। মনখারাপ হলে মন ভালো করে দিতে হবে। রাজ এই সবকটা পারে। নিজের মাকে আগলায়। স্ত্রী-সন্তানদের চোখে চোখে রাখে। তারপরও রাগ করে না কখনো।
তিনি বলেন, ধরুন, আপনার খুব মনখারাপ। আধ ঘণ্টা রাজের কাছে বসুন। ওর সঙ্গে আড্ডা দিন। ভুলে যাবেন— কী কারণে মনটা এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল আপনার।
ও দেবুদা, এখনো বউয়ের ভয়ে কাঁপো...? রাজ আমাদের জামাই কম, ছেলে বেশি। এই জায়গাটা ও নিজেই আদায় করে নিয়েছে। যতটা নিজের মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, যত্নবান— ততটাই আমাদের মা-বাবার প্রতিও। মা-বাবার কিছু হলে নিজের কাছে নিয়ে গিয়ে রাখবে। রাতে যেতে দিতে চায় না। মা-বাবা উল্টো লজ্জা পায়। ওদের দাবি— মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে কেউ থাকে! রাজ মানবে না। মানেন না মাসিমা, মানে রাজের মা-ও। বরং হা-পিত্যেশ অপেক্ষা করেন, কবে আমাদের মা-বাবা যাবেন। মাসিমা আড্ডা দেবেন। মাসিমার তাগিদেই প্রায় প্রতি রবিবার দুপুরে গঙ্গোপাধ্যায় আর চক্রবর্তী পরিবার এক টেবিলে বসে আড্ডা দিতে দিতে ভাত খায়!
অভিনেত্রী বলেন, এবার বলি বাবার সঙ্গে রাজের সম্পর্ক। পরিচালক জামাই তো নিজেকে শ্বশুরমশাইয়ের ‘বড় ভাই’ বলে দাবি করে! যখন-তখন বাবার নামের সঙ্গে ‘দাদা’ সম্বোধন। আর তুমুল রসিকতা, ও দেবুদা, এখনো বউয়ের ভয়ে তোমার হাঁটু কাঁপে?
বাবা হেসে ফেলে। মা লজ্জা পায়। শুভ তো হেসে গড়িয়ে পড়ে। বাবার সঙ্গে তাল মেলায় একরত্তি ইউভান। মজা করে বাবাকে ‘দেবুদা’ বলে ডেকে ওঠে! একেক সময় বাবাও পাল্টা জবাব দেয়। বলে— তোমারও তো একই অবস্থা। সঙ্গে সঙ্গে অকপট স্বীকারোক্তি রাজের, ঠিক বলেছ দেবুদা। আমার বউকে আমি খুব ভয় পাই।
দেবশ্রী বলেন, নিজের ছেলেমেয়ে হোক কিংবা আমার ছেলে— সবার বন্ধু রাজ। ইউভান বাবা বলতে অজ্ঞান। এখন ইয়ালিনিও। ভাগ্নিরা তো মামার কোলেপিঠে চেপে বড় হয়েছে। রাজের মেয়ের শখ খুব। চেয়েছিল প্রথম সন্তান কন্যা হোক। হয়নি। কিন্তু দ্বিতীয়বার ঈশ্বর বিমুখ করেননি।
অন্যদিকে আমার ছেলে ওর ‘দোস্ত’। ‘রাজ চকো’ বলে ডাকে। সম্পর্কে মেসোমশাই। সেই সম্বোধন করলেই খেপে ব্যোম। সঙ্গে সঙ্গে নির্দেশ— অ্যাই, মেসোমশাই কী? রাজ চকো বলে ডাকো। ছেলেকে প্রশ্রয়ও দেয়। আমাদের বাড়িতে দুর্গাপূজা হবে। ছেলে মোটা টাকা চেয়ে বসল। আমি বকছি। রাজ সঙ্গে সঙ্গে বলল— দিদি তুমি কি জানো, এই প্রজন্ম কত রকমের নেশা করে টাকা নষ্ট করে? ও তো পূজা করবে বলে টাকা চাইছে। অকারণ বেশি শাসন করো না।