
ছবি: সংগৃহীত
যে কোনো দিবস বা উৎসবকে কেন্দ্র করেই টিভি চ্যানেল ও ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো বাহারি আয়োজনে ব্যস্ত থাকে। উৎসবকে টার্গেট করে নাটক নির্মাণের হিড়িক পড়ে। স্বাভাবিকভাবেই ভালোবাসা দিবসকে নিয়ে প্রতি বছরের মতো এবারও ছিল নাটকপাড়ায় ব্যস্ততা। দিনটিতে প্রিয় তারকাদের অভিনীত নাটক দেখতে উন্মুখ ছিলেন দর্শক। কিন্তু অন্যান্য বছরের তুলনায় নাটকপাড়ায় এবারের ভালোবাসা দিবস ছিল অনেকটাই ফিকে।
প্রতি বছর ভালোবাসা দিবসে বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে আলোচনায় থাকে বাংলা নাটক। কিন্তু এবার তার বিপরীত। শতাধিক নাটক মুক্তির কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত অনেক নাটক মুক্তি পায়নি। সংশ্লিষ্টরা শেষ পর্যায়ে এসে মুক্তির সিদ্ধান্ত থেকে সরে গেছেন। যেকটি নাটক মুক্তি পেয়েছে সেগুলোর কয়েকটি প্রশংসা কুড়ালেও সেভাবে ‘জমে ক্ষীর’ শব্দটি সঠিক ব্যবহার করতে পারেনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভালোবাসা দিবসের দিন ধর্মীয় উৎসব শবেবরাত হওয়াতে অনেকেই নাটক মুক্তি দেননি। কিন্তু নাটকগুলো কবে নাগাদ মুক্তি দেওয়া হবে এ বিষয়েও সংশ্লিষ্টরা এখন রয়েছে দ্বিধাদ্বন্দ্বে। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী নাটক মুক্তি না দেওয়ায় দর্শকরাও খানিকটা হতাশ হয়েছেন। তাতে করে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে নাট্যাঙ্গনে। মুক্তিপ্রাপ্ত নাটকগুলোতেও সেভাবে দর্শকদের অংশগ্রহণ না থাকায়, ভিউয়ের দৌড়ে পিছিয়ে পড়েছে। বলা যায়, নাটকপাড়ায় এবার ফিকে ভালোবাসা দিবস পালিত হয়েছে।
নির্মাতাদের ভাষ্যমতে, এবারের ভালোবাসা দিবসের দিন ইসলামী ধর্মীয় উৎসব হওয়ার কারণে অন্য বছরের তুলনায় নাটক কম মুক্তি পেয়েছে। শবেবরাতে এসব নাটক মুক্তি দিলেও দর্শক তা দেখবে না, এ বিবেচনায় অনেকেই পিছিয়ে গেছেন। কারণ নির্মাতা কিংবা শিল্পী-সবাই চায় তার কাজটি দর্শক দেখুক। এ ছাড়া অনেক কাজ পিছিয়ে গেছে স্পন্সর ইস্যুতে। তবে নির্মাতারা এখনো আশা ছাড়ছেন না। তাদের মতে, ভালোবাসা দিবসের আমেজ নির্দিষ্ট দিন অর্থাৎ ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে মাসের শেষ দিন পর্যন্ত উৎসবের আমেজ থাকে। যেসব নাটক মুক্তি পায়নি সেগুলো চলতি মাসে যখনই মুক্তি দেওয়া হোক আলোচনা-সমালোচনা আবারও হবে। আর এগুলো পর্যায়ক্রমে মুক্তি পেলে দর্শকদের দেখতেও সুবিধা হবে বলেও মনে করছেন নির্মাতারা। তারা দাবি করেন, একসঙ্গে সব নাটক ইউটিউবে এলে দর্শক কোন নাটক দেখবেন? তাদের দেখার সময়ও তো আমাদের দিতে হবে।
এদিকে একাধিক নির্মাতার মতে, একসঙ্গে অনেক কাজ মুক্তির বিষয়টি যে কোনো উৎসবের আমেজকে বাড়িয়ে দেয়। তখন এমনিতেই শিল্পী-নির্মাতা থেকে শুরু করে দর্শকদের মধ্যে একটি আমেজ তৈরি হয়। এ ছাড়া যেসব নাটক মুক্তি পাচ্ছে সেগুলোও বিক্ষিপ্তভাবে হচ্ছে। যার কারণে উৎসবের আমেজটা অনুভব হচ্ছে না।
ভালোবাসা দিবসে বিচ্ছিন্নভাবে মুক্তি পেয়েছে কিছু নাটক। এগুলোর মধ্যে একাধিক নাটক দর্শকদের আলোচনায় আছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘মন দুয়ারী’, ‘ব্যথার বাগান’, ‘মনেরই রঙে রাঙিয়ে’, ‘গুন্ডা’, ‘ভালোবাসা সোল্ড আউট’, ‘নার্ভাস কাপল’, ‘তোমায় পাব কি?’, ‘হ্যাপা’, ‘টক্কর’, ‘এক কাপ চা’, ‘দূর থেকে ভালোবাসি’, ‘লেডিস পারফিউম’সহ একাধিক নাটক। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, যেসব নাটক মুক্তির সময় পিছিয়েছে, সেগুলো মুক্তি পেলে আবারও আলোচনা তৈরি হবে। কনটেন্টের জোরেই আবারও উৎসবের আমেজ তৈরি হবে।