Logo
Logo
×

বিনোদন

নাট্যোৎসবের মাধ্যমে জুলাই বিপ্লব বিরোধীদের সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা!

Icon

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:০৬ এএম

নাট্যোৎসবের মাধ্যমে জুলাই বিপ্লব বিরোধীদের সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা!

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বেইলি রোডের মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল ‘ঢাকা মহানগর নাট্যোৎসব’ শিরোনামে একটি মঞ্চ নাটকের উৎসব। ঢাকা মহানগর নাট্য পর্ষদ এটির আয়োজক। যেখানে ৮৫টি নাট্যদল তিন পর্যায়ে উৎসবে অংশ নেওয়ার কথা। কিন্তু উৎসব শুরুর আগের রাতেই এটি স্থগিত হয়ে যায়। 

আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নিরাপত্তা শঙ্কার কারণে উৎসব স্থগিতে বাধ্য হয়েছেন তারা। একইসঙ্গে একটি ‘মব’ উৎসব আয়োজনে বাধা দেওয়ার দাবিও করেন তারা। পাশাপাশি এটাও জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে বন্ধ করার অনুরোধ এসেছে। 

তবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, মূলত এ নাট্যোৎসবের মাধ্যমে নাট্যাঙ্গনের জুলাই বিপ্লববিরোধীরা এক হওয়ার চেষ্টা করছেন। উৎসব আয়োজক ও অংশ নেওয়া নাট্যদলগুলোর মধ্যে স্বৈরাচার ও পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দোসর ও ছাত্র আন্দোলন বিরোধিতাকারীরাও রয়েছেন। যারা সাংস্কৃতিক এ আন্দোলনের মধ্যে নিজেদের আবার সংগঠিত করতে চাচ্ছেন। এ কারণে নাট্যাঙ্গনের জুলাই বিপ্লবের পক্ষের একদল লোক বেশ কিছুদিন ধরে উৎসবটি বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছিল এবং তারা শেষতক মহিলা সমিতিতে গিয়ে কর্তৃপক্ষকে আয়োজন বন্ধ করার অনুরোধ জানান। 

ঠিক এটাকেই উৎসব আয়োজনে ‘তৌহিদি জনতার মব ও পুলিশি বাধা’ বলে ভুল তথ্য প্রচার করছেন জুলাই বিপ্লববিরোধীরা। আয়োজকদের পক্ষ থেকেও সঠিক বিবৃতি না আসায় এ বিভ্রান্তি আরও বেশি ছড়াচ্ছে। এদিকে উৎসবে পুলিশি বাধার কোনো কারণ নেই বলেই জানিয়েছেন রমনা থানার ওসি। বরং পুলিশ নিরাপত্তা দিতেই প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।

এদিকে উৎসব বন্ধের জন্য জুলাই বিপ্লব সমর্থকদের দাবির কথা উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়েছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। গতকাল ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘নাট্যকর্মীদের মধ্যেই একটা অংশ এ উৎসবের বিরোধিতা করে মহিলা সমিতি কর্তৃপক্ষের কাছে হল বরাদ্দ বাতিলের জন্য জোর দাবি জানিয়ে আসছে বেশ কিছুদিন ধরে। 

সংক্ষুব্ধ নাট্যকর্মীদের দাবি, উৎসবের আড়ালে জুলাই আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতা হত্যায় বিবৃতি দিয়ে উসকানি দেওয়া কিছু ব্যক্তি বা তাদের গোত্রীয় কিছু মানুষ সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। 

তারা দাবি জানায়, জুলাইয়ে তাদের ভূমিকার জন্য বিচারের মুখোমুখি হওয়ার আগে কোনো পুনর্বাসন চলবে না। অবশেষে (সংক্ষুব্ধদের দাবির মুখে) মহিলা সমিতি বরাদ্দ বাতিল করে। মহিলা সমিতি হল বরাদ্দ দেওয়া এবং বাতিল করা কোনোটাই সরকারের এখতিয়ার নয়।’

এদিকে আয়োজকদের বিবৃতিতে কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে বলেও দাবি করছেন সচেতন সংস্কৃতি কর্মীরা। সংক্ষুব্ধদের দাবি, আয়োজকরা ফ্যাসিস্টের পুনবার্সন করতে চাচ্ছেন উৎসবের মধ্য দিয়ে। একই কথা বলেছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টাও। 

তিনি লিখেছেন, ‘বিবৃতিতে তারা (আয়োজকরা) এসব কিছু না বলে কৌশলে প্রথমে পুলিশের কাঁধে দোষ চাপানোর চেষ্টা করল। এবং বিবৃতির শেষে বললো, মবের কারণে উৎসব বাতিল করতে হলো। তারা তো জানেই কারা তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে। তাদের পরিচয় না লিখে মব বলে চালিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য কি একটা বিশেষ ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠা করা? বা কেন ওই বিক্ষুব্ধ নাট্যকর্মীরা প্রতিবাদ করছে তারা জানে। কিন্তু সেটাও তারা বিবৃতিতে উল্লেখ না করা কি ওই বিশেষ ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা কিনা সেটা সবাই ভেবে দেখতে পারেন। পাশাপাশি আরেকটা প্রশ্নও আসে, জুলাইয়ে তাদের ভূমিকার জন্য জাতির কাছে এখনো কি একবারও ক্ষমা চাওয়ার প্রয়োজন বোধ করেছে তারা?’

এদিকে সংস্কৃতি উপদেষ্টার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আয়োজক মহানগর নাট্য পর্ষদ। আয়োজনের সদস্যসচিব কামাল আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘নাট্যকর্মীদের মধ্যে কারা এ উৎসবের বিরোধিতা করছেন তা তো আমাদের জানা নেই। মহিলা সমিতিতে গিয়ে কারা হল বরাদ্দ না দিতে হুমকি দিয়েছেন তাও আমাদের জানা নেই।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘সংস্কৃতি উপদেষ্টার উচিত, মহিলা সমিতিকে নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া এবং আমাদের যেন মিলনায়তন বরাদ্দ দেওয়া হয়। আমরা এ উৎসবটি করতে চাই।’

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম