কেন অভিনয়জগৎ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন সারা লরেন
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:০৩ পিএম
![কেন অভিনয়জগৎ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন সারা লরেন](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2025/02/12/Sara-67ac720a28a8c.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
টেলিভিশনের পর্দা থেকে বড়পর্দায় নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করেছেন সর্বত্র। তবে একটি হিন্দি সিনেমায় অভিনয় করার পর থেকে তাকে নিয়ে ধারণা বদলে যেতে শুরু করে সিনেমা নির্মাতাদের। যে অভিনয়ের জন্য তিনি ভালোবাসার মানুষকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন, সেই অভিনয়ের জন্যই আবার হঠাৎ করে ‘উধাও’ হয়ে যান বলিউড অভিনেত্রী সারা লরেন।
মুকেশ ভাটের প্রযোজনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘মার্ডার ৩’। এ সিনেমাতেই রণদীপ হুডা ও অদিতি রাও হায়দারির সঙ্গে অভিনয় করতে দেখা যায় সারা লরেনকে। রাতারাতি বলিপাড়ায় জনপ্রিয়তা পেয়ে যান অভিনেত্রী।
‘মার্ডার ৩’ সিনেমায় অভিনয়ের পর একাধিক সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেতে শুরু করেন সারা লরেন। কিন্তু সব চরিত্রই ছিল একই ধরনের। এক পুরোনো সাক্ষাৎকারে সারা বলেছিলেন—আমায় কেউ বার ড্যান্সার, আবার কেউ আইটেম গার্লের চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। এর বাইরে আর কিছুই পেতাম না।
কত্থক নাচে পারদর্শী সারা। তার পাশাপাশি মার্শাল আর্টসেরও প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি। সারা জানিয়েছিলেন যে, ক্যারিয়ার গড়তে গিয়ে প্রচুর ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। তাই নিজেকে শাস্তি দিতে অভিনয়জগৎ থেকে দূরে সরিয়ে নেন তিনি।
চার-পাঁচ বছর আলোর রোশনাই থেকে নিজেকে একেবারেই দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন সারা। এ প্রসঙ্গে তিনি এক পুরনো সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, আমি চিত্রনাট্যের ভালো-মন্দ বুঝতাম না। সব ছবিতেই অভিনয় করেছি। অনেক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম। নিজেকে নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। তাই সাময়িক বিরতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।
২০২২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ইশরত মেড ইন চায়না’ নামের উর্দু ভাষার ছবিতে শেষ অভিনয় করতে দেখা যায় সারাকে। এরপর আর বড়পর্দায় অভিনয় করতে দেখা যায়নি সারাকে।
এদিকে আগে পুরোনো সাক্ষাৎকারে সারা জানিয়েছিলেন, পাকিস্তানের এক তরুণকে ভালোবেসে ফেলেছিলেন তিনি। সেই তরুণও বিনোদনজগতের সঙ্গে যুক্ত। তবে ‘মার্ডার ৩’ ছবির জন্য তাকে ভারতে আসতে হয়। ভালোবাসার সঙ্গীকে মনের কথা না জানিয়েই ক্যারিয়ার গড়তে চলে যান তিনি। অন্যদিকে সেই তরুণের অন্য জায়গায় বিয়েও হয়ে যায়।
খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত হয়ে নিজের নামও বদলে ফেলেন সারা। মোনা লিজা হুসেন নাম রেখেছেন তিনি। ‘মার্ডার ৩’-এর পাশাপাশি ‘বরখা’, ‘ফ্রড সাঁইয়া’, ‘ইশ্ক ক্লিক’-এর মতো একাধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছেন সারা।
উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালের ডিসেম্বর মাসে কুয়েতে জন্ম সারার। দেশভাগের পর তার ঠাকুর্দা সপরিবারে রাজস্থান থেকে কুয়েতে চলে গিয়েছিলেন। সারার বাবা-মা দুজনের জন্মই পাকিস্তানে।
সারা যখন কিশোরী, তখনই তার বাবা মারা যান। এরপর মাকে নিয়ে লাহোর চলে যান তিনি। ছোট থেকেই অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল তার।
করাচি ও দিল্লিতে একাধিক নাটকে মঞ্চে অভিনয় করেন সারা। ২০০২ সালে ছোটপর্দায় অভিনয় শুরু করেন তিনি। ২০১২ সাল পর্যন্ত একের পর এক উর্দু ধারাবাহিকে অভিনয় করতে দেখা গেছে এ অভিনেত্রীকে।
ছোটপর্দার পাশাপাশি বড়পর্দায়ও অভিনয় করেছেন সারা। ২০০৪ সালে ‘মাহনুর’ নামের একটি উর্দু ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে বড়পর্দায় অভিনয়ে হাতেখড়ি হয় তার।
অভিনয়ের পাশাপাশি মডেলিংও করেছেন সারা। পাকিস্তানের মডেল-অভিনেত্রীর নজরে পড়েন বলিউডের সিনেমা নির্মাতাদের। ২০০৭ সালে মুক্তি পাওয়া সানি দেওল অভিনীত ‘কাফিলা’ নামের একটি হিন্দি ছবিতে ছোট চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান সারা।
২০১০ সালে পূজা ভাটের পরিচালনায় মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কজরারে’ সিনেমাতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় সারাকে। বলি গায়ক ও অভিনেতা হিমেশ রেশমিয়ার সঙ্গে জুটি বেঁধে এ সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় থাকেন অভিনেত্রী সারা লরেন। ইতোমধ্যে ইনস্টাগ্রামের পাতায় তার ভক্ত-অনুগামীর সংখ্যা ১২ লাখের গণ্ডি পেরিয়েছে।