বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতের ছবি ‘ইমার্জেন্সি’ বহু কাঠখড় পুড়িয়ে অবশেষে মুক্তি পেয়েছে। ছবিটি মুক্তি পাওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন অভিনেত্রী। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর চরিত্রেও অভিনয় করেছেন কঙ্গনা। 'ইমার্জেন্সি ছবিটি পরিচালনা, চিত্রনাট্য ও প্রযোজনা করেছেন অভিনেত্রী নিজেই।
মুক্তির পর দেখতে দেখতে পাঁচ দিন কেটে গেল। শুরুটা ভালো হলেও সপ্তাহের শেষের দিকে হুড়মুড়িয়ে কমতে শুরু করেছে ইমারজেন্সির আয়। বর্তমানে ১৫ কোটির দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছে এ ছবির আয়। সচনিল্কের রিপোর্ট অনুযায়ী, 'ইমার্জেন্সি' মুক্তির দিন বক্স অফিসে দুই কোটি ৫০ লাখ টাকার ব্যবসা করেছে, যা মোটেই মন্দ নয়। বরং গত পাঁচ বছরের নিরিখে কঙ্গনা রানাউতের কোনো ছবির করা সব থেকে বেশি ব্যবসা ছিল এটি। দ্বিতীয় দিন সেই আয়ের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় তিন কোটি ৬০ লাখ টাকা।
রোববার আয়ের পরিমাণ আরও কিছুটা বেড়ে হয় চার কোটি ২৫ লাখ টাকা। কিন্তু সোমবার আসতেই কমে আয়ের পরিমাণ। চতুর্থ দিন বক্স অফিসে এই ছবিটি এক কোটি পাঁচ লাখ টাকার ব্যবসা করেছে। গতকাল মঙ্গলবার পঞ্চম দিন এক কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। এখন পর্যন্ত এই ছবির সর্বনিম্ন আয় মুক্তি পাওয়ার পর। তবে পাঁচ দিনে 'ইমার্জেন্সি' ছবিটির আয় দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৪০ লাখ টাকায়।
অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত এদিন তার দর্শকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন ছবিটিকে এত ভালোবাসা দেওয়ার জন্য। অন্যদিকে পাঞ্জাবের বেশ কিছু জায়গায় যে ছবিটি মুক্তি পায়নি বা শিরোমণি গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটি এবং অন্যান্য শিখ গোষ্ঠীর বিরোধিতার কারণে, সেই বিষয়েও তিনি কথা বলেছেন এদিন।
কঙ্গনার 'ইমার্জেন্সি' মুক্তির আগেই বাংলাদেশেও নিষিদ্ধ করা হয়। কারণ হিসেবে গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, ‘বাংলাদেশে ‘ইমার্জেন্সি’ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বর্তমান উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের সঙ্গেও জড়িত। তাই ছবিটি নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। অনেকের মতে, ‘ইমার্জেন্সি’র অনেক বিষয়বস্তু দুই দেশের মধ্যে চলমান রাজনৈতিক সমস্যার নানা দিককে প্রভাবিত করবে।’
ইন্দিরা গান্ধীর সময় ১৯৭৫ সালে ভারতে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল, যা রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল করে তুলেছিল ভারতকে। এ ছবিটিতে ভারতের রাজনীতি ও সমাজনীতির একটা অন্ধকার দিক ফুটে উঠেছে। এ ছাড়া ছবিতে দেখানো হয়েছে ইন্দিরা গান্ধী কীভাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধতে সাহায্য করেছিল। ই সময় পাকিস্তান-বাংলাদেশের যুদ্ধে যাতে ভারত না জড়িয়ে পড়ে, তার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ক্রমাগত চাপ আসছিল, কিন্তু ইন্দিরা গান্ধী তার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন যে, লাখ লাখ শরণার্থীকে ভারতে জায়গা দেওয়ার থেকে অর্থনৈতিক স্তরে ভারতের পক্ষে সরাসরি পাকিস্তানের মোকাবিলা করা ভালো হবে।
কিন্তু বর্তমানে বেশ কিছু দিন ধরে উত্তাল বাংলাদেশ। এখনো যে অবস্থা স্বাভাবিক হয়েছে তা বলা যায় না। তা ছাড়া ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনাও দেখা দিয়েছিল। তাই সব মিলিয়ে বাংলাদেশে ছবিটির মুক্তি দেওয়া হয়নি।
তবে অনেকের মতে, এর ফলে ছবির বেশ কিছুটা ক্ষতি হবে। কারণ বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার, কিন্তু সেখানেই প্রবেশ করতে পারছে না এ ছবিটি। ফলে ছবির আয়ের ওপর যে এর বড় প্রভাব পড়বে, তা বলাই বাহুল্য।
উল্লেখ্য, অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতের ‘ইমার্জেন্সি’ ছবি থেকে বেশ কিছু দৃশ্য বাদও দিতে হয়েছে অভিনেত্রীকে। সব মিলিয়ে প্রথম পরিচালনা করতে গিয়ে ভালোই বেগ পেতে হয়েছে কঙ্গনাকে। তাই আগামী দিনে আর রাজনৈতিক ছবি তৈরির কথা ভাবছেন না তিনি। অভিনেত্রীর বহু প্রতীক্ষিত ছবি ‘ইমার্জেন্সি’ ১৭ জানুয়ারি মুক্তি পায়।