সিদ্ধ সবজি খেয়েই ডায়েট সোনুর, ঝুঁকি নেই তো?
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৯ পিএম
মদ-মাংস ছুঁয়েও দেখেন না। সম্পূর্ণ নিরামিষ আহার করেন। নিয়মিত শরীরচর্চা ও কঠোর ডায়েটই দক্ষিণী অভিনেতা সোনু সুদের ‘ফিটনেস’ মন্ত্র। তার সুগঠিত শরীর ও নিয়মানুবর্তিতা দেখে অনুপ্রাণিত হন অনেকেই।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রায়ই নিজের শরীরচর্চার ভিডিও শেয়ার করেন সোনু। তিনি কী ধরনের খাবার খান, সে নিয়েও বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে নানা কথা জানিয়েছেন অভিনেতা।
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে সোনু বলেছেন, তিনি একেবারেই একঘেয়ে খাবার খান। যাকে বলে সাদামাঠা হাসপাতালের মতো খাবার। অথচ তার বাড়িতে সেরা রাঁধুনিরা রয়েছেন। বাড়ির সবার জন্য সুস্বাদু আমিষ রান্না হলেও তিনি সম্পূর্ণ নিরামিষ খাবারই খান। আর ডায়েট থেকে রুটি বা পরোটা একেবারেই বাদ দিয়ে দিয়েছেন তিনি।
দুপুরে কোনো কোনো দিন সামান্য ডাল-ভাত খেলেও ‘লো কার্ব’ বা ‘নো কার্ব’ ডায়েটই অভিনেতা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। প্রাতরাশে খান ডিমের সাদা অংশ, স্যালাদ, সিদ্ধ সবজি, সিদ্ধ পেঁপে বা অ্যাভোকাডো। আর দুপুরে বেশিরভাগ সময়েই সিদ্ধ সবজি ও স্যালাদ। ‘চিট মিল’-এ একেবারেই বিশ্বাসী নন। কঠোরভাবে প্রতিদিন ডায়েট মেনে চলেন সোনু সুদ।
এখন কথা হলো প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা থেকে কার্বোহাইড্রেট একেবারেই ছেঁটে ফেলা কি ঠিক? এ বিষয়ে পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বলেন, রুটি বা চাপাতি এবং ভাত ডায়েট থেকে বাদ দিলে প্রথম প্রথম শরীর হালকা লাগবে। পেটের সমস্যা ও বদহজমের ধাত থাকলে তা কমে যাবে। চেহারায় জেল্লা আসবে, অনেক বেশি তরতাজা দেখাবে। কিন্তু কিছু সময় পর থেকেই শরীর দুর্বল হতে শুরু করবে।
তিনি বলেন, জটিল জৈব যৌগ কার্বোহাইড্রেটের মূল উপাদান কার্বন, হাইড্রোজেন আর অক্সিজেন। শরীরের জ্বালানি হলো কার্বোহাইড্রেট। এটি জারিত হয়ে শরীরে শক্তি জোগায়। শরীরে শক্তির প্রাথমিক উপাদানই হলো কার্বোহাইড্রেট। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় প্রোটিন, ভিটামিন বা খনিজসমৃদ্ধ খাবার যতই রাখুন না কেন, কার্বোহাইড্রেট রাখতেই হবে। শরীর গড়তে স্ট্রাকচারাল গ্রোথের জন্য কার্বোহাইড্রেটই প্রধান উপকরণ।
পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বলেন, যতটা ক্যালোরি প্রয়োজন তার মধ্যে ৪৫ থেকে ৬৫ শতাংশ কার্বোহাইড্রেট থেকে আসা উচিত। যার ২০০০ ক্যালোরির প্রয়োজন, তার ৯০০ থেকে ১৩০০ ক্যালোরি আসা উচিত কার্বোহাইড্রেট থেকে। তাই প্রতিদিন ডায়েটে ২৫০ থেকে ৩৬০ গ্রামের মতো কার্বোহাইড্রেট রাখতেই হবে। যারা ‘লো কার্ব’ ডায়েট করছেন, তাদের দিনে ৫০-১০০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট খেতেই হবে। দুপুরে এক কাপ ভাত বা রাতে হাতে গড়া দুটি রুটি ও সবজি খেলে সেই চাহিদা পূরণ হবে। এককথায়, যে কোনো খাবার রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে কার্বোহাইড্রেট এই দিক থেকে নিরাপদ।
এ পুষ্টিবিদ বলেন, ওজন ঝরানোর জন্য যারা ভাত বা রুটি বাদ দিয়েছেন, তাদের কার্বোহাইড্রেটের জন্য বিকল্প খাবার বেছে নিতে হবে। বিভিন্ন দানাশস্য, যেমন— ওট্স, ডালিয়া, কিনোয়া, সবজি, বিন্স, কড়াইশুঁটি খেতে হবে। স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, প্রয়োজনীয় নানা ভিটামিন এবং খনিজে ভরপুর বাদাম এবং বিভিন্ন ধরনের বীজ রাখা যেতেই পারে ‘নো কার্ব’ ডায়েটে। কাঠবাদাম, আখরোট, কাজুও খেতে হবে। তবে ‘নো কার্ব’ ডায়েট স্বাস্থ্যকর নয়।
তিনি বলেন, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট সমপরিমাণে আছে— এমন সুষম ডায়েটই শরীরের জন্য জরুরি। তাই পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়েই ডায়েট ঠিক করা উচিত বলে মনে করেন শম্পা চক্রবর্তী ।