যে কারণে ভাঙল এ আর রাহমানের তিন দশকের সংসার?
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৩ পিএম
অস্কারজয়ী সংগীত পরিচালক এ আর রাহমান ও সায়রা বানুর সম্পর্কে হঠাৎ-ই বেজে উঠল বিচ্ছেদের সুর। তারা পাশাপাশি চলেছেন প্রায় তিন দশক। মঙ্গলবার বিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছেন এ দম্পতি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, বিচ্ছেদের খবর জানিয়ে এ আর রাহমান আর সায়রা বানু যে বিবৃতি দিয়েছেন, সেখানে কারণ হিসেবে ‘মানসিক দূরত্ব’কে উল্লেখ করেছেন তারা।
বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটে এ আর রাহমান এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, ‘ভেবেছিলাম আমরা ত্রিশে পৌঁছাব। কিন্তু মনে হয় সবকিছুরই এমন শেষ আছে, যা আগে থেকে বোঝা যায় না। ভাঙা হৃদয়ের ভার স্রষ্টার সিংহাসনও কাঁপিয়ে দিতে পারে। ভঙ্গুর পরিস্থিতিতে সবকিছুর অর্থ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছি। যদিও ভেঙে যাওয়া সম্পর্কের টুকরাগুলো আর আগের জায়গা ফিরে পেতে না–ও পারে।’
বন্ধুদের উদ্দেশে রাহমান আহ্বান জানান, আমাদের জীবনের এই ভঙ্গুর অধ্যায়ে মহানুভবতা ও আমাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার প্রতি সম্মান জানানোয় আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।
এর আগে বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে রাহমানের স্ত্রী সায়রা বানুর একটি বিবৃতি ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের মাধ্যমে প্রকাশ্যে আনেন তার আইনজীবী।
আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে সায়রা বানুর আইনজীবী বন্দনা শাহ জানিয়েছেন, বিয়ের বহু বছর পর স্বামী এ আর রাহমানের সঙ্গে বিচ্ছেদের কঠিন সিদ্ধান্ত নিলেন। মানসিক দূরত্ব বাড়ার কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। একে অপরের প্রতি গভীর ভালোবাসা সত্ত্বেও এক সময় বুঝলেন, তাদের মধ্যে দিনে দিনে দূরত্ব বেড়েছে। অনেক ব্যবধান, যা এই মুহূর্তে কোনো পক্ষই পূরণ করতে সক্ষম নয় বলে মনে করছেন তারা। উভয়েই আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন মিটিয়ে নিতে, কিন্তু তা আর সম্ভব হয়নি।
সায়রা বানুর ভাষ্য, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া তার পক্ষে মোটেও সহজ ছিল না। অনেক ব্যথা ও যন্ত্রণা থেকে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। বিবৃতিতে আইনজীবী অনুরোধ করেছেন, বিষয়টি নিয়ে যেন সায়রাকে বিব্রত না করা হয়। তিনি মানসিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে ইতি টানা সহজ নয়।
এ আর রাহমান ও সায়রা বানুর আইনজীবী বন্দনা শাহর আরেকটি মন্তব্য অন্যকিছু ইঙ্গিত করে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ধোকার কারণেই সব সময় তারকাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়, তা ঠিক নয়, জরুরি নয়। একে অপরের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ার কারণে অনেক সময় সম্পর্ক ভেঙে যায়। আবার অনেক সময় স্বামী-স্ত্রীর মা–বাবা, ভাই-বোন বা অন্য কোনো আত্মীয়ের কারণে তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক প্রভাবিত হয়।
১৯৯৫ সালে সায়রা বানুর সঙ্গে সংসার জীবন শুরু করেন এ আর রাহমান। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে শিল্পী জানিয়েছিলেন, সায়রা বানুর সঙ্গে বিয়েটা হয়েছিল পারিবারিক পছন্দে, প্রেম নয়। মায়ের পছন্দে বিয়ে করেছিলেন তিনি।
সিমি গারেওয়ালকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাহমান এমনও বলেছিলেন, স্ত্রী সায়রার সঙ্গে তার কিছু সাংস্কৃতিক মতপার্থক্য রয়েছে। যদিও তারা বিষয়টি সামলে নিয়েছেন।
১১ বছর বয়স থেকে দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার বিভিন্ন সুরকারের সঙ্গে বাজাতে শুরু করেন এ আর রাহমান। তার নাম ছিল দিলীপ কুমার। ঘটনাচক্রে ২৩ বছর বয়সে সপরিবারে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। নাম রাখা হয় এ আর রহমান।
১৯৯২ সালে তামিল ছবি ‘রোজা’ দিয়ে সুরকার হিসেবে তার যাত্রা। পরে ১৯৯৫ সালে রাম গোপাল ভার্মার ‘রঙ্গীলা’তে সংগীত পরিচালনা করে তিনি শুরু করেন বলিউড যাত্রা।
ড্যানি বয়েলের ‘স্লামডগ মিলিয়নিয়ার’-এর জন্য অস্কার, গ্র্যামি, বাফটা ও গোল্ডেন গ্লোব জিতেছিলেন এ আর রাহমান। এ ছাড়া তার ঝুলিতে আছে ভারতের ছয়টি জাতীয় পুরস্কার।