টালিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মুনমুন সেনের স্বামী ভরত দেব ভার্মা মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। মঙ্গলবার সকালে দক্ষিণ কলকাতার নিজের বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। এরপর সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বাড়ির বাইরে আসেন মুনমুন সেন, সঙ্গে রাইমা সেন। শেষ সময় বাবার পাশে থাকতে না পারার আক্ষেপ ঝরে পড়ে রাইমার গলায়।
আনন্দবাজার সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকালে দিল্লিতে ছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী মুনমুন সেন। তার মাঝেই দুঃসংবাদ। জানতে পারেন স্বামী ভরত দেব ভার্মা আর নেই। দিল্লিতে ছিলেন কন্যা রাইমাও। মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে কলকাতার বিমান ধরেন মা-মেয়ে। বিকাল ৪টা নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছন তারা। তখন বাবার মরদেহের পাশে বসে ছোট মেয়ে অভিনেত্রী রিয়া সেন।
এদিকে সকালে খবর পেয়েই মুখ্যমন্ত্রী হাজির হয়েছিলেন সুচিত্রা সেনের বাড়িতে। বিকাল গড়াতেই বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের বেদান্ত আবাসনের বাইরে ভিড় জমতে শুরু করে। স্থানীয়দের কৌতূহল— মুনমুন কখন শহরে ফিরবেন। মুনমুন ও রাইমা যাতে বিমানবন্দর থেকে দ্রুত বাড়ি পৌঁছাতে পারেন, তার জন্য পুলিশ প্রশাসনকেও বিশেষ নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিমানবন্দর থেকে একই গাড়িতে ফেরেন মুনমুন ও রাইমা। মুনমুনের পরনে ছিল ঘিয়ে রঙের কো-অর্ড সেট। অন্যদিকে রাইমার পরনে ছিল কালো কুর্তা।
এদিকে অভিনেত্রীর স্বামীর প্রয়াণের খবর পেয়ে একে একে তারকারা আসতে শুরু করেন বালিগঞ্জের বাড়িতে। অভিনেতা আবীর চট্টোপাধ্যায়, সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়রা আগেই উপস্থিত হয়েছিলেন। সন্ধ্যায় মুনমুন সেনের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। হেমন্তের সূর্য একটু তাড়াতাড়ি ডোবে। অন্ধকার নামার আগেই ভরতকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হন ঊষা উত্থুপ, তেলেঙ্গানার রাজ্যপাল জিষ্ণু দেববর্মারা।
সবাই অপেক্ষা করছিলেন এমন এক কঠিন মুহূর্তে মুনমুনের জন্য। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বাড়ির বাইরে আসেন মুনমুন সেন। সঙ্গে ছিলেন মেয়ে রাইমা সেন। তবে রিয়া সেন বাইরে আসেননি। মুনমুন বলেন, আজকের পর থেকে জীবনটা বদলে যাবে তার। তিনি বলেন, খবর পেয়ে ছুটে এসেছি। সবাইকে আগলে রাখতেন। আমাদের জীবনটাই বদলে যাবে। বাবার অভাব বোধ করবেন, জানালেন বড় মেয়ে। রাইমার কথায়—শেষ সময় পাশে থাকতে পারলাম না। বাবাকে খুব মিস করব।
সাড়ে ৬টা নাগাদ আরও একবার মুনমুনের বাসভবনে এসে উপস্থিত হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কেওড়াতলায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হওয়ার কথা ভরতের। কিছু আত্মীয়ের জন্য অপেক্ষা করছে পরিবার।