বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল গান বাংলার প্রধান নির্বাহী কৌশিক হোসেন তাপসকে সোমবার উত্তরা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) রওনক জাহান তাপসকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, সুনিদিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে উত্তরা পূর্ব থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এসব মামলায় গ্রেফতারের পর তাকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে আসামি মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে জানা যায়। আসামিকে জামিনে মুক্তি দিলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি, মামলার তদন্তে ব্যাঘাতসহ আসামির দেশ ত্যাগ করার আশঙ্কা রয়েছে। আসামি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের কঠোর হস্তে দমন করার জন্য ক্ষমতাচ্যুত সরকারের নেতাকর্মীদের উসকানি প্রদান করেছেন।
তিনি একজন সক্রিয় আওয়ামী লীগের কর্মী। তিনি এ মামলার ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত। মামলার সঙ্গে জড়িত অপরাপর অজ্ঞাতনামা আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের জন্য এবং মামলায় ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করতে আসামিকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন, অজ্ঞাতনামা আসামি সনাক্ত ও গ্রেফতার এবং আলামত উদ্ধার করা সম্ভব হবে। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবি রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
তবে এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপস্থিত না থাকায় আগামী ৬ নভেম্বর রিমান্ড শুনানির জন্য দিন ধার্য করে আদালত। একইসঙ্গে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
তাপস একাধারে গায়ক, সুরকার ও সংগীত পরিচালক। এর আগে গত ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশের একমাত্র সংগীতভিত্তিক টিভি চ্যানেল গান বাংলায় ভাঙচুর করা হয়।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার জন্য ইশতিয়াক মাহমুদসহ অন্যরা ছাত্রজনতার সঙ্গে একত্রিত হয়ে উত্তরা পূর্ব থানাধীন ৪নং সেক্টরস্থ আজমপুর নওয়াব হাবিবুল্লাহ হাই স্কুলের সামনে ফাঁকা রাস্তার উপর পৌঁছামাত্র ঘোষণা দিয়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী ক্যাডাররা দেশী ও বিদেশী অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হত্যার উদ্দেশে ইশতিয়াকের ওপর অতর্কিত হামলা, মারধরসহ গুলি বর্ষণ করতে থাকে। আসামিদের ছোড়া গুলির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তিনিসহ ছাত্রদের অভিভাবক ও ছাত্রজনতা এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। পরে আসামিদের ছোড়া গুলি তার পেট, পিঠ, হাতে ও মাথায় লাগলে তিনি গুরুতর আহত হয়। পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
এ ঘটনায় গত ২৯ অক্টোবর ব্যবসায়ী ইশতিয়াক মাহমুদ বাদী হয়ে পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ১২৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। এ মামলার এজাহারনামীয় ৯ নং আসামি হলেন তাপস।