পুরুষ মানেই সম্ভাব্য ধর্ষক: অভিনেত্রী গুলশানআরা
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৪, ০১:৩৯ পিএম
আরজি করকাণ্ডে রাজ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে। চারদিকে বিদ্রোহের ঢেউ আছড়ে পড়েছে। কর্তব্যরত অবস্থায় হাসপাতালের সেমিনার রুমে নারকীয় বর্বরতার শিকার আরজি করের চেস্ট মেডিসিন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী! যৌন নির্যাতন চালিয়ে খুন করা হয় ওই তরুণীকে। ঘটনার জেরে শহরের রাস্তায় নাগরিক মিছিল, ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে প্রতিবাদের হিড়িক।
রাত পেরোলেই ১৪ আগস্ট। আর স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে ‘মেয়েরা রাত দখল কর’ অভিযান চলবে গোটা বাংলাজুড়ে। এই আন্দোলনে শামিল হয়েছেন টালিউড অভিনেত্রী গুলশানআরা খাতুনও। তবে এ অভিনেত্রী ও নাট্যকর্মীর এক বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে সামাজিকমাধ্যমে শুরু হয়েছে বিতর্ক। সেখানে সব পুরুষকে একই পাল্লায় মাপা হয়েছে। ‘সম্ভাব্য রেপিস্ট’ বলে মন্তব্য করেছেন এ 'নারীবাদী' অভিনেত্রী।
মঙ্গলবার ফেসবুকে একটি লিংক শেয়ার করে গুলশানআরা লেখেন— ‘হ্যাঁ, আমি বিশ্বাস করি ‘পুরুষ মানেই সম্ভাব্য ধর্ষক’। ছোট থেকে বাবার বন্ধু থেকে শুরু করে এত লোক গায়ে হাত মেরেছে যে, এটি আমার বিশ্বাস— পুরুষ জাতিকে ‘সম্ভাব্য ধর্ষক’। আমি আবার বলছি, চিৎকার করে বলছি— চাইলে আমাকে আনফ্রেন্ড করতে দ্বিধাবোধ কর না।’ এর পরিপ্রেক্ষিতে নারীরাও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন—ধর্ষক নারীও হয়, সেটিও ভয়ানক। কিন্তু তোমার কথার বিরোধিতা করছি…।
এরপর গুলশানআরা যোগ করেন, 'অবধারিতভাবেই আমি ধর্ষণের হুমকি পাচ্ছি, আর ‘ভালো বন্ধু’দের থেকে ফোনও পাচ্ছি। ধর্ষক মানেই পুরুষ, আর ‘পুরুষ’ হলে ধর্ষক নন।'
যদিও অধিকাংশ নেটিজেন গুলশানআরার এই পুরুষবিদ্বেষী মনোভাবের সঙ্গে একমত নয়। টালিউডের অনেকেই এর বিরোধিতা করেছেন। কারণ ‘অভয়া’কে সুবিচার পাইয়ে দেওয়ার লড়াইয়ে শুধু তার মহিলা সহকর্মীরাই নয়, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই চালাচ্ছেন পুরুষরাও।
এদিকে আরেক অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমার মনে হয় এটা তুমি তোমার কোনো অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে বলছ। কিন্তু এভাবে তুমি বলতে পারো না। তোমার দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’
নিম ফুলের মধুখ্যাত বড় জেঠি অর্থাৎ তনুশ্রী গোস্বামী লিখেছেন, 'কথাটা গায়ে নিলাম। নিজের বাবার কথা মনে হলো। তোর বাবার কথাও মনে হলো। ওকে নিয়ে তোর লেখাও পড়েছিলাম। কোথাও তো এ রকম মনে হয়নি। কী জানি হয়তো কিছু আছে। তিনি আরও লিখেছেন, তোর অভিনয়ের ভক্ত আমি। ওটুকুই থাক। আমরা এক প্ল্যাটফর্মে কাজ করি। সেটুকু শ্রদ্ধা রেখে চলব। আর যেহেতু তুই তোর বক্তব্য পছন্দ না হলে আনফ্রেন্ড করতে বলেছিস, সেটাই করলাম। ভালো থাকিস।’
অভিনেতা দেবনাথ চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন— এটা ঠিক বললে না...। এর অনেক ব্যাখ্যা আছে— মানসিক করো না বিষয়টি। আমরা সবাই ট্রমাতেই আছি জানি…, তবুও। গাছের গোড়ায় অসুখ করেছে আর আগায় ওষুধ দিলে কিছুই হবে না শেষ পর্যন্ত।’
মঙ্গলবারই কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে আরজি করকাণ্ড মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে গেছে। আজ বুধবার আসছে কেন্দ্রীয় তদন্ত কমিটির ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দল। সঞ্জয় রায় কি প্রকৃত দোষী? সে কি একাই এই নৃশংস ঘটনার পেছনে রয়েছে? নাকি ধর্ষণের ছক আগেই কষা হয়েছিল? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে নির্যাতিতার পরিবারসহ গোটা বাংলা। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস