গণপিটুনিতে অভিনেতা শান্ত খান নিহত, কলকাতায় শিল্পীদের শোক
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ আগস্ট ২০২৪, ০১:৫৮ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করেন সোমবার। এ ঘটনার পর চাঁদপুরে নিজ বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার পথে বিক্ষুব্ধ জনতার গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন অভিনেতা শান্ত খান ও তার বাবা প্রয়োজক সেলিম খান। এ ঘটনায় বুধবার গভীর শোক প্রকাশ করেছেন কলকাতা চলচ্চিত্র শিল্পের সদস্যরা।
হত্যার কারণ সম্পর্কে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তারা কেউ কথা না বলতে চাইলেও শান্ত ও সেলিম খানের জন্য গভীর শোক প্রকাশ করেছেন তারা।
ভারতের জনপ্রিয় অভিনেতা রজতভ দত্ত এ বিষয়ে বলেন, ‘সে এবং তার বাবাকে হত্যা করার খবর শুনে আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আমরা জানি না কোন পরিস্থিতি তাদের মৃত্যুর দিকে নিয়ে গেছে। তাদের হত্যা করা হয়েছে জেনে আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। কারণ আমাদের মতো শিল্পীরা যারা শিল্প এবং সৃজনশীলতা নিয়ে কাজ করেন তাদের প্রত্যাশা থাকে শান্তি, বন্ধুত্ব এবং ভ্রাতৃত্বের।’
২০২২ সালে বাংলাদেশি চলচ্চিত্র বিক্ষোভে শান্তর সঙ্গে কাজ করেছেন রজতভ। সেই স্মৃতি টেনে রজতভ বলেন, ‘চলচ্চিত্রের জন্য চাঁদপুরে আমাদের শুটিং চলাকালীন, সে ব্যক্তিগতভাবে আমার যত্ন নিতেন। এমনকি হোটেলেও আমার কোনো কিছু প্রয়োজন কিনা সে সম্পর্কে খোঁজ রাখতেন। আমি জানি না কিভাবে বা কেন তাকে এত অল্প বয়সে মারা যেতে হয়েছিল। তার কর্মজীবন লম্বা হতে পারত।’
২০১৯ সালে প্রেম চোর সিনেমা দিয়ে অভিনয় জগতে পা রাখেন শান্ত খান। এরপর ২০২১ সালে পিয়া রে, ২০২৩ সালে বুবুজান ও ২০২৪ সালে আন্তো নগর সিনেমায় অভিনয় করেছেন শান্ত। এর মধ্যে পিয়া রে তে শান্তর বিপরীতে অভিনয় করেছেন ভারতের অন্যতম অভিনেত্রী কৌশানি মুখোপাধ্যায়। শান্তর এমন মৃত্যু তাই কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তিনি।
এ বিষয়ে কৌশানি বলেন, ‘সোমবার গভীর রাতে আমি উদ্বেগজনক এই খবরটি পেয়েছি এবং তখন থেকেই আমি ব্যথিত। যেহেতু আমি ইন্ডাস্ট্রিতে ওর সিনিয়র ছিলাম, শান্ত আমার প্রতি খুব শ্রদ্ধাশীল ছিল। সে অভিনেতা হিসেবে আরও অনেক কাজ করতে চেয়েছিল। আমি মানবতার জয়ে বিশ্বাস করি এবং আশা করি সেখানে খুব শীঘ্রই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’
২০২১ সালে ‘টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই’ ছবিতে তরুণ শেখ মুজিবের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন শান্ত। তার এমন মৃত্যু তাই ছুঁয়ে গেছে চলচ্চিত্র নির্মাতা রাজ চক্রবর্তীকেও। যা নিয়ে তিনি বলেন, ‘যে কোনো মৃত্যু, হোক সেটা একজন প্রতিবাদী ছাত্রের, একজন পুলিশকর্মীর, একজন অভিনেতার, একজন প্রযোজক বা একজন রাজনৈতিক কর্মীরই হোক না কেন, তা মর্মান্তিক। বাংলাদেশে কাজ করার স্মৃতি আমাদের সবারই আছে। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির একজন স্টেকহোল্ডার হওয়ায় আমি শুধু এটা বলছি না। একজন মানুষ এবং ভারতের নাগরিক হিসেবেও এমন মৃত্যু কাম্য নয় কারো।’