জয়ার জন্মদিনে যা বললেন টালিউড পরিচালক অরিন্দম শীল
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৩:৫৪ পিএম
ছবি সংগৃহীত
আজ জয়া আহসানের জন্মদিন। ওপার বাংলার টালিউড পরিচালক অরিন্দম শীল জয়ার জন্মদিন উপলক্ষ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখলেন অনেক অজানা কথাই। জানালেন টালিউডে প্রথম সুযোগ থেকে অভিনেত্রী হিসাবে নতুন উচ্চতা স্পর্শ আর বন্ধুত্বের সমীকরণে ফিরে দেখলেন পরিচালক।
জয়া অভিনেত্রী হিসাবে অনেকটা পথ পেরিয়ে এলো। ভেবেই আমার বেশ ভালো লাগছে। অনেকেই জানেন— টালিউডে জয়ার প্রথম ছবি ‘আবর্ত’ আমার পরিচালনায়। তাই আজ ওর জন্মদিন উপলক্ষ্যে লিখতে বসে অনেক পুরনো কথা মনে পড়ছে। পশ্চিমবঙ্গে অভিনেত্রী জয়া এখন দর্শকদের কাছে পরিচিত মুখ। কিন্তু আজকের এই লেখায় আমি ওকে কীভাবে খুঁজে পাই, সেটাই ভাবছি, তাই অজানা গল্প দিয়ে শুরু করা যাক।
অরিন্দম শীল বলেন, আমি শুরু থেকেই তারকা না।
চরিত্র বুঝে অভিনেতা-অভিনেত্রী নির্বাচন করার চেষ্টা করি। সেভাবেই ‘আবর্ত’ ছবিতে জয়াকে নির্বাচন করা হয়। আমি টালিউডে ‘চারু’ চরিত্রের জন্য অভিনেত্রীর খোঁজ করছি। অথচ চরিত্রটির জন্য একাকিত্ব, নিষ্পাপ ও শান্ত একটা মুখ কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না। তখন বাংলাদেশের আমার কয়েকজন বন্ধু আমাকে জয়ার কথা বলেন।
সেটি ২০১০ সালের কথা। সেদিনের কথা খুব মনে পড়ে। আমার বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে জয়াকে ফোন করি। তখন মোবাইলে আইএসডি খুব খরচসাপেক্ষ ছিল। জয়া আমাকে বলল— ‘দাদা আমি ঢাকা থেকে অনেক দূরে শুটিং করছি। আপনাকে আমার কাজের কিছু নমুনা পাঠাচ্ছি। আপনি দেখে নিন। তার পর আমরা কথা বলব।’
এর পর বেশ কিছু দিন কেটে গেল। ততদিনে আমি বাংলাদেশে ওর অভিনীত কিছু নাটক দেখে ফেলি। ছবিতে ওকে নেওয়ার জন্য আমার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করি। সব হয়ে যাওয়ার পর ঢাকায় ওর সঙ্গে আমার প্রথম দেখা ও আলাপ। ঢাকারই এক প্রযোজক ও পরিচালকের অফিসে বসে জয়াকে ছবির গোটা চিত্রনাট্যটি পড়ে শুনিয়েছিলাম।
সেই সময় জয়াকে ‘কাস্ট’ করার জন্য আমাকে অনেক সমালোচনা সহ্য করতে হয়েছিল। তখন ওটিটি ছিল না। কথায় কথায় দুই বাংলার শিল্পীরা একসঙ্গে কাজ করতেন না। সেখানে জয়া নতুন মুখ, কিন্তু আমি আমার ‘ইনস্টিংক্ট’ থেকে কিছু বিষয় বুঝে এগিয়েছিলাম। পরে ছবি মুক্তির পর আমার সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিল, তা প্রমাণিত হয়েছিল।
আরও একটি ঘটনার কথা বলি— ‘ঈগলের চোখ’ ছবিতে অনির্বাণের সঙ্গে চুম্বনদৃশ্য। সেটি নিয়েও সোশ্যাল মিডিয়ায় কম সমালোচিত হয়। এ নিয়েও তর্ক-বিতর্ক হয়। আমি দেখতাম, জয়া সেসব পাত্তা দিত না।
‘আবর্ত’ ছবির শেষ দিনের শুটিং চলছে। লোকেশনের ফ্ল্যাটটি আমার বন্ধু হর্ষ নেওটিয়ার। লাঞ্চ ব্রেকের পর কাজ শুরু হবে। এমন সময় হঠাৎ আমার একজন সহকারী এসে বললেন, ‘দাদা, জলদি আসুন। জয়াদি খুব কান্নাকাটি করছেন!’ আমি ছুটে গিয়ে দেখলাম, জয়ার দু’চোখ বেয়ে জল পড়ছে। করুণ মুখে বলল— ‘দাদা, বাবা আর নেই।’
আমি সঙ্গে সঙ্গে ওকে ঢাকা ফিরে যেতে বললাম, কিন্তু জয়া আমাকে যা বলেছিল, আজও আমার স্পষ্ট মনে আছে। ও বলেছিল— ‘দাদা, আজকে শুটিং শেষ করতে না পারলে তো অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। আমি সিনটা করি।‘
আমি ওর কথা শুনে অবাক! কী বলব— বুঝতে পারছিলাম না। কিছুক্ষণ চুপ থেকে আমি আবার ওকে ঢাকা ফিরে যেতে বলি এবং কাজ করতে নিষেধ করি। তৎক্ষণাৎ ওর ঢাকা ফেরার ব্যবস্থা করি। এই হচ্ছে জয়া আহসান।
সূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন