বহুদিন ধরেই বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন ভারতের গায়িকা পলক মুচ্ছল। এবার প্রায় ৩০০০ শিশুর জীবন বাঁচাতে বড় পদক্ষেপ নিলেন পলক। টাকা তুলে অর্থ সঞ্চয় করে এই শিশুদের হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করেন তিনি।
এই উদ্যোগের বিষয়ে পলক বলেন, আমি যখন এই মিশনটি শুরু করি, তখন এটা একটা ছোট উদ্যোগ ছিল, যে উদ্যোগ সাত বছরের এক শিশুর জীবন বাঁচিয়েছিল। এখন এটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় মিশন হয়ে উঠেছে। এ মুহূর্তে অস্ত্রোপচারের জন্য অপেক্ষা করে আছে এমন ৪১৩ জন শিশু রয়েছে। আমার প্রতিটি কনসার্ট শিশুদের হার্ট সার্জারির জন্যই নিবেদিত। যাদের বাবা-মা এর খরচ বহন করতে পারেন না, তাদের জন্য। এটা একটা দায়িত্ব মনে হয়, আমি যতই এগিয়েছি, আমি এর প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি বুঝতে পেরেছি। আমি সত্যিই খুশি যে ঈশ্বর আমাকে এই কাজের জন্য একটা মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
১১ জুন নিজের এক শিশুর অস্ত্রোপচারের আগে একটা পোস্টে পলক বলেন, প্রার্থনা করুন যাতে সবকিছু ঠিকঠাক হয়। পলকের এই পোস্টে কমেন্টের বন্যা বয়ে যায়, নেটপাড়ায় অনেকেই তাকে ‘আরও একজন সোনু সুদ’ বলে উল্লেখ করেন।
নিজের এই যাত্রাপথের কথা বলতে গিয়ে পলক বলেন, আমি যখন অনেক ছোট, তখনই আমি এই উদ্যোগ নেওয়া শুরু করি। আমি গান শুরু করার অন্যতম কারণই ছিল এটা। শীতকালে ফুটপাতের নিচে বসে থাকা বাচ্চাদের জন্য আমার সবসময় অপরাধবোধ হতো। যাদের নিজেদের শরীর ঢেকে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় কাপড়টুকুও নেই, তারাই হয় আমি যে ট্রেনে যাতায়াত করি, সেখানকার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করে। তাদের সুস্থ জীবন দিতে দায়িত্ব অনুভব করি। তহবিল সংগ্রহের জন্য প্রথম যে মিশন আমার ছিল, সেটা হলো কার্গিল সৈন্যদের জন্য। আমি কেনাকাটা করতে গিয়ে গেয়েছিলাম অ্যা মেরে ওয়াতান কে লোগ। দোকানদারদের কারগিল সৈন্যদের জন্য কিছু দান করতে বলেছিলাম। আমার ভাই, পলাশ এবং আমি প্রথমবার গেয়েছিলাম, যখন রাস্তায় বসবাসকারী এক শিশু আমাদের কাছে সাহায্যের জন্য এসেছিল। তারপর থেকে আমার করা প্রতি কনসার্ট হার্ট সার্জারির সুবিধার্থে নিবেদিত ছিল।’
পলক সবশেষে বলেন, যখন আমার কাছে সিনেমায় প্লেব্যাকের কোনো কাজ ছিল না, তখনো আমি তিন ঘণ্টা গান গেয়েছি শুধু শিশুদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে। আমার গান যত জনপ্রিয় হতে থাকে, ততই আমার পারিশ্রমিক বাড়তে থাকে। আমি এখন কনসার্ট থেকে যে অর্থ উপার্জন করি, তা থেকেই ১৩-১৪টি শিশুর অস্ত্রোপচার সম্ভব। আমি সবসময় গানকে সমাজ পরিবর্তন আনার মাধ্যম হিসেবে দেখেছি।