ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্বের নামে অর্থ আত্মসাৎ, চুক্তিভঙ্গ ও শিডিউল ফাঁসানোর অভিযোগ এনেছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আলফা আই। সেই সঙ্গে তাকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার শাহরিয়ার শাকিল। অপূর্বের এমন অপ্রীতিকর ঘটনায় পাশে দাঁড়িয়েছেন ইন্ডাস্ট্রির সহকর্মীরা।
পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী ফেসবুকে পোস্টে অপূর্ব প্রসঙ্গে লেখেন, কাউকে ছোট করে, অসম্মানিত করে কেউ কখনই বড় হতেই পারে না কোনোদিন। ফেসবুকে প্রকাশ্যে তো অবশ্যই নয়। আর ফেসবুক কখনই আদালত না যে এখানেই সব কথা বলতে হবে, বিশেষ করে নেগেটিভ কথা। ‘প্রহেলিকার’ মতো বলতেই চাই, চোখে যা দেখা যায় তা আসলে দেখা যায় না।
তিনি আরও লেখেন, আর ইন্ডাস্ট্রি কখনোই একা একা এগোয় না। সবাইকে নিয়েই সামনে এগোয়। আর অপূর্বর ১৬-১৭ বছরের ক্যারিয়ার টানা ধরে রাখাও এমনি এমনি হয়নি। পাশাপাশি এও বলতে চাই, আমার খারাপ সময়ে বা দুঃসময়ে কে আমার পাশে থাকল না, তা আমি মাথায় রাখি না কখনই। বরং আমার প্রিয়জনদের জন্যে শুভ কামনা আমার মন থেকে সবসময় আসে।
অভিনেত্রী সাবিলা নূর লিখেছেন, জিয়াউল ফারুক অপূর্ব একজন স্বনামধন্য, পরিশ্রমী ও সহানুভূতিশীল শিল্পী। গত ২০ বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে তিনি তার ইমেজ গড়েছেন। কোনো ভুল বোঝাবুঝির কারণে একজন শিল্পীর ইমেজ ক্ষুন্ন হোক, আমরা চাই না। ভুল বোঝাবুঝির অবসান হোক।
অভিনেতা খালেদ মাহমুদ ফেসবুক পোস্টে বলেন, অপূর্ব ভাইকে ভালোবাসি। অপূর্ব ভাই সুপারস্টার ছিলেন, সুপারস্টার আছেন এবং সুপারস্টার থাকবেন। সব ঝামেলা থেকে মুক্ত হয়ে রাজার মতো ফিরবেন প্রিয় অপূর্ব ভাই।
অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ লিখেছেন, প্রতিটি শিল্পীর সঙ্গে সম্মান ও মর্যাাদা রেখে আচরণ করা উচিত। আমরা আপনার সঙ্গে আছি জিয়াউল ফারুক অপূর্ব।
পরিচালক জাকারিয়া সৌখিন লেখেন, অপূর্বর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। সত্যি বলতে, অপূর্বকে আমরা খুব ভালো চিনি। এই কাজ ওকে দিয়ে কোনোভাবেই সম্ভব না। তাই অভিযোগটি অগ্রহণযোগ্য এবং অবিশ্বাস্য! অপূর্ব, তুমি একা নও। আমরা তোমার পাশে আছি।
আলফা আই দাবি করেছে, তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে ২৪টি নাটকের জন্য ৫০ লাখ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হন অপূর্ব। তবে মাত্র ৯টি নাটকে কাজ করে ৩৩ লাখ টাকা নিয়ে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন অভিনেতা। প্রতিষ্ঠানটির মালিক শাহরিয়ার শাকিলের চুক্তিমতে অপূর্বকে প্রতি মাসে তিন দিন সময় দিয়ে নাটকগুলোর শুটিং শেষ করে দেওয়ার কথা। গত বছর অক্টোবরে নাটকগুলোর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাকি নাটকগুলো শেষ না করেই তিনি ভঙ্গ করেন আলফা আইয়ের চুক্তি।
এ ঘটনায় অভিনেতা অপূর্ব আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেন, অভিযোগ সত্য নয়। ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আমার জন্য মানহানিকর। আমি দীর্ঘদিনের সুপরিচিত একজন অভিনয়শিল্পী। অর্থ আত্মসাতের মতো নোংরা মিথ্যা অভিযোগে আমার মতো একজন শিল্পীকে জড়ানো হচ্ছে, যা খুবই দুঃখজনক।
তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে আমার আইনজীবী কথা বলবেন। যেহেতু আইনি প্রক্রিয়ায় আমি এগোচ্ছি, তাই এটা নিয়ে কোনো মন্তব্য বা কথাবার্তা এ মুহূর্তে বলতে চাই না। এসব আমি কথা বললে আইনি প্রক্রিয়ায় বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে আমার আইনজীবী জানিয়েছেন। তাই যা বলার তারাই বলবেন।