Logo
Logo
×

বিনোদন

এফডিসিতে অভিনেতা টেলি সামাদের জানাজা সম্পন্ন

Icon

যুগান্তর রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০১৯, ০১:৪০ পিএম

এফডিসিতে অভিনেতা টেলি সামাদের জানাজা সম্পন্ন

এফডিসিতে অভিনেতা টেলি সামাদের জানাজা সম্পন্ন। ফাইল ছবি

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (এফডিসি) কিংবদন্তি অভিনেতা টেলি সামাদের তৃতীয় জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। 

রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় জহির রায়হান কালার ল্যাব অডিটরিয়ামের সামনে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজায় অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীরা অংশ নেন।

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, তথ্য সচিব আবদুল মালেক, এনটিভির পরিচালক আলহাজ নুরুদ্দিন আহমেদ, অভিনেতা আলমগীর, অমিত হাসান, জায়েদ খান, সম্রাট, প্রযোজক মুশফিকুর রহমান গুলজার, খোরশেদ আলম খসরু, গায়ক ফকির আলমগীর, পরিচালক দেলওয়ার জাহান ঝন্টু, শাহ আলম কিরণ প্রমুখ গুণী এ অভিনেতার জানাজায় শরিক হন। 

এর আগে টেলি সামাদের লাশবাহী গাড়ি সকাল পৌনে ১০টার দিকে এফডিসিতে আনা হয়। আজ শিল্পীর মরদেহ মুন্সীগঞ্জে দাফন করা হবে। 

শনিবার দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। টেলি সামাদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, পরিচালক সমিতি, বাচসাস, সিজাবসহ বেশ কয়েকটি সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন শোক জানিয়েছে।

হাসপাতাল থেকে সন্ধ্যায় টেলি সামাদের মরদেহ বাসায় নেয়া হয়। মাগরিবের নামাজের পর রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজার মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এশার নামাজের পর মগবাজারে তার দ্বিতীয় জানাজা হয়। 

ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা টেলি সামাদ দীর্ঘদিন ধরে শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে তার বাইপাস সার্জারি হয়। 

এর পর ২০১৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি কিছুটা সুস্থ হয়ে দেশে ফেরেন। গত বছরের ২০ অক্টোবর তার বাঁ পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলিতে জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয়।

গত বছরের ৪ ডিসেম্বর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি ভর্তি হন। স্কয়ার হাসপাতালে ১৬ দিন চিকিৎসা নেয়ার পর বাসায় ফিরে তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর পর ১৯ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউতে তাকে ভর্তি করা হয়। সে যাত্রায়ও সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরেন তিনি। 

সবশেষ গত বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে তাকে স্কয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন গতকাল শনিবার তার মৃত্যু হয়। 


টেলি সামাদের আসল নাম আবদুস সামাদ। টেলিভিশনে অভিনয়ের সুবাদে তাকে সবাই টেলি সামাদ নামেই ডাকা শুরু করেন। টেলিভিশন থেকে চলচ্চিত্রে পা রাখায় তার এ নাম হয়। তিনি নিজেও আর এটা বদলাননি। ‘টেলি সামাদ’ হিসেবেই তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় করতেন। 

১৯৪৫ সালের ৮ জানুয়ারি মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুরে টেলি সামাদ জন্মগ্রহণ করেন। শহরের উপকণ্ঠ নয়াগাঁও এলাকার সন্তান সামাদ। সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে ওঠা বড় ভাই চারুশিল্পী আবদুল হাইকে অনুসরণ করে টেলি সামাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় ভর্তি হন।

টেলি সামাদের চাচা সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহমেদ। ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের নেশা টেলি সামাদকে চলচ্চিত্র জগতে টেনে আনে। একই সঙ্গে মঞ্চ, টিভি ও বেতারেও তার সরব উপস্থিতি ছিল। 

প্রথমে টিভি নাটকে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন বলে সহকর্মী এবং ভক্তরা তার নাম দিয়েছেন টেলি সামাদ। ১৯৭৩ সালের দিকে নজরুল ইসলামের পরিচালনায় ‘কার বৌ’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে টেলি সামাদ এ অঙ্গনে পা রাখেন। ছয় শতাধিক চলচ্চিত্রে তিনি অভিনয় করেছেন। ‘পায়ে চলার পথ’ ছায়াছবিটির মাধ্যমে তিনি সর্বাধিক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।

২০১৫ সালে তার অভিনীত সর্বশেষ ছবি মুক্তি পায় অনিমেষ আইচের ‘জিরো ডিগ্রি’। টেলি সামাদ অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- নয়ন মণি, মাটির ঘর, গোলাপী এখন ট্রেনে, দিলদার আলী, অশিক্ষিত, ফকির মজনু শাহ, মধুমিতা, মিন্টু আমার নাম, নদের চাঁদ, মাটির ঘর, দিন যায় কথা থাকে, নওজোয়ান, ভাত দে, সোহাগ, পৃথিবী, কথা দিলাম, শেষ উত্তর, হারানো মানিক, চন্দ্রলেখা, লাভ ইন সিঙ্গাপুর, মনা পাগলা, সুজন সখী, লাইলী মজনু ইত্যাদি।

টেলি সামাদের অভিনীত প্রতিটি চলচ্চিত্রই ছিল ব্যবসা সফল। কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘মনা পাগলা’ চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালকও ছিলেন তিনি। অভিনয়ের পাশাপাশি চলচ্চিত্র নির্মাণ ও চলচ্চিত্রের গানেও কণ্ঠ দিয়েছিলেন তিনি। 

৫০টির বেশি চলচ্চিত্রে তিনি গানও গেয়েছেন। দক্ষ অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে একাধিকবার তিনি পুরস্কৃত হয়েছেন। তবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার থেকে কৌতুক অভিনেতার ক্যাটাগরি বাদ দেয়া নিয়ে তার বেশ আক্ষেপ ছিল।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম