
প্রিন্ট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০২:২০ পিএম

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

আরও পড়ুন
ইসরাইল কর্তৃক ফিলিস্তিনের মানুষের ওপর যে নৃশংসতা চলছে, তা বর্ণনা করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী কর্তৃক গাজার বেসামরিক নাগরিকদের উদ্দেশ্যমূলকভাবে লক্ষ্যবস্তু করার খবরও পাওয়া যাচ্ছে। ফিলিস্তিনের শিশুদের অসহায়ত্ব বিশ্ববাসীর বিবেককে নাড়া দিচ্ছে না কেন? এমন হাজারও প্রশ্ন আমাদের। বস্তুত ফিলিস্তিনের নিরীহ মানুষের ওপর ইসরাইলের অব্যাহত বর্বরতা মানবসভ্যতার অর্জনগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এর দায় বিশ্ববাসী এড়াতে পারে না। এ জঘন্য কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বিশ্বের ক্ষমতাধরদের নীরবতা আমাদের বিস্মিত করে। এ গণহত্যার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সরব হয়েছেন বাংলাদেশের মানুষও। শনিবার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে আয়োজিত ‘মার্চ ফর গাজা’ সমাবেশে ফিলিস্তিনিদের ওপর বর্বরোচিত গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন দেশের অসংখ্য মানুষ। ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’-এর উদ্যোগে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলের বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে মানুষের ঢল মহাসমুদ্রে রূপ নেয়। এদিন ছিল না দল-মতের বিভেদ; রেষারেষি ভুলে পাশাপাশি হেঁটেছেন সবাই। কর্মসূচি ঘিরে ঐক্যের এক নতুন ইতিহাস তৈরি হয়েছে। অত্যাচারের বিরুদ্ধে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের মত প্রকাশ করেছে। এ কর্মসূচিতে অংশ নিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছেন শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষ। খণ্ড খণ্ড মিছিল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জমায়েত হয়ে জনসমুদ্র তৈরি করে।
‘মার্চ ফর গাজা’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত পদযাত্রা ও গণজমায়েত থেকে ২০ দফা ঘোষণাপত্র ও অঙ্গীকারনামা পেশ করা হয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক বিশ্ব, মুসলিম উম্মাহ ও সরকারের প্রতি চার স্তরে দাবিগুলো তুলে ধরা হয়। আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরাইলের গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করা এবং গণহত্যা বন্ধে কার্যকর সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিও জানানো হয়। ফিলিস্তিনকে ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী ভূমি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বাধ্যবাধকতা তৈরি করতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা নিয়ে ঘোষণাপত্রে বলা হয়, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সব জাতির অধিকার রক্ষা, দখলদারি ও গণহত্যা রোধের সংকল্প প্রকাশ করে। এ কারণে ইসরাইলের গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে নিশ্চিত করতে হবে। গণহত্যা বন্ধে কার্যকর ও সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার পথ উন্মুক্ত করতে হবে।
ইসরাইলের কারণে অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনিদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে চরমভাবে। ক্ষমতার মোহে নিমজ্জিত বিশ্বনেতারা নীরব থাকলেও সাধারণ মানুষ এ বর্বরতার প্রতিবাদ জানাচ্ছেন নিজ নিজ অবস্থান থেকে। ক্ষমতার মোহ নয়, মানবতার স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে গাজায় শান্তি ফেরাতে বিশ্বনেতারা কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। বিশ্ববাসীকে এসব জঘন্য ও নৃশংস কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।