Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

প্রধান উপদেষ্টার আন্তরিকতা স্পষ্ট

প্রশ্নবিদ্ধ যেন না হয়

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

প্রধান উপদেষ্টার আন্তরিকতা স্পষ্ট

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যত দ্রুত সম্ভব ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিটের এক অধিবেশনে সিএনএনের সাংবাদিক বেকি অ্যান্ডারসনের এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা ১৫টি বিভিন্ন খাতের জন্য সংস্কার কমিশন গঠন করেছি। আইনশৃঙ্খলা, পুলিশ, সংবিধান, নির্বাচনসহ অন্য সংস্কার কমিশনগুলো প্রতিবেদন তৈরি করেছে। তারা বিভিন্ন ধরনের সুপারিশ করছে। এখন আমরা যেটা করব, তা হলো ঐকমত্য গঠন। আমরা এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসছি। যেসব সুপারিশের বিষয়ে সবাই একমত পোষণ করবে, সেগুলো নিয়ে আমরা একটা ‘সনদ’ তৈরি করব। আমরা সেগুলো বাস্তবায়ন করে নির্বাচন দেব। যত দ্রুত সম্ভব আমরা নির্বাচন দেব। এটা এ বছরের ডিসেম্বরেও হতে পারে।’ এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার আন্তরিকতা স্পষ্টভাবে প্রকাশ পেয়েছে।

লক্ষ করা যাচ্ছে, বিএনপি ও সমমনা দলগুলো দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ওপর জোর দিচ্ছে। অতি প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচনের বিষয়ে তারা একমত। তারা মনে করেন, সরকার দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণার লক্ষ্যে আয়োজন করতে পারে একটি জাতীয় সংলাপের। বৃহস্পতিবারও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘যত দ্রুত জাতীয় নির্বাচন হবে, ততই রাজনীতি সহজ হবে, বাংলাদেশের মানুষ স্থিতিশীল অবস্থার মধ্যে আসবে।’ বিএনপি চাচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর স্থানীয় সরকার নির্বাচন। অন্যদিকে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় জামায়াতে ইসলামী। নির্বাচন আয়োজন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর এই পরস্পরবিরোধী অবস্থান আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলা দরকার। এক্ষেত্রে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত সব রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে দ্রুত সংলাপে বসে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা যেতে পারে। নির্বাচনের তারিখ ঘোষিত হলে রাজনৈতিক অস্থিরতা কমে আসবে বলে আমাদের বিশ্বাস। অন্যথায় সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্ব বাড়বে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ নানা অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে আনাও কঠিন হবে।

বলা বাহুল্য, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম কাজ হচ্ছে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ সৃষ্টি করে তা সম্পন্ন করা এবং যথাসম্ভব দ্রুতই তা করা। অন্যথায় রাজনৈতিক সংকটের ভিন্ন মাত্রা পাওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। আবার এটাও সত্য, তড়িঘড়ি নির্বাচন করতে গেলে আশানুরূপ ফল না-ও মিলতে পারে। সেক্ষেত্রে পুরো সংস্কার প্রক্রিয়া ও পরিকল্পনা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে তাগিদ দেখা যাচ্ছে, তা নিরসনে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনি রোডম্যাপ দেওয়াই হবে অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য প্রধান কাজ। এজন্য জাতীয় ঐক্য ও সংহতির বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে পুনরায় সব রাজনৈতিক দল এবং অভ্যুত্থানে যেসব শক্তি সংশ্লিষ্ট ছিল, তাদের সমন্বয়ে একটি সংলাপের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। এর ফলে নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ দেশের উন্নয়নের স্বার্থে যে কোনো বিষয়ে সরকারের প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা ধরে রাখতে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, এটাই প্রত্যাশা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম