Logo
Logo
×

অর্থনীতি

সিপিডির সেমিনারে গভর্নর

কয়েকটি ব্যাংক বাঁচানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৭ পিএম

কয়েকটি ব্যাংক বাঁচানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ

ফাইল ছবি

কয়েকটি ব্যাংকের অবস্থা এতটাই নাজুক যে সেগুলো বাঁচানো সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ব্যাংক খাতের অবস্থা কম-বেশি আমরা সবাই জানি। আমরা চষ্টো করছি। তবে কিছু কিছু ব্যাংক বাঁচানো সম্ভব হবে না। সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। কারণ কয়েকটা ব্যাংকের এনপিএল (খেলাপি ঋণ) ৮৭ শতাংশ হয়ে গেছে। অর্থাত্ ৮৭ ভাগ ঋণই একটা গ্রুপের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।


রাজধানীতে সেন্টারে মঙ্গলবার বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত বিকালের সেমিনারে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।


গভর্নর বলেন, এই খাতকে উদ্ধার করার জন্য আমাদের ব্যাংক রেজুলেশন অ্যাক্ট হচ্ছে। যা সরকারি বেসরকারি সব ব্যাংকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বেশ কিছু সরকারি ব্যাংকও সমস্যায় আছে। বেশ কিছু ব্যাংক আমাদের সরাসরি সুপারভিশনে আছে। কোনো ব্যাংককে আমরা কিভাবে রেজুলেশনের দিকে নিয়ে যাব তা নিয়ে সদ্ধিান্ত নেওয়া হচ্ছে। কিছুদিন পরপর আমরা বোর্ড এবং ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছি। আমরা খুব শিগগিরই একটা সদ্ধিানে্ত আসব।


আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমি একটা সুখবর দিতে চাই, ইসলামী ব্যাংক ও ইউসিবি, এই দুইটা ব্যাংক মোটামুটি গ্রাজুয়েটেড হয়ে যাবে আশা করি। তারা নতুন করে কোনো আর্থিক সাপোর্ট চাচ্ছে না। তাদের যে বিধিনিষেধগুলো আছে সেগুলো ধীরে ধীরে তুলে নেয়ার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। তারা নতুন ঋণ দিতে পারছে না, তারা যেন ছোট ছোট ঋণ দিতে পারে সেটা বিবেচনা করা হচ্ছে। তারা উন্নতির দিকে যাচ্ছে। বাকি ব্যাংকগুলোর বিষয়ে আমাদের সদ্ধিানে্ত আসতে হবে। আমরা তাদের অ্যাসেট রিভিউ করছি। এপ্রিলের মধ্যে আমরা কিছু সদ্ধিান্ত নেব।


গভর্নর ব্যাংককে সবল-দুর্বল বললে এই খাত কখনো ভালো হবে না আব্দুল আওয়াল মিন্টু : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর কোনো ব্যাংককে সবল বা দুর্বল বললে এই খাত কখনো ঘুরে দাঁড়াবে না বলে মন্তব্য করেছেন ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আব্দুল আওয়াল মিন্টু। তিনি বলেন, ব্যাংক বন্ধ করা কোনো সমাধান নয় বরং বাঁচিয়ে রাখা দরকার। একদিনে ব্যাংক ঠিক করা সম্ভব নয়।


সিপিডি আয়োজিত ২ দিনের সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে ‘অর্থনীতির পুনর্বিন্যাস বিষয়ে টাস্কফোর্সের সুপারিশ' ম্যাক্রো-ইকোনমিক পলিসি অ্যান্ড গভর্নযান্স ইন দ্য ব্যাংকিং সেক্টর সেশনে মিন্টু বলেন, বর্তমান গভর্নর আহসান মনসুর অনেক গুণি মানুষ।

কিন্তু তিনি নিজে যদি বলেন, ভালো ব্যাংক, খারাপ ব্যাংক, সবল ব্যাংক, দুর্বল ব্যাংক, ২টি ব্যাংক ঘুরে দাঁড়িয়েছে এসব কথা বলা বন্ধ না করলে কোনোদিন ব্যাংক খাত ভালো হবে না। আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেশি কথা বলে। সাবেক এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, টাস্কফোর্সে অর্থনীতিকে রাজনীতি থেকে আলাদা করে ফেলা হয়েছে। মনে হয়েছে, দেশে কোনো রাজনৈতিক অবস্থা নেই। সবাই বাণিজ্যিক ব্যাংককে দুষছেন। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকের অবদান টাস্কফোর্স অস্বীকার করেছে। ব্যাংকগুলো শর্ট টার্ম সঞ্চয়ের বিপরীতে লং টার্ম লোন দিচ্ছে। টাস্কফোর্সের রিপোর্টে এসব লেখা হয়নি। এসব কথা কাকে বলবেন, যাদের বলবেন তারা লুণ্ঠনে ব্যস্ত। টাস্কফোর্স বই দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না। কারণ সংস্কার দরকার রাজনীতিতে।

দেশের মোট সম্পদের ৫৮.৫ শতাংশের নিয়ন্ত্রণ ১০ শতাংশ মানুষের হাতে : একই অনুষ্ঠানে অর্থনীতির পুনর্বিন্যাস বিষয়ে টাস্কফোর্সের সুপারিশ' সম্মেলনে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণসংক্রান্ত টাস্কফোর্সের সদস্য ড. রুমানা হক। তিনি বলেন, দেশের মোট সম্পদের ৫৮.৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছেন জনসংখ্যার শীর্ষ ১০ শতাংশ, যেখানে নিচের সারির মানুষের হাতে রয়েছে মাত্র ৪.৮ শতাংশ সম্পদ। দেশে আয়বৈষম্য বেড়েছে। ধনীদের আয় আরও বেড়েছে। তিনি বলেন, আয়বৈষম্য কমাতে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙা করতে সরকারকে জোর দিতে হবে। তিনি বলেন, শিল্পায়ন, অবকাঠামোয় বিনিয়োগ ও প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) মূলত নগরবাসীদের সুবিধা দিয়েছে, অন্যদিকে ৮৫ শতাংশ জনশক্তি স্বল্প-মজুরির কাজে জড়িত, যাদের কর্ম-সুরক্ষা নেই। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম