ব্যাংক দখল করে লুটপাটের সুযোগ করে দেন হাসিনার আশির্বাদপুষ্ট ফজলে কবির

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:৩৬ পিএম

ফজলে কবির। ফাইল ছবি
২০১৬ সালের ২০ মার্চ থেকে ২০২২ সালের ৩ জুলাই পর্যন্ত গভর্নর ছিলেন ফজলে কবির। তার প্রতি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতোটাই সন্তুষ্ট ছিলেন যে, আইন সংশোধন করে প্রথমবারের মতো গভর্নর পদে তার মেয়াদ বাড়ানো হয়। কারণ তিনি ব্যাংক খাতে সব জালজালিয়াতি নানা কূটকৌশলে আড়াল করেছেন। পাশাপাশি লুটপাটের সুযোগ অবারিত রেখেছেন। তার আমলে জালিয়াতির দায়ে কাউকে বড় শাস্তির মুখে পড়তে হয়নি। বরং ব্যাংক দখল করে লুটপাটের সুযোগ করে দিয়েছেন।
যেসব জালজাতিয়াতির ঘটনা প্রকাশিত ও ব্যাংক দখল হয়েছে তার সবগুলোরই সূত্রপাত হয়েছিল আতিউরের আমলে। তিনি সেগুলোকে ‘ধরি মাছ, না ছুঁই পানি’ নীতি অনুসরণ করে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন।
সালমান এফ রহমানের পরামর্শে ২০১৬ সালের ঋণ খেলাপিদের আরও বড় ছাড় দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই বছরের ১৬ মে জারি করা সার্কুলারে ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে খেলাপি ঋণ ১০ বছর মেয়াদে নবায়নের সুযোগ দেওয়া হয়। এছাড়া ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে এককালীন এক্সিট সুবিধাও দেওয়া হয়। বিভিন্ন খাতের খেলাপি ঋণ নবায়নে ২০১৯ সালের ১৬ মে বিশেষ নীতিমালা জারি করা হয়। এতে এক বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ১০ বছরের জন্য নবায়নের সুযোগ দেওয়া হয়।
২০১৬ সালে প্রথমে রাতের আঁধারে ইসলামী ব্যাংক দখল হয়। এরপর থেকে একের পর এক বেসরকারি ব্যাংক দখল হতে শুরু করে। পর্যায়ক্রমে ১০টি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান দখল করা হয়। এরপর এগুলোতে শুরু হয় নজিরবিহীন লুটপাট। কেন্দ্রীয় ব্যাংক দখল জেনেও এগুলোর বৈধতা দেয়। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশেই ব্যাংক দখল হয়েছে।
ফজলে কবিরের সময়ই খেলাপি ঋণ প্রথম লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। তার যোগদানের সময় ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ৫৯ হাজার ৪১১ কোটি টাকা। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ২ হাজার ৪৫০ কোটি টাকায়। ২০২২ সালের জুনে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় এক লাখ ২৫ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা। তার সময়ে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৬৫ হাজার ৮৪৭ কোটি টাকা।