বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে ‘হিটম্যাপ’ প্রকাশ করল বিডা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৫১ পিএম
সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আর্কষণে হিটম্যাপ (রূপ রেখা) প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। এতে দেশের সম্ভাবনাময় ১৯টি খাতকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
রোববার বিডা হিটম্যাপটি প্রকাশ্যে আনে। ভবিষ্যত্
বিনিয়োগের প্রচারে কৌশলগত দিকনির্দেশনা প্রদান করবে সংস্থাটি।
এ ব্যাপারে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী
বলেন, এফডিআই হিটম্যাপ শুধু একটি পরিকল্পনা নয়। এটি আমাদের
ভবিষ্যত্ বিনিয়োগের জন্য একটি রূপ রেখা। আমরা যে কোনো রোডশো, দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ
চুক্তি বা নীতি সহায়তা এ তথ্য নির্ভর বিশ্লেষণ অনুসারে করব।
এফডিআই হিটম্যাপে ১৯টি খাতকে তিনটি প্রধান মানদণ্ডের ভিত্তিতে তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হলো বাজার প্রস্তুতি ও সম্ভাবনা, ইনপুট ফ্যাক্টরের প্রাপ্যতা (অভ্যন্তরীণ দিক), জাতীয় লক্ষ্য (এসডিজি বা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য এবং
ইএসজি বা পরিবেশ, সামাজিক দিক
ও সুশাসন)।
এক্ষেত্রে ‘এ' ক্যাটাগরি-কে বলা হচ্ছে তাত্ক্ষণিক লক্ষ্য। যা উচ্চ বাজার
প্রস্তুতি, দ্রুত প্রবৃদ্ধি এবং প্রতিযোগিতামূলকভাবে সুবিধাজনক খাত। এই ক্যাটাগরিতে
রয়েছে কোর অ্যাপারেল (পোশাক), ফার্মাসিউটিক্যালস বা ওষুধ,
কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, আইটি বা তথ্য প্রযুক্তি সক্ষম সেবা, উন্নত টেক্সটাইল এবং
নবায়নযোগ্য জ্বালানিখাত। ক্যাটাগরি ‘বি’ হলো দ্রুত প্রবেশযোগ্য খাত। এটি মধ্যম মানের বাজার
প্রস্তুতি সম্পন্ন। তবে এটিও শক্তিশালী প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা রয়েছে। এই ক্যাটাগরিতে
রয়েছে অটোমোটিভ পার্টস বা স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রাংশ, ফুটওয়্যার,
হালকা প্রকেৌশল ও চামড়া খাত। ক্যাটাগরি ‘সি’ তে রয়েছে লজিস্টিকস (আনুষঙ্গিক) এবং ইলেকট্রনিকস ও অ্যাসেম্বলি
খাত। উন্নয়ন সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এই খাতে ইনপুট চ্যালেঞ্জ সমাধানে বিশেষ চুক্তি
প্রয়োজন। এছাড়া ডি ক্যাটাগরিতে নীতি ও সক্ষমতা উন্নয়ন, দীর্ঘমেয়াদি নীতিগত সহায়তা
এবং ইকোসিস্টেম উন্নয়নের প্রয়োজনীয় খাত। এই খাতে রয়েছে
ব্যাটারি, মেডিকেল ডিভাইস, টেকনিক্যাল টেক্সটাইল, খেলনা, অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল
ইনগ্রেডিয়েন্টস (এপিআই), ও প্লাস্টিকখাত।
বিডা জানায়, এফডিআই হিটম্যাপের কার্যকারিতা নিশ্চিতের
লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ ফোরাম, রোড শো এবং নীতি উন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি একটি উপদষ্টো কাউন্সিল গঠন করে নীতিগত ঘাটতি পূরণ এবং ইকোসিস্টেম
শক্তিশালীকরণের কাজও করবে তারা। বিডার নির্বাহী বিডার ব্যবসা উন্নয়ন বিভাগের প্রধান
নাহিয়ান রহমান রোচি বলেন, বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তি থাকা সত্ত্বেও, এফডিআই
বর্তমানে জিডিপির মাত্র শূন্য দশমিক ৫ শতাংশে অবস্থান করছে। কিন্তু বৈশ্বিক গড় এফডিআই
৩ থেকে ৪ শতাংশ। হিটম্যাপ এই প্রবণতা পালটে দিতে পারে।
তিনি বলেন, খাতভিত্তিক অগ্রাধিকার প্রদান, বিনিয়োগকারী
বাজার শনাক্তকরণ এবং জাতীয় লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কেৌশল তৈরিতে সাহায্য করবে এই
উদ্যোগ। এই হিটম্যাপ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে আন্তর্জাতিক এবং দেশীয় কয়েকটি
প্রতিষ্ঠান। এগুলো হলো স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড
ব্যাংক, এইচএসবিসি, প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপারস, আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং, বোস্টন কনসালটিং
গ্রুপ, ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, লাইটক্যাসল পার্টনার্স,
ইনস্পাইরা অ্যাডভাইজরি অ্যান্ড কনসালটিং লিমিটেড, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের চেম্বার অব
কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, জাপান আন্তর্জাতিক
সহযোগিতা সংস্থা, জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন এবং কোরিয়া ট্রেড-ইনভেস্টমেন্ট
প্রমোশন এজেন্সি। হিটম্যাপটি প্রতি বছর পর্যালোচনা ও হালনাগাদ করা হবে। এর লক্ষ্য
বাজারের পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ থাকা।