বিশ দিনে রিজার্ভ বেড়েছে ১২২ কোটি ডলার

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫৯ পিএম

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবার বাড়তে শুরু করেছে। গ্রস রিজার্ভ বেড়ে ২৫ বিলিয়ন এবং নিট রিজার্ভ বেড়ে ২০ বিলিয়ন ডলার ছুঁইছুঁই করছে।
সাম্প্রতিক সময়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়ার ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে। ডলারের প্রবাহ বাড়ায় আগস্ট থেকে বৈদেশিক ঋণ শোধ বাড়ানো হয়েছে। এতে ঋণের স্থিতি কমেছে। আমদানিও বাড়তে শুরু করেছে। ফলে আমদানি বাণিজ্যে স্থবিরতা কাটতে শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ২০ দিনে দেশের নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে ১২২ কোটি ডলার এবং একই সময়ে গ্রস রিজার্ভ বেড়েছে ৫০ কোটি ডলার। রিজার্ভ থেকে অর্থ নিয়ে বিভিন্ন তহবিলে বিনিয়োগ করা ডলার তুলে আনায় গ্রস রিজার্ভ কমছে। ওইসব অর্থ নিট রিজার্ভে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ফলে নিট রিজার্ভ বেশি বাড়ছে।
২৮ নভেম্বর দিনের শুরুতে গ্রস রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৪৪৬ কোটি ডলার। বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৯৬ কোটি ডলার বা ২৫ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। একই সময়ের ব্যবধানে নিট রিজার্ভ ১ হাজার ৮৭৪ কোটি ডলার থেকে বেড়ে ১ হাজার ৯৯৬ কোটি ডলার বা ২০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি দাঁড়িয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা করছে, চলতি মাসের মধ্যেই গ্রস রিজার্ভ ২৫ বিলিয়ন এবং নিট রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। কারণ, রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়তে শুরু করেছে। রেমিট্যান্সের ডলারের দাম বাড়ায় প্রবাসীরা আরও রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। এছাড়া রপ্তানি আয়ও বাড়ছে।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বরে রেমিট্যান্স বেড়েছে প্রায় সাড়ে ২৬ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে বেড়েছিল দশমিক ১৭ শতাংশ। গত জুলাই-অক্টোবরে রপ্তানি আয় বেড়েছে সাড়ে ৮ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে কমেছিল।
বাজারে ডলারের প্রবাহ বাড়ায় আমদানি ব্যয়ও বাড়তে শুরু করেছে। গত অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবরে আমদানি ব্যয় কমেছিল। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বেড়েছে ৩ দশমিক ১১ শতাংশ। ব্যাংকগুলোয় সম্প্রতি এলসি খোলার প্রবণতাও বেড়েছে।
গত নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রিজার্ভ থেকে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন বা আকুর দেনা বাবদ ১৫০ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ ২ হাজার কোটি ডলারের বেশি থেকে ১ হাজার ৮৪৬ কোটি ডলারে নেমে আসে। ওই সময়ে অন্য আরও কিছু দেনা শোধ করা হয়।
জানুয়ারিতে আবার নভেম্বর-ডিসেম্বর-এ দুই মাসের আকুর দেনা শোধ করতে হবে। তখন রিজার্ভ আবার কমে যাবে।
তবে আওয়ামী লীগ সরকারের চেয়ে এখনকার দেনা পরিশোধের পার্থক্য হচ্ছে-আগে দেনা শোধ করার পর রিজার্ভ কমলে আগের অবস্থানে আর যেত না। এখন দায় শোধের পর রিজার্ভ আবার বেড়ে আগের অবস্থানে চলে যাচ্ছে।
এর কারণ হিসাবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগে অনবরত দেশ থেকে টাকা পাচার হতো। এখন টাকা পাচার কমেছে। ফলে রিজার্ভ বাড়ছে।