বাজারে ভারতীয় আলু দেশি বলে বিক্রি, দামও বেশি
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৫ পিএম
রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে আলুর দাম আরও বেড়েছে। বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি পুরাতন আলুর দাম ৮০ টাকা, যা আগে ছিল ৭০। আর খুচরা বাজারে নতুন আলু দাম ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। এদিকে বাজারে ভারতীয় আলু দেশি বলে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে স্থিতিশীল আছে ডিম ও মুরগির দাম।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। আলুর দাম এত বৃদ্ধির কারণ খুঁজছেন ক্রেতারা। বিক্রেতাদের জানান, বেশি দামে কিনে এনে তো, কম দামে বিক্রি করতে পারব না। পাইকারি বাজারে আলুর দাম বাড়লে, খুচরা বাজারেও বাড়বে। না হয় আলু বিক্রিই বন্ধ করতে হবে। কিন্তু পাইকারি বাজারে কেন বেশি দাম- এ বিষয় সম্পের্কে জানা নেই খুচরাবিক্রেতাদের।
রামপুরা বাজারের বিক্রেতারা জানান, গত শুক্রবারও বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি আলু ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা মঙ্গল-বুধবার এসে ৫ টাকা এবং গতকাল আরও ৫ টাকা বেড়েছে। ফলে সপ্তাহের মধ্যে আলুর কেজি ১০ টাকা বেড়েছে।
অন্যদিকে পাইকারি বিক্রেতারা জানান, এখন পাইকারিতেই প্রতি কেজি আলু ৬৮ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগে ৫৮ থেকে ৬৪ টাকা ছিল।
কারওয়ান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, আলুর মৌসুম এখন একবারে শেষদিকে। প্রতি বছর এ সময় দাম বাড়ে। তবে এ বছর শুরু থেকে আলু চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। এরপর এখন বেড়ে আরও অস্থিতিশীল হয়েছে।
আতিক হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, নতুন আলু না আসা পর্যন্ত দাম কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এরই মধ্যে ভারত থেকে আলু আসছে, তারপরও আলুর সংকট আছে। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন হিমাগারগুলোতে আলুর দাম কেজিপ্রতি ৭ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে।
এদিকে ভারত থেকে আমদানি করা আলু বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। ভারতীয় আলু বেশিরভাগ দোকানে দেশি নতুন আলু বলে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
শীতকালীন সবজি বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিন সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি শিম ২৩০-২৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। আজ ১০০-১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিটি ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৫০-৬০ টাকা, প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৪০-১৬০ টাকা, মুলা ৫০-৬০ টাকা, শালগম ১০০ টাকা, বেগুন ৮০-১২০ টাকা, পেঁপে ৪০-৫০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৭০-৮০ টাকা ও লাউ ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। টমেটো-গাজর বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা দরে। অন্যান্য সবজি ও শাক আগের দামে স্থিতিশীল রয়েছে।
বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে খোলা সয়াবিন ও পাম তেল। খুচরা পর্যায়ে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৭০ থেকে ১৭২ টাকা ও খোলা পাম তেল ১৬২-১৬৩ টাকায় বিক্রি হয়। এক মাসের ব্যবধানে খোলা সয়াবিনের দাম লিটারে ১৬-১৭ টাকা ও খোলা পাম তেলের দাম ১৩ টাকা বেড়েছে।
বাজারে মসলা পণ্যের মধ্যে পেঁয়াজের দাম বেশি। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায় ও আমদানি করা পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আদা, রসুন ও আলুর দাম আগের মতোই রয়েছে।
তবে বাজারে স্থিতিশীল আছে মুরগি ও ডিমের দাম। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা ও সোনালি মুরগি কেজি ৩০০ থেকে ৩১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ফার্মের মুরগির এক ডজন ডিমের দাম ১৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে বড় বাজারগুলোতে এর চেয়ে ৫ টাকা কমে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
বাজারে সব ধরনের মাছ বাড়তি দামেই আটকে আছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি চাষের কই বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায়, পাঙাশ মাছ প্রতি কেজি ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, শিং ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, কাঁতল ৩২০ থেকে ৩৮০ টাকা, গলসা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, ট্যাংরা প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া রুই প্রতি কেজি ৩৬০ টাকা, রুপচাঁদা ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, বোয়াল প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।