স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা দিয়ে তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সাধারণ সদস্যরা। একই সঙ্গে স্বচ্ছ ভোটার তালিকা প্রণয়নের মাধ্যমে ভোটগ্রহণসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছে তারা।
শনিবার কাওরান বাজারে হোটেল সোনারগাঁয়ে সাধারণ সদস্যদের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদে সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে ২০-২৫ জন গার্মেন্টস মালিক উপস্থিত ছিলেন। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অনন্ত গার্মেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইনামুল হক খান বাবলু, মাইশা ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল হক ভূঁইয়া প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ৯ মার্চ অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি ও ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ক্ষমতায় আসে, যা সাধারণ সদস্যদের মনের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে। নির্বাচনে এসএম মান্নান কচি তার দলীয় ক্যাডার বাহিনী দিয়ে সংগঠনের ক্ষমতা দখল করেন। এই কাজে সাবেক সংসদ-সদস্য সালাম মুর্শেদী, শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, খসরু চৌধুরী, আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম নিজ বাহিনীসহ সরাসরি অংশ নেয়। সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিও এর সঙ্গে জড়িত।
এতে আরও বলা হয়, গত ৪ আগস্ট মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরে বিজিএমইএ’র পলাতক সভাপতি এসএম মান্নান কচি ও তার সহযোগীরা ছাত্র-জনতার ওপর ব্যাপক হামলা করে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দমন-পীড়ন ও হত্যায় উত্তরা ও মিরপুরে খুনি সভাপতির নেতৃত্বে তার ক্যাডার বাহিনী মূল ভ‚মিকা পালন করে। ছাত্র আন্দোলনে কয়েকশ ছাত্র-জনতা নিহত হওয়ার পরও বর্তমান বোর্ড ও সভাপতি কোনো শোকবার্তা দেয়নি। ঐতিহাসিক ছাত্র আন্দোলন ও গণজোয়ারে বিজিএমইএ সভাপতি ও তার বোর্ড সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী ভ‚মিকা পালন করায় তারা দায়িত্ব পালনের নৈতিক অধিকার হারিয়ে ফেলেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ৭ দফা দাবি জানানো হয়েছে। এগুলো হচ্ছে-সভাপতি হিসাবে খন্দকার রফিকুল ইসলামের নিয়োগ বাতিল ও পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া, সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে দলীয় প্রভাবমুক্ত ২০ সদস্যের একটি অন্তর্বর্তী পরিচালনা বোর্ড গঠন, স্বচ্ছ ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে দ্রুত সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন, বিজিএমইএ’র অতীতের সব দুর্নীতির স্বচ্ছ ও সঠিক তদন্তের জন্য একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা।
এছাড়াও রয়েছে-বিইউএফটির বর্তমান চেয়ারম্যান শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনসহ বর্তমান বোর্ড ভেঙে নতুন বোর্ড গঠন, বিইউএফটিতে নিহত সেলিম তালুকদারসহ হতাহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং বিজিএমইএ বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরকে ‘শহীদ সেলিম চত্বর’ ঘোষণা করা।