ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ বাতিল, আবদুল আউয়াল মিন্টুসহ সাত নতুন পরিচালক
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৪, ১০:০৮ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
আমানতকারীদের স্বার্থের পরিপন্থি কার্যক্রম পরিচালনার দায়ে বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে ব্যাংকটি নতুন পরিচালনা পরিষদ গঠন করে দিয়েছে। ব্যাংকের সাবেক উদ্যোক্তা পরিচালক ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই-এর সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টুর নেতৃত্বে সাত সদস্যের নতুন পর্ষদ গঠন করে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ন্যাশনাল ব্যাংকে পাঠানো পৃথক দুটি চিঠিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে নতুন সরকার গঠনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব নেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম কোনো ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করা হলো।
এর আগে ব্যাংকটি সিকদার গ্রুপের হাত থেকে মালিকানা বদল হয়ে চট্টগ্রামের এস আলম গ্রুপের হাতে চলে যায়। তৎকালীন গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার উদ্যোগী হয়ে ব্যাংকটির মালিকানা এস আলম গ্রুপের হাতে তুলে দেন। এস আলম গ্রুপসহ আগের নিয়ন্ত্রকরা ব্যাংকটিতে ব্যাপক লুটপাট চালায়। ফলে ব্যাংকটি দুর্বল হয়ে পড়ে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ সিদ্ধান্তের ফলে এটি এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হলো। আমানতকারীদের স্বার্থবিরোধী কার্যক্রম করায় আরও কয়েকটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করা হবে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাজ করছে।
নতুনভাবে পর্ষদ গঠনের পর ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পেয়েছেন ব্যাংকটির শুরুর দিকের উদ্যোক্তা ও সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, সাবেক পরিচালক জাকারিয়া তাহের ও মোয়াজ্জেম হোসেন। পাশাপাশি ব্যাংকটিতে চারজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তারা হলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক জুলকার নায়েন, সীমান্ত ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুখলেসুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মেলিতা মেহজাবিন ও হিসাববিদ আব্দুস সাত্তার সরকার। এই সাতজনের মধ্য থেকে ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান নিযুক্ত হবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের স্বাক্ষর করা ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেওয়া সংক্রান্ত আদেশ এবং নতুন পর্ষদ পুনর্গঠনের চিঠি ব্যাংকের এমডির কাছে পাঠানো হয়েছে। এটি পর্ষদকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে নতুন পর্ষদ গঠনের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলেছে। ওই আদেশে বলা হয়েছে, ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের নীতিনির্ধারণী দুর্বলতার কারণে ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার অবনতি, ব্যাংকিং সুশাসন ও শৃঙ্খলা বিঘ্ন করার মাধ্যমে ব্যাংক ও আমানতকারীদের স্বার্থের পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে পর্ষদ সম্পৃক্ত রয়েছে। এজন্য ব্যাংক কোম্পানি আইন ৪৭(১) ও ৪৮(১) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আমানতকারীদের স্বার্থরক্ষা ও জনস্বার্থে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের বিদ্যমান পরিচালনা পর্ষদ বাতিলের আদেশ দেওয়া হলো।
সূত্র জানায়, আজই নতুন পর্ষদ গঠন করা হবে। আজ তারা পর্ষদের বৈঠক করবে। এ বিষয়ে আবদুল আউয়াল মিন্টু সাংবাদিকদের বলেন, ব্যাংকটিতে লুটপাট হয়েছে। ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। এখন এটিকে পুনর্গঠন করা হবে। সেই চেষ্টাই তারা করবেন।