অর্থনীতি পুনর্গঠনে কী করছে ইউনূস সরকার?
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০২৪, ১২:৫৩ পিএম
প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত
শেখ হাসিনা সরকার পতনের আগেই অনেকটা ধ্বংস করেছে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। হাসিনার পতনের পরই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নেন নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস। উপদেষ্টা হওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ড. আহসান এইচ মনসুরকে।
দায়িত্ব গ্রহণের পর ডয়চে ভেলের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, লুটপাট, অর্থপাচার বা দুর্নীতি নিয়ে আগামী ১০০ দিনের মধ্যে ব্যাংকিং খাতের একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
তার মতে, প্রত্যেকটা মন্ত্রণালয় যদি এই কাজটি করে তাহলে সবগুলো একসঙ্গে নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে একটা শ্বেতপত্রটা প্রকাশ করা যেতে পারে। অর্থনীতিবিদরাও কয়েকদিন ধরে বলছেন, আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা ফেরাতে ব্যাংকিং খাতের লুটপাটের একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা জরুরি।
অর্থনৈতিক সেক্টরের লুটপাট, অর্থপাচার নিয়ে অনেকেই একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করার কথা বলছেন। আপনাদের এমন কোন পরিকল্পনা আছে কিনা? জানতে চাইলে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, এটা অবশ্যই প্রয়োজন। আমি নিজেও সেটা মনে করি। মন্ত্রণালয় থেকে যদি নাও হয় তাহলেও আমি নিজে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে একটা রোডম্যাপ দিয়ে দেবো। আমার জায়গা থেকে রোডম্যাপটা অর্থাৎ শ্বেতপত্রটা দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। সবাইকে চেষ্টা করতে হবে, ১০০ দিনের মধ্যে যেন এটা পারা যায়। ১০০ দিনের মধ্যে একটা আউটলাইন হবে, এর বেশি হবে না। এরপর এই আউটলাইনটাকে বাস্তবায়নের রোডম্যাপে নিয়ে যেতে হবে। সেটা করতেও কিন্তু ৬ মাস থেকে ৯ মাস লাগবে। আমরা আশা করছি, সবার সহযোগিতা নিয়ে অর্থনীতির সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।
অর্থনীতি পুনর্গঠনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথমেই কোন দিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন? জানতে চাইলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, তাদের প্রথম কর্তব্য হল অর্থনীতির যে পরিস্থিতি সেটার একটা সম্যক উপলব্ধি লাভ করা। সাম্প্রতিককালে যে অর্থনীতির জটিল টানাপড়েন চলছে সেটা বোঝা খুব গুরুত্বপূর্ণ।এটার জন্য আমি একটা শ্বেতপত্র তৈরি করতে বলেছি। সেটা করলে এই পরিস্থিতি সম্পর্কে স্বচ্ছতা আসবে। সংকটের গভীরতা সম্পর্কে ধারণা আসবে এবং পরবর্তীতে পদক্ষেপগুলো সম্পর্কেও এক ধরনের পরামর্শ পাওয়া যেতে পারে। এটা একটা বড় কাজ বলে আমি মনে করি। যেহেতু সাম্প্রতিককালে তথ্য উপাত্ত নিয়ে অনেক সংশয় ছিল, সেহেতু তথ্য উপাত্তের সঠিকতা যাচাই করে পরিস্থিতির একটা বেঞ্চমার্ক যেটাকে আমরা বলি ভিত্তি পরিস্থিতি বোঝা যাবে।
অন্তর্বর্তী সরকার এমন এক সময়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে যখন দেশের অর্থনীতি বিশাল সংকটে জর্জরিত, যার মধ্যে রয়েছে মুদ্রাস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস, রপ্তানি হ্রাস এবং প্রবৃদ্ধি মন্থর, অপর্যাপ্ত রাজস্ব সংগ্রহ, ডলার সংকট এবং স্থবির বেসরকারি বিনিয়োগ যা কয়েক বছর ধরে তীব্রতর হয়েছে। এ ছাড়া হত্যা, ধ্বংস, নৈরাজ্য, চুরি, ছিনতাইয়ে স্তব্ধ গোটা দেশ।
বিশেষজ্ঞেরা বলেছেন, নবনিযুক্ত উপদেষ্টাদের অবিলম্বে জননিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, অর্থনীতি পুনরুদ্ধার এবং রাজনৈতিক ও নির্বাচনী ব্যবস্থায় সংস্কার প্রবর্তনের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে।
অর্থনৈতিক সেক্টর সংস্কারে আপনাদের ভাবনা কী? জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমাদের তিনটা জায়গাতে কাজ করতে হবে। একটা হল রাজনৈতিক অঙ্গন। রাজনৈতিক সংস্কার। রাজনৈতিক সংস্কার না হলে অর্থনৈতিক সংস্কার টেকসই হবে না। এটাকে গ্রাস করে ফেলবে। দ্বিতীয়ত হচ্ছে, খুব দ্রুত সেবা প্রদানের জায়গাগুলো সচল করতে হবে। প্রতিটি মন্ত্রণালয় থেকে নির্দিষ্ট কিছু সেবা দেওয়া হয়। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ট্যাক্স বা ভূমিই হোক সব জায়গাতেই উন্নতি করতে হবে। জনগণ যাতে সেবা পায়। ঘুষ বন্ধ করতে হবে। প্রতি পদে যে ঘুষ দিতে হতো, ঘুষ ছাড়া কোন কাজ হতো না সেই জায়গায় দৃষ্টান্তমূলক কিছু করতে হবে। যাতে জনগণ বুঝতে পারে যে, সত্যি একটা পরিবর্তন হয়েছে। মাসখানেকের মধ্যেই এই কাজটা করা সম্ভব। তৃতীয়ত হল, আমাদের অর্থনৈতিক সংস্কার। এই কাজে আমরা যুক্ত থাকব। এখানে অর্থমন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংককে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এখানে যারা আছেন, আমরা সবাই সবাইকে চিনি, জানি। ফলে আমরা একসঙ্গে এই কাজগুলো করব। আমাদের মূল্যস্ফীতি কমাতে হবে। এটা করতে হবে খুব দ্রুততার সঙ্গে। রিজার্ভকে দাঁড় করাতে হবে। এমন অনেকগুলো কাজ আছে। অর্থনীতির এই সংস্কারের মধ্যেই ব্যাংকের সংস্কারের ইস্যুটি চলে আসবে।
ব্যাংকিং সেক্টর প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, ব্যাংকিং সেক্টরকে পুরোপুরি ঢেলে সাজাতে হবে। ব্যাংকিং টাস্কফোর্স বা ব্যাংকিং কমিশন করতে হবে। ৫-৬ জনের একটা টিম নিয়ে পুরোসময় এখানে কাজ করতে হবে মাসের পর মাস। প্রত্যেকটা ব্যাংক, বিশেষ করে দুর্বল ব্যাংকগুলোর অবস্থা পর্যালোচনা করতে হবে। তারা আসলে কতটা দুর্বল? কীভাবে তাদের উদ্ধার করা যায়? আসলে প্রত্যেকটা ব্যাংক ধরে ধরে পুনর্গঠন করতে হবে। এখানে আন্তর্জাতিক সহায়তাও আমরা নেবো। বিশ্বব্যাংক বা আইএমএফ থেকে আমরা পরামর্শ নেবো। তাদের অভিজ্ঞতা আমাদের কাজে লাগাতে হবে। আর্থিক সাপোর্টও হয়ত লাগবে, সেটা প্রয়োজনে আমরা চাইব। করতে পারব আশা করি। ট্যাক্স বিশাল একটা এলাকা। এটার সংস্কার করতে হবে। এনবিআর মূল কাজটা করবে। কিন্তু এখানে তিনটা টাস্কফোর্সকে কাজ করতে দিতে হবে। অভ্যন্তরীণ ও বাইরের বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা নিয়ে কাজটা করতে হবে। এটা করতে কয়েক বছর লাগবে।
বাংলাদেশের দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই উন্নয়নে আগের মতোই পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছে উন্নয়ন সহযোগী এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। গত বুধবার সন্ধ্যায় বিবৃতি দিয়ে ব্যাংকটি বলেছে, এই সঙ্গে বোঝাপড়ার ভিত্তিতে তাদের চলমান প্রকল্পের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা হবে। সামনের দিনে আরো অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থিতিস্থাপক ও বাংলাদেশের জনগণের জন্য টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে সহায়তা দিয়ে যাবে। তারা এই সরকার এবং বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে এ গুরুত্বপূর্ণ কাজটি চালিয়ে যাওয়ার জন্য উন্মুখ। বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারত্ব চলমান রাখার জন্য ‘সম্পূর্ণরূপে' প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার বিষয়টি বর্ণনা করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত টেকসই উন্নয়নকে সবসময়ই সমর্থন করে এডিবি।
অর্থনৈতিক সেক্টর পুনর্গঠনে এই মুহূর্তে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন? জানতে চাইলে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, তিনটি স্তরে কর্মসূচি নেওয়ার প্রয়োজন আছে। প্রথমত, সাম্প্রতিক আন্দোলনের যে ধাক্কা অর্থনীতিতে এসেছে, সেটাকে আমি শক বলি। সেই শক কাটিয়ে উঠতে হবে। সেটা আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি থেকে শুরু করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান চালু করা, বন্দরকে সচল করাসহ সাপ্লাই চেনকে ঠিক করতে হবে। দ্বিতীয়ত হল, বিগত দুই তিন বছরে মূল্যস্ফীতিসহ অন্যান্য কিছু সমস্যা অর্থনীতিতে দেখা দিয়েছে। এটাকে স্থিতিশীল করতে হবে। বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ এবং বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ, রেমিটেন্সসহ বিভিন্ন দায় দেনার বিষয় রয়েছে। আর তৃতীয়ত, অনেক সংস্কার ঝুলে আছে সেগুলো করা দরকার। ব্যাংকিং খাত আর জ্বালানি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে আগামী দিনের সংস্কারগুলো দেখতে হবে। এই সবকিছু নির্ভর করবে এই সরকার কতদিনের জন্য এসেছে সেটা যখন সঠিকভাবে বোঝা যাবে তখন সংস্কারগুলোকে আরও বিস্তৃতভাবে বলা যাবে।
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মুদ্রাস্ফীতি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আকাশচুম্বী দামের দ্বিগুণ ধাক্কার মুখোমুখি হয়েছিল, যা নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনকে একেবারে দুর্বিষহ করে তুলেছিল। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে মূল্যস্ফীতি চলছে, মানুষ তাদের আয়ের চেয়ে বেশি ব্যয় করতে বাধ্য হচ্ছে। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে সামগ্রিক মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ। চলতি বছরের জুন শেষে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৪২ শতাংশ।
অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ জুলাই মাসে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন কমেছে এবং আইএমএফ পদ্ধতির হিসাব অনুযায়ী ৩১ জুলাই ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা এক মাস আগে ২১ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন থেকে কম ছিল। একই সময়ে গ্রস রিজার্ভ (যার মধ্যে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল এবং রিজার্ভ থেকে ঋণ) দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৯২ বিলিয়ন। উচ্চ আমদানি পরিশোধ এবং প্রত্যাশার চেয়ে কম রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহের কারণে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কমছে। গত নয় মাসের তুলনায় চলতি বছরের জুলাইয়ে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে।
ভঙ্গুর এই অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া ঠিক হবে? জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) গবেষণা পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, আমার মনে হয়, দুটো কাজ খুব জরুরি। একটা হল মূল্যস্ফীতি ও আরেকটা হল সামষ্টিক আর্থনীতির যে ভারসাম্যের অভাব দেখেছি, সেটা। এর পাশাপাশি যেটা মাথায় রাখতে হবে, মূল লক্ষ্য যেটা হওয়া উচিত সেটা হল সার্বিকভাবে ভাবে কয়েকটি অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান যেগুলোর মধ্যে সুশাসনের বড় ধরনের অভাব আছে, সেই জায়গাগুলোতে প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসনের মধ্যে নিয়ে আসা। সেগুলোর মধ্যে আর্থিক খাত, রাজস্ব খাত এবং সরকারের ব্যয় ব্যবস্থাপনা আছে। অর্থনীতির ক্ষেত্রে এগুলোই মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত বলে আমার মনে হয়।
মূল্যস্ফীতির বিষয়ে ড. বিদিশা বলেন, বর্তমানে মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরতে হবে। রিজার্ভের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক জায়গায় ফিরিয়ে আনা। স্বল্প মেয়াদে মূল্যস্ফীতি ও সামষ্টিক অর্থনীতির ভারসাম্য ঠিক করতে হবে। পাশাপাশি সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। খুব দ্রুতই মূল্যস্ফীতি কয়েক শতাংশ নেমে যাবে বা খুব দ্রুতই রিজার্ভে বড় ধরনের উল্লম্ফন ঘটবে এমনটা আশা করা ঠিক হবে না। কিছু সময় লাগবে। যেহেতু সুদক্ষ অর্থনীতিবিদরা দায়িত্ব নিয়েছেন তারা সঠিক পথে হেঁটে কিছু সময় লাগলেও মোটামুটি একটা আশাব্যঞ্জক অবস্থায় পৌঁছে নিয়ে যাবেন। পাশাপাশি শ্বেতপত্র যদি প্রকাশ করা যায় সেটা চমৎকার হবে। এর পাশাপাশি আর্থিক খাতের বিষয় নিয়ে একটি ব্যাংকিং কমিশন করা কথা বলা হচ্ছে সেটাও একটা অনেকদিনের দাবি। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে মূল্য কমিশনও করা যেতে পারে। যারা বাজার ব্যবস্থাপনা দেখবে এবং বাজারকে সহনীয় একটা জায়গায় নিয়ে আসার জন্য কাজ করবেন।