আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা
হুরের প্যাভিলিয়নের ৫০ থেকে ৬০% ছাড়ে মহিলা ক্রেতারা খুশি বেশি
এ হাই মিলন, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:২৬ পিএম
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা চলছে ২য় সপ্তাহ ধরে। চলবে আরও ২ সপ্তাহ। ১৯৯৫ সাল থেকে চলে আসা মেলার ২৮তম আসরের তৃতীয় আসর চলছে পূর্বাচলে। তবে মঙ্গলবার মেলা ঘুরে দেখা গেছে সরকারি ছুটির দিন না হওয়ায় লোকসমাগম কম। তাই ক্রেতা টানতে ব্যবসায়ীরা ছাড় দিচ্ছেন।
মেলায় হুরের প্যাভিলিয়নে ছাড় দেওয়া হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০%। হুরের হেড অব সেলস রমজান মজুমদার বলেন, সাধারণত আমরা মেহেরের এ ড্রেসটি পাঁচ হাজার টাকা বিক্রি করে থাকি। মেলা উপলক্ষ্যে ছাড় দিয়ে এটা তিন হাজার টাকায় বিক্রি করছি।
অন্যদিকে মহিলাদের আনস্টিচ যে ড্রেসগুলো সাধারণত চার হাজার টাকায় বিক্রি করি, ছাড়ে সেখানে দুই হাজার টাকায় বিক্রি করছি। ছাড়ে হুরের প্যাভিলিয়নে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন মহিলারা। আশা করি ৫০% ছাড়ে আগামী দিনগুলোতে বেশ ভালো বিক্রি হবে।
এভাবে মূল্যছাড়ের মাধ্যমে নিজেদের পরিচিতি বাড়ানোরও চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা। কেউ ৫০ শতাংশ ছাড় দেওয়া শুরু করেছেন। মেলায় একটি বিক্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক রাজিব হোসেন বলেন, বাণিজ্যমেলায় ছাড় দেওয়ার মাধ্যমে আমরা পণ্যের পরিচিতি বাড়াচ্ছি। যেটা আমাদের সারা বছরের ব্যবসায় বেশ সাহায্য করে।
মেলার মূল ভবনের ছাদের নিচে হলরুম এ-তে ইলেকট্রনিক ও আসবাবের বড় ব্র্যান্ডগুলো স্টল নিয়েছে। এখানে আছে যমুনা, ওয়ালটন, মিনিস্টার ও ভিসতার মতো প্রতিষ্ঠান। এছাড়া রয়েছে হাতিল, রিগ্যাল, নাভানা, আখতার, নাদিয়া, হাতিম, ব্রাদার্স, ডেল্টা, জেএমজি ফার্নিচারের স্টল। এসব ব্র্যান্ড বিভিন্ন রকম ছাড় দিচ্ছে। এখানে ইলেকট্রনিক ব্র্যান্ডের মধ্যে যমুনা মিলিয়ন ৫০ থেকে ৬০% পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে। এদিকে মিনিস্টার তাদের কিছু পণ্যে ৫৩ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে। আর ভিসতা ইলেকট্রনিক ৩৫ শতাংশ ছাড়ে বিক্রি করছে ৮৬ ইঞ্চি টেলিভিশন। অন্যান্য টেলিভিশনেও ন্যূনতম ২০ শতাংশ ছাড়ের ব্যবস্থা রেখেছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
তবে এ হলে থাকা কয়েকটি খাবারের দোকান কোনো ছাড় দেয়নি। খাবারের স্টল পরিচালক আলী আকবর বলেন, এবার খাবারের দোকান বেশি হওয়ায় আমাদের ব্যবসা অন্যান্যবারের তুলনায় কমেছে। ব্যবসা কম তাই ছাড় দিতে পারছি না।
কামরাঙ্গীরচর থেকে আসা চাকরিজীবী আব্দুর রহমান বলেন, বাণিজ্যমেলায় এলে ছাড়ে পণ্য কেনা যায়। এজন্য বিশেষ আগ্রহ নিয়েই প্রতি বছর মেলায় আসি। এবার ছাড় দিচ্ছে কিন্তু তবু দাম বেশি মনে হচ্ছে।
মেলার মূল অংশের ডান পাশে কয়েকটি পোশাক ব্র্যান্ডের স্টল রয়েছে। এসব স্টলেও সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ছাড়ে পণ্য বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে একটি ফ্যাশন হাউজ মেলা উপলক্ষ্যে অর্ধেক মূল্যছাড়ে তাদের পণ্য বিক্রি করছে। ক্রেতাদের ভালো সাড়া পেতেই এমনটা করছে বলে জানিয়েছে প্রভিন্স নামের এ প্রতিষ্ঠানটি।
মেলার সামনের অংশে বাসনকোসনসহ ক্রোকারিজ, বস্ত্রসামগ্রী ও খাবারের কিছু স্টল রয়েছে। এর মধ্যে গাজী গ্রুপের স্টলে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়ে রাইস কুকার, গ্যাসের চুলাসহ নানা গৃহস্থালি সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে। আর এসকেবি কুকওয়ারের স্টলে চলছে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়।
মেলায় বস্ত্র খাতের স্টলগুলোতে ১০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত ছাড়ে বিভিন্ন পণ্য পাওয়া যাচ্ছে। তবে দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় ভিন্ন কথা। তাদের দাবি, এসব স্টল সাধারণ বাজারে যা দাম আছে পণ্যের গায়ে তার চেয়ে বেশি লিখে তা থেকে মনমতো ছাড় লিখে রেখেছে।
মেলায় ঘুরতে আসা দাউদকান্দির গৃহিণী সালমা বেগম বলেন, মেলার সামনে উচ্চশব্দে গান বাজছে। আবার নানা বিজ্ঞাপনের উচ্চশব্দে অতিষ্ঠ হচ্ছি। শুধু তাই নয়, প্রায় প্রতিটি স্টলের সামনেই গুলিস্তানের ফুটপাতের মতো হাত টেনে ক্রেতা আকর্ষণের চেষ্টা করছে। যা বিব্রতকর।