মন্দায়ও ভালো লভ্যাংশ দিয়েছে মিউচুয়াল ফান্ড
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১০:০২ পিএম
মিউচুয়াল ফান্ডের আয়ের প্রধান উৎস শেয়ারবাজার। কিন্তু সেখানেই মন্দা চলছে। তালিকাভুক্ত কোম্পানির লভ্যাংশও কমেছে। এত প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও মিউচুয়াল ফান্ড খাত সর্বশেষ অর্থবছরে ভালো লভ্যাংশ দিয়েছে।
‘বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ’ উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যান্ড মিউচুয়াল ফান্ডস (এএএমসিএমএফ) আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. মিজানুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন আরেক কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রেস গ্রুপের চেয়ারম্যান ও আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ড. হাসান ইমাম। বক্তব্য রাখেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের কো-অর্ডিনেটর অ্যান্ড ইকোনোমিস্ট জুবায়ের হোসেন।
ড. মিজানুর রহমান বলেন, মিউচুয়াল ফান্ডখাতের উন্নয়নে কমিশন কাজ করছে। তবে বর্তমানে শেয়ারবাজারে এই খাতের অংশগ্রহণ খুবই কম। এর আকার ১৬ হাজার কোটি টাকার মতো। কিন্তু এটা হওয়া উচিত ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। তবে আগামী ১০ বছরে এ খাত অনেক এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, মিউচুয়াল ফান্ড খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে কমিশন কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া হিসাব মান পরিপালনে কঠোর কমিশন। এ খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে ব্যাংকের এফডিআরের চেয়ে ভালো রিটার্ন পাওয়া যায়। এই খাত যাতে আরও ভালো মুনাফা দিতে পারে, সে লক্ষ্যে কমিশন কাজ করছে।
ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি নিরসন করে। যা ব্যক্তিগত ভাবে করা কঠিন। এজন্য বিনিয়োগকারীদের মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে বিনিয়োগ করার আহ্বান করেন তিনি। তার মতে, ভালো কোম্পানি বাজারে না এলে মিউচুয়াল ফান্ড ভালো করবে না।
ড. হাসান ইমাম বলেন, শেয়ারবাজারের সবচেয়ে বড় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী মিউচুয়াল ফান্ড। এই খাতটি অনেক বাধা বা প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও ভালো করছে। শেয়ারবাজার যেখানে নেতিবাচক, সেখানে এ খাতের উন্নতি হয়েছে। তিনি বলেন, গত অর্থবছরে শেয়ারবাজার নেতিবাচক ছিল। ভালো কোম্পানিতে মিউচুয়াল ফান্ড থেকে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করা হয়। কিন্তু সেই ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত স্টক এক্সচেঞ্জের ৩০ সূচকও নেতিবাচক ছিল। এ অবস্থার মধ্যেও মিউচুয়াল ফান্ডগুলো ২০২২-২৩ অর্থবছরের ব্যবসায় ২৮৩ কোটি টাকার নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এমনকি গত ১০ বছরের মধ্যে ৭ বছরই সূচক বৃদ্ধির তুলনায় মিউচুয়াল ফান্ড ভালো করেছে।
তিনি বলেন, এ খাতের আয়ের প্রধান উৎস ২টি। এগুলো হলো- বিনিয়োগ করা কোম্পানিগুলো থেকে পাওয়া লভ্যাংশ এবং সেকেন্ডারি মার্কেটে শেয়ার বেচাকেনা করে পাওয়া মুনাফা। কিন্তু গত অর্থবছরে দুই খাতেই ছিল মন্দা। এর মধ্যেও লভ্যাংশ দিয়ে সম্পদ ব্যবস্থাপকরা দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মিউচুয়াল ফান্ড খাত ভালো করছে।
মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বন্ডের কুপন রেট থেকে কর অব্যাহতি দেওয়া দরকার। তাহলে ইউনিট হোল্ডাররা ভালো লভ্যাংশ পাবেন। এলআর গ্লোবালের সিআইও রিয়াজ ইসলাম বলেন, দেশের অর্থনীতি যেভাবে এগিয়েছে, সেভাবে শেয়ারবাজার এগোয়নি। তবে, শেয়ারবাজারের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে।