ডলারের দাম আরও সর্বনিম্ন ৫০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ এক টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। রপ্তানিকারকরা প্রতি ডলারের বিপরীতে পাবেন ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা ও প্রবাসীরা রেমিটেন্সের প্রতি ডলারে বিপরীতে পাবেন ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা। আমদানির বিপরীতে প্রতি ডলারের দাম হবে সর্বোচ্চ ১১০ টাকা।
ডলারের নতুন এই দাম আগামী রোববার থেকে কার্যকর হবে। এর আগে গত ১ আগস্ট থেকে ডলারের দাম সর্বনিম্ন ৫০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ এসোসিয়েন (বাফেদা) ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) বৈঠকে এ সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নতুন এই সিন্ধান্তের মাধ্যমে রপ্তানি ও রেমিটেন্সের ডলারের দাম একই পর্যায়ে নিয়ে আসা হলো। আগে রেমিটেন্সের ডলারের দাম রপ্তানির চেয়ে বেশি ছিল। এখন রপ্তানি ও রেমিটেন্সে ডলারের দাম সমান করা হলো।
আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) অন্যতম একটি শর্ত হচ্ছে সব অফিসিয়াল চ্যানেলে ডলারের একক দর নিশ্চিত করা। এই শর্ত পূরণে ব্যাংকগুলো এক ধাপ এগিয়ে গেল। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য খাতেও ডলারের একক দর প্রতিষ্ঠা করা হবে।
বৈঠক সূত্র জানায়, আগামী রোববার থেকে রপ্তানিকারকরা প্রতি ডলারে পাবেন সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা। বর্তমানে পাচ্ছেন সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা। প্রতি ডলারের তারা এক টাকা করে বেশি পাবেন।
প্রবাসীরা রেমিটেন্সের প্রতি ডলারের বিপরীতে রোববার থেকে পাবেন ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা। এখন পাচ্ছেন ১০৯ টাকা। প্রতি ডলারে তারা ৫০ পয়সা বেশি পাবেন।
আমদানির এলসি খোলার বিপরীতে প্রতি ডলার এখন কিনতে হচ্ছে সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা। আগামী রোববার থেকে কিনতে হবে সর্বোচ্চ ১১০ টাকা করে। এ খাতে প্রতি ডলারে বাড়ছে ৫০ পয়সা।
সব খাতেই ডলারের দাম বাড়ায় আন্ত:ব্যাংককেও এর দাম বাড়বে। তবে কোন ক্রমেই আন্ত:ব্যাংকে ১১০ টাকার বেশি দামে ডলার বিক্রি করা যাবে না। বর্তমানে সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এর সঙ্গে সমন্বয় রেখে অন্যান্য খাতেও ডলারের দাম বাড়ানো হবে। যা আগামী রোববার বা তারপর থেকে পর্যায়ক্রমে কার্যকর হবে। ডলারের সঙ্গে সমন্বয় করে অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রার দামও বাড়বে।
রপ্তানি ও রেমিটেন্সে ডলারের দাম বাড়ানোর ফলে ডলার কেনার খরচ বেড়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে গড়ে ৭৫ পয়সা কেনার খরচ বাড়বে। এদিকে বিক্রির ক্ষেত্রে দাম বাড়ানো হয়েছে মাত্র ৫০ পয়সা। ফলে ব্যাংকগুলোর ডলার কিনে বিক্রির ক্ষেত্রে দামে বৈষম্যের মধ্যে পড়বে বলে মনে করেন দেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যাংকাররা।
এদিকে বাফেদা থেকে দর নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও কিছু ব্যাংক এর চেয়ে বেশি দামে ডলার বেচাকেনা করছে। বিশেষ করে রেমিটেন্সের ডলার বেশি দামে কিনছে। বেশি দাম না দিলে তারা রেমিটেন্স পাচ্ছেন না। যে কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও এখানে কিছুটা শিথিলতা দেখাচ্ছে।
এদিকে চলতি আগস্টের ২৮ দিনে রেমিটেন্স এসেছে ১৭৫ কোটি ডলার। ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তা আরও বেড়ে ১৮০ কোটি ডলারের বেশি হতে পারে। গত জুলাইয়ে রেমিটেন্স এসেছিল ১৯৭ কোটি ৩২ লাখ ডলার। গত জুনে এসেছিল ২১০ কোটি ডলার। ফলে গত দুই মাসের তুলনায় আগস্টে রেমিটেন্স প্রবাহ কমে যাচ্ছে। এতে বাজারে ডলার সংকট আরও প্রকট হওয়ার আশংকা রয়েছে।