সফলতার গল্প শুনিয়ে আলেমদের উজ্জীবিত করলেন সাজ্জাদ হোসাইন সজিব
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:২৩ পিএম
শখের বসে পঞ্চগড়ে উৎপাদিত বিভিন্ন জিনিসের ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন মাওলানা সাজ্জাদ হোসাইন সজিব। এতে ভালো সাড়া পান তিনি। এরপর করোনা মহামারির মধ্যেই শাই টি নামে একটি চা পাতার কোম্পানি খুলেছেন তরুণ এই আলেম উদ্যোক্তা।
আলেমদের সর্ববৃহৎ অনলাইন বিজনেস প্লাটফর্ম ‘কওমি উদ্যোক্তা’ গ্রুপের ৩য় সম্মেলনে বিশেষ উদ্যোক্তা সম্মাননা সাজ্জাদ হোসাইন সজিব। সেখানেই নিজের সফলতার গল্প শোনান তিনি।
শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলের কনভেনশন হলে আয়োজিত এ সম্মেলনে কওমি উদ্যোক্তা গ্রুপের ফাউন্ডার রোকন রাইয়ানসহ সহস্রাধিক উদ্যোক্তা ও আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথিরা তরুণ আলেমদের উদ্যোক্তা হওয়ার বিভিন্ন গল্প শোনেন।
মাওলানা সাজ্জাদ হোসাইন সজিব শাইটি, আল-হিকমাহ ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস, আল-হিকমাহ টি অ্যাসোসিয়েট কোম্পানির প্রধান।
কওমি উদ্যোক্তা গ্রুপে বক্তব্য দিতে গিয়ে মাওলানা সাজ্জাদ হোসাইন সজিব বলেন, প্রত্যেক ব্যক্তির সফলতার পেছনে কারো না কারো হাত থাকে। আমি উদ্যোক্তা হওয়ার পেছনে অবদান রয়েছে কওমি উদ্যোক্তা গ্রুপের। এর মাধ্যমেই আমি উদ্যোক্তা হওয়ার অনুপ্রেরণা পেয়েছি এবং সামনে এগিয়ে যাওয়ার সাহস পেয়েছি।
ব্যবসা শুরুর কথা বলতে গিয়ে সাজ্জাদ হোসাইন সজিব বলেন, আমি শখের বসে পঞ্চগড়ে উৎপাদিত বিভিন্ন জিনিসের ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করি। এতে ভালো সাড়া পাই।
আমার মাথায় একটি আইডিয়া আসে– সারাদেশে আমাদের পঞ্চগড় জেলার সমতল ভূমির চায়ের চাহিদা বেশ ব্যাপক। আমি এই চা পাতাকে অনলাইনে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেয়ার মাধ্যমে সাড়া ফেলতে পারি এবং এটি নিয়ে খুব সহজেই ব্যবসা করতে পারি।
অতঃপর এলাকায় যারা আগ থেকেই চায়ের ব্যবসা করেন, এমন কয়েকজনের কাছ থেকে চা-পাতা কিনে ফেসবুকের মাধ্যমে বিক্রি শুরু করি। এই পণ্যেও আশাতীত সাড়া পেলাম।
পরে ভেবে দেখলাম, আমি নিজস্ব মোড়কে, নিজস্ব লাইসেন্সে একটি ব্র্যান্ড দাঁড় করাতে সক্ষম হলে আমার এই ব্র্যান্ডের মাধ্যমে একসময় অসংখ্য কর্মসংস্থান তৈরি করা সম্ভব হবে৷ আমার এই অগ্রণী ভূমিকা হয়তো অনেকের রিজিকের মাধ্যম হিসেবে আল্লাহ তায়ালার কাছে কবুল হবে এবং একদিন আমি উঁচু স্বরে বলতে সক্ষম হবো আলেমরা কখনো পরনির্ভরশীল নয়।
মাওলানা সাজ্জাদ বলেন, শুরুর দিকে বিভিন্ন বিষয়ে আমার সহযোগিতার প্রয়োজন পড়েছিল। পুঁজির দরকার ছিল। আমার কাছে ব্যবসায়ীক ভালো পরিকল্পনা থাকলেও অনেক নিকটাত্মীয়ও সেদিন আমাকে সহযোগিতা করেনি। অথচ বর্তমানে তাদের অনেকেই বিনিয়োগ করতে চান।
তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের ‘শাইটি’ র চা প্রতিদিন নূন্যতম এক হাজার কেজি বিক্রি হয়। যার দাম আনুমানিক ২/৩ লাখ টাকা। সারাদেশে আমাদের চা বিক্রেতা রয়েছে।
মাওলানা সাজ্জাদ বলেন, আমি কর্মচারীদের সঙ্গে মালিক-শ্রমিকের মত আচরণ করি না। বরং তাদের সঙ্গে সবসময়ই ভালো আচরণের চেষ্টা করি। আসলে তীব্র ইচ্ছে, সঠিক পরিকল্পনা এবং শক্তিশালী টিম থাকলে সামনে এগিয়ে যাওয়া খুব সহজ হয়।
মাওলানা সাজ্জাদ ওই সম্মেলনে আগত সদস্যদের থেকে জানতে চান, আপনারা উদ্যোক্তা হতে গিয়ে কি কখনো ঝুঁকি নিয়েছেন? তিনি বলেন, আমি নিয়েছি। একবার না বারবার ঝুঁকি নিয়েছি। নো রিস্ক নো সাকসেস। আসলে সঠিক সময় বুঝে রিস্ক না নিলে সফলতা আসে না।
মাওলানা সাজ্জাদ বলেন, আমাদের পরিকল্পনা আছে আগামী ২০২৫ সালের ভেতরে পঞ্চগড়ে আমরা একটি মিনি চা ফ্যাক্টরি তৈরি করব ইনশাআল্লাহ।