‘আলো আসবেই’-এর গোপন কথা আর গোপন থাকল না, যা বললেন মনিরা মিঠু
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৬ পিএম
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বিনোদন জগতের শিল্পীদের মধ্যে পক্ষ-বিপক্ষ দুটি দল লক্ষ্য করা যায়। এ সময় শিক্ষার্থীদের ওপর আওয়ামী লীগ এবং দলটির সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের দফায় দফায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। আবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলিও চালিয়েছে ছাত্র-জনতার ওপর। এতে কয়েক হাজারের অধিক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিনোদন জগতের তারকাদের একটি অংশ প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং রাজপথে নেমেও আন্দোলনে শরিক হয়েছেন।
আবার বিপক্ষ তারকাদের একটি অংশ হোয়াটসঅ্যাপের ‘আলো আসবেই’ নামক একটি গ্রুপ খুলে আন্দোলনের বিরোধিতা করেছেন। সম্প্রতি সেই গ্রুপের ১৪৬টি স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়েছে, যা নিয়ে সর্বমহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। এ অবস্থায় অভিনেত্রী মনিরা মিঠু নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। আবার সেই পোস্ট কিছুক্ষণ পর মনিরা মিঠুর ফেসবুকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ বিষয় অভিনেত্রী নিজে থেকেই ডিলিট করেননি বলে জানান— পোস্টটি তিনি মুছে দেননি এবং নিজেও বুঝতে পারছেন না তার ওই পোস্ট বারবার ডিলিট হওয়ার কারণ কি?
চলুন আমাদের কিংবদন্তি লেখক, সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হুমায়ুন আহমেদের সৃষ্টি অভিনেত্রী মনিরা মিঠুর পোস্টটি পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো—
মনিরা মিঠু লিখেছেন— ‘আলো আসবেই’ গ্রুপের মতো আরও একটি গোপন গ্রুপ আছে। সেখানে তারা বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে, শিল্প ও শিল্পীর ভালোমন্দ নিয়ে আলাপ-আলোচনা করে থাকেন। প্রায় আট মাস আগে বিঞ্জের একটি ধারাবাহিক নাটকের শুটিংয়ের সময় ডা. এজাজ ভাই, আমি, শামিম আহমেদ, আমরা— অনেকেই একটা খুবই স্বাভাবিক হাস্যোজ্জ্বল ভিডিও করি এবং সেটি আমার পেজে আপলোড দিই। সেই ভিডিওর ভিউ হয় মিলিয়নের ওপরে।
তিনি বলেন, কারণ এজাজ ভাই আর আমাকে দর্শক কানেক্টেড করতে পারে হুমায়ূন আহমেদ স্যারের নাটকের সঙ্গে।
মনিরা মিঠু বলেন, আমাদের শিল্পী সংঘ থেকে আমাকে অনুরোধ করা হয় সেই ভিডিওটি ডিলিট করে ফেলার জন্য। তিনি বলেন, আমি আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করলাম— কেন? একজন বললেন যে শিল্পী সংঘের সেক্রেটারি নাজনীন হাসান চুমকির নাকি সারারাত ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছিল যে, কীভাবে আমি এই অশ্লীল ভিডিও আপলোড দিলাম। কারণ ভিডিওর এক জায়গায় ডা. এজাজ ভাই কমলা খাচ্ছিলেন আর ‘বিচি’ শব্দটা উচ্চারণ করেছিলেন ।
এ অভিনেত্রী বলেন, স্ক্রিনশটে দেখি সুজাত শিমুল আমাকে তুমুল গালাগাল করছেন। সারাজীবন মনে থাকবে সুজাত শিমুলের এই লাইনটি— এরা শিল্পী নামের বিষ্ঠা। মানে আমি আর কি। তিনি কবিতার মতো আরও অনেক গালাগাল দিয়েছিলেন আমাকে সেই গোপন গ্রুপে। আমি অবাক হয়ে দেখলাম যে, শিল্পী সংঘের কোনো সিনিয়র সদস্য সুজাত শিমুলকে বলেন নাই যে, একটি ভিডিওর জন্য মিঠু আপাকে এইভাবে গালাগাল করছ কেন? নাজনীন হাসান চুমকি তো আমাকে ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারতেন যে, মিঠু আপা ভিডিওটি শ্রুতিমধুর না, মুছে ফেলেন । কারণ তার সঙ্গে আমার কোনো ধরনের বিবাদ ছিল না।
তিনি বলেন, শিল্পী সংঘের খুবই কনিষ্ঠ একজন সদস্য আমাকে সেই গোপন গ্রুপের স্ক্রিনশট পাঠিয়েছিলেন। আমাকে জানানোর সঙ্গে সঙ্গে ভিডিওটির কমেন্ট চেক করি, দেখলাম কোথাও আমার পেজের দর্শক এই ‘বিচি’ শব্দটির সঙ্গে কানেক্ট হননি। হয়তো বা আমার ও ডা. এজাজ ভাইয়ের ভক্তদের ‘কান’ শিল্পী সংঘের উচ্চপদস্থ পদ পাওয়া সদস্যদের ‘কান’-এর মত এত অশ্লীল নয়, এত হিংসাত্মক নয়। আমি কিন্তু সেই ভিডিওটি ডিলিট করেছিলাম অপমানে, ঘৃণায় আর লজ্জায়।
এ অভিনেত্রী বলেন, কিন্তু আমি ভীষণ বোকা, সেই ভিডিওটি ডিলিট না করলে আমি অনেক টাকা পেতাম । কারণ সেই সময়ে আমি নিয়মিত পেজে ভিডিও দিতাম এবং সেটা আমার একটা আয়ের উৎস ছিল। কিন্তু আমার বিজ্ঞ আদালত সুজাত শিমুলের ফাঁসির আদেশ আর নাজনীন হাসান না ঘুমিয়ে স্ট্রোক করতে পারেন— এ লজ্জায় আমি প্রায় ভিডিও দেওয়া বন্ধ করে দিই।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের নেত্রী দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর দলটির অনেক নেতাকর্মীও দেশছাড়ার চেষ্টা করেন। কেউ কেউ আবার আত্মগোপনেও চলে যান।