
প্রিন্ট: ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪৪ পিএম
কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন? যা খেলে সহজেই আরাম পাবেন

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:১৫ পিএম

আরও পড়ুন
ঈদ কিংবা বিয়ের অনুষ্ঠান—যে আয়োজনেই থাকুক না কেন, তাতে থাকে নানা ধরনের মাংসের আইটেম। এ ছাড়া দাওয়াত থাকে আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতেও। খাওয়ার কোনো কমতি থাকে না। ফলে মাত্রাতিরিক্ত প্রোটিন ও তেল মসলার খাবার বেশি খাওয়া হয়ে যায় না চাইতেও। এ কারণে অনেকেই উৎসব পরবর্তী সময়ে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন। আর এ সমস্যা দূর করতে আপনি কয়েক ধরনের বীজ নিয়মিত খেতে পারেন।
ইনস্টিটিউট অব মেডিসিন ইউএসএর তথ্যানুযায়ী, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে প্রোটিন দরকার ১ গ্রাম/কেজি বডি ওয়েট। অর্থাৎ একজন মানুষের ওজন যদি ৬০ কেজি হয়, আর তিনি যদি ভারি কোনো কাজ না করেন, তা হলে দিনে তার প্রোটিন দরকার ৬০ গ্রাম। এর চেয়ে বেশি হলেই কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেবে। আর সে কারণে এই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কয়েক ধরনের বীজ খাওয়া উচিত, তাহলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে।
বেশিরভাগ বীজে প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান থাকে, যার উচ্চ ফাইবার ও রেচক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রভাব কার্যকরভাবে কমাতে সাহায্য করতে পারে এগুলো। বীজ পানিতে ভিজিয়ে খেতে পারেন। আবার খেতে পারেন অন্য উপায়েও। আর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে আপনি কোন কোন বীজ খাবেন জেনে নিন—
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে দারুণ কার্যকর চিয়া বীজ। উচ্চ ফাইবার উপাদান এবং জেল তৈরির বৈশিষ্ট্যের জন্য সুপরিচিত এই বীজ। পানিতে ভিজিয়ে রাখলে চিয়া বীজ প্রসারিত হয় এবং জেলের মতো পদার্থ তৈরি করে, যা হজমের সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করতে পারে। এক গ্লাস পানির সঙ্গে ১-২ টেবিল চামচ চিয়া বীজ মিশিয়ে প্রায় ১৫ মিনিট রেখে দিন। পান করার আগে ভালো করে নাড়ুন। চাইলে এতে লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন।
এ ছাড়া ফাইবার ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড দিয়ে পরিপূর্ণ ফ্ল্যাক্সসিড বা তিসির বীজ। কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য একটি চমৎকার প্রাকৃতিক প্রতিকার এটি। এতে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড অন্ত্রকে লুব্রিকেট করতে সাহায্য করে, যার ফলে মলত্যাগ করা সহজ হয়। পাউডারের মতো মিহি গুঁড়া করে পানির সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন এই বীজ। আবার সিরিয়াল, দই বা সালাদে ছিটিয়েও খেতে পারেন।
আবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে তিলের বীজ খুবই কার্যকর। সিরিয়াল বা সালাদের সঙ্গে খেতে পারেন তিলের বীজ। এ ছাড়া গুঁড়ো করে স্ন্যাকসের ওপর ছিটিয়েও খাওয়া যায়।
সাইলিয়াম বীজ বা ইসুবগুল প্রাকৃতিক রেচক হিসেবে কাজ করে। এগুলোতে দ্রবণীয় ফাইবার থাকে, যা অন্ত্রে ফুলে যায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে। এক গ্লাস পানির সঙ্গে ১-২ চা চামচ ইসুবগুলের ভুসি মিশিয়ে ভালো করে নাড়ুন এবং সঙ্গে সঙ্গে পান করুন। নিয়মিত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়।
মেথি বীজ হজমে সহায়তা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এই বীজে মিউকিলাজিনাস বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যার অর্থ তারা অন্ত্র তৈলাক্ত করতে সাহায্য করে। ১-২ টেবিল চামচ মেথি বীজ সারারাত এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন এবং সকালে এটি পান করুন।
এ ছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে আরও কিছু সমাধানের উপায় আমরা খুঁজে পেয়েছি। তা প্রয়োগ করা যেতে পারে। এই যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত। আর নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত। এ ছাড়া প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ মিনিট হাঁটলেও উপকার পাওয়া যায়।
আর অত্যধিক মাংস খাওয়া যাবে না। দিনে ১০০-১৫০ গ্রামের বেশি না খাওয়াই ভালো। যেদিন বেশি মাংস খাওয়া হবে, সেদিন সঙ্গে শাকসবজি, গাজর, শসা— এসবও মেন্যুতে রাখবেন। দইয়ের মতো প্রিবায়োটিক খান। এগুলো অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। আবার কোষ্ঠকাঠিন্য উপশম করতে পুদিনা চা বা আদা চায়ের মতো ভেষজ চা পান করতে পারেন।