
প্রিন্ট: ০১ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৫০ এএম

ডা. রোকসানা হোসেন অথৈ
প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০২৫, ১০:৫২ এএম
-67de4209c6d94.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন
শিশুরা স্বাভাবিকভাবেই বড়দের অনুসরণ করে থাকে। রমজান মাসে যখন বড়রা রোজা পালন করে, শিশুরাও তখন রোজা পালন করতে আগ্রহী হয়। এক্ষেত্রে আমাদেরও শিশুদের রোজা পালন করতে সুযোগ দিতে হবে। তবে রোজা পালনের সময় ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে, যেন তাদের রোজা পালনে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে না হয়।
রোজা চলাকালীন শিশু যেন বাইরে খুব বেশি খেলাধুলা না করে এবং রোদ থেকে দূরে থাকে সেদিকে নজর রাখুন। শিশুরা সহজেই পানিশূন্য হয়ে যায়। তাই ইফতার ও সেহরির মাঝে সাত থেকে দশ গ্লাস পানি দিন। শিশু দুর্বল হয়ে পড়া কিংবা অতিরিক্ত ছটফট করা, চোখ ভেতরের দিকে ঢুকে যাওয়া, জিহ্বা শুকিয়ে যাওয়া ইত্যাদি পানিশূন্যতার লক্ষণ।
যে সব সতর্কতা শিশুদের রোজা পালনের জন্য জরুরি-
▶ ১০ বছর বা এর বেশি বয়সি বাচ্চারা সহজেই রমজান মাসে রোজা পালন করতে পারবে।
▶ রোজা পালনের আগে অবশ্যই শিশুকে রোজার ফজিলত, রোজা রাখার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে পরিপূর্ণভাবে জানাতে হবে।
▶ রোজা পালনে শিশুকে উৎসাহিত করার লক্ষে সেহরি ও ইফতারিতে শিশুদের পছন্দের খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন, কিন্তু লক্ষ্য রাখতে হবে যেন সঠিক পুষ্টিমান বজায় থাকে। সেহরির সময় শিশুকে অবশ্যই এমন খাদ্য সরবরাহ করতে হবে, যেন তা সারা দিনের স্বাভাবিক ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা মেটাতে সক্ষম। যেমন-দুধ, দই, ডিম, মাছ, মাংস, শাকসবজি, ফল।
▶ শিশুর উপবাসে একটা দীর্ঘ সময় পানি পান থেকে বিরত থাকতে হয়। তাই অবশ্যই লক্ষ রাখতে হবে যেন শিশু ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও তরল খাবার গ্রহণ করে। তরল জাতীয় খাবারের মধ্যে বিভিন্ন রকম ফলের জুস, ডাবের পানি ও দুধ অন্তর্ভুক্ত রাখতে পারেন।
▶ উপবাসের সময় শিশুকে দিনের বেলা পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম নিতে দিতে হবে, যেন বেশি দুর্বলতা অথবা পানি শূন্যতায় আক্রান্ত না হয়।
▶ ইফতারে অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার, যেমন-পেঁয়াজি, আলুর চপ, বেগুনি, চিকেন ফ্রাই, জিলাপি ইত্যাদি যতটুকু সম্ভব শিশুর খাবার তালিকা থেকে দূরে রাখুন।
▶ এ সময় ইসবগুলের শরবত, ডাবের পানি, দুধ, দই ইত্যাদি শিশুকে খেতে দিন।
▶ ভালো শর্করা জাতীয় খাবার, যেমন-খেজুর, আপেল, পেয়ারা, সেমাই, পেঁপে ইত্যাদি শিশুকে খেতে দিন। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন ইফতারিতে অতিরিক্ত খাবার এক সঙ্গে গ্রহণ করার কারণে বদহজম অথবা পেটে গ্যাসের সমস্যা না হয়। সেজন্য ইফতারি থেকে সেহরি পর্যন্ত শিশুকে অল্প অল্প করে ধাপে ধাপে খেতে দিন।
▶ রোজা রাখার জন্য সবাই শিশুর প্রশংসা করুন। এতে করে শিশু আরও উৎসাহিত হবে।
▶ উপবাসের সময় শিশুর যে কোনো শারীরিক সমস্যা হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
লেখক : শিশু বিশেষজ্ঞ।