Logo
Logo
×

ডাক্তার আছেন

বিপাকের সমস্যা থেকে হতে পারে ফ্যাটি লিভার

Icon

ডা. শাহজাদা সেলিম

প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২৪, ০১:৩৯ পিএম

বিপাকের সমস্যা থেকে হতে পারে ফ্যাটি লিভার

ফ্যাটি লিভার রোগ, এটি হেপাটিক স্টেটোসিস নামেও পরিচিত। এটি এক ধরনের বিপাকীয় সমস্যা, যেখানে লিভারের কোষে অতিরিক্ত চর্বি জমা হয়। এ রোগটি প্রধানত দু’ধরনের হতে পারে- অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ এবং নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ।

* কারণ

নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ-এর কারণগুলো প্রধানত জীবনযাত্রা এবং বিপাকীয় সিনড্রোমের সঙ্গে সম্পর্কিত। মূল কারণগুলো হলো-

▶ দৈহিক স্থূলতা : শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট জমে গেলে লিভারেও ফ্যাট জমা বাড়ে।

▶ টাইপ ২ ডায়াবেটিস : ইনসুলিন রেজিস্টান্সের কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে লিভারে ফ্যাট জমা হতে পারে।

▶ বিপাকীয় সিনড্রোম : উচ্চরক্তচাপ, উচ্চ ট্রাইগ্লিসারাইড, নিম্ন এইচডিএল কোলেস্টেরলসহ অন্যান্য বিপাকীয় সমস্যা।

▶ পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম : নারীদের মধ্যে হরমোনাল অস্বাভাবিকতা, যা ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে।

▶ অসামঞ্জস্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস : উচ্চ-ক্যালরি, উচ্চ-ফ্যাট এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার অতিরিক্ত সেবন করলে।

▶ জেনেটিক কারণ : পারিবারিক ইতিহাসে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ বা অন্যান্য লিভারের রোগ থাকলে এর ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

* করণীয়

রোগটি প্রতিরোধে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে-

▶ ওজন কমানো : স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন কমানো গুরুত্বপূর্ণ।

▶ খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন : শাকসবজি, ফলমূল, পুরো শস্য এবং লিন প্রোটিনের ওপর ভিত্তি করে একটি ব্যালেন্সড ডায়েট গ্রহণ করা।

▶ ক্যালরি নিয়ন্ত্রণ : প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ না করা।

▶ নিয়মিত ব্যায়াম : সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি মাত্রার অ্যারোবিক ব্যায়াম করা উচিত। যেমন হাঁটা, সাইক্লিং, সাঁতার ইত্যাদি।

▶ রেজিস্ট্যান্স এক্সারসাইজ : ওজন উত্তোলন বা রেজিস্ট্যান্স ব্যান্ড ব্যবহার।

* ডায়াবেটিস এবং চর্বি নিয়ন্ত্রণ

▶ রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ : ওষুধ, ইনসুলিন বা ডায়েটের মাধ্যমে এটি করা যায়।

▶ লিপিড প্রোফাইল নিয়ন্ত্রণ : ওষুধ বা খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে রক্তের লিপিড নিয়ন্ত্রণ করা।

* জীবনযাত্রার পরিবর্তন

ধূমপান পরিহার করতে হবে। অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন লিভারের ওপর চাপ বাড়ায়। প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করতে হবে।

* চিকিৎসা ও মনিটরিং

নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করা। নিয়মিত লিভার এনজাইম চেক করা। প্রয়োজনে লিভারের অবস্থা নির্ণয়ের জন্য ইমেজিং এবং বায়োপসি করা।

* মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা

মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য মেডিটেশন, যোগব্যায়াম বা অন্য কোনো রিলাক্সেশন টেকনিক ব্যবহার করা।

সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করলে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ-এর ঝুঁকি হ্রাস করা সম্ভব। একজন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সঙ্গে পরামর্শ করে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য পরিস্থিতি অনুযায়ী সঠিক ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা করা উচিত।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম