আয়েশা আক্তার। ফাইল ছবি
ডেঙ্গুতে গত ২২ বছরের সব রেকর্ড ভেঙে ২০২৩ সালে সারা দেশে মোট আক্রান্ত হন ৩ লাখ ২১ হাজার মানুষ এবং মৃত্যুবরণ করেন ১ হাজার ৭০৫ জন।এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬১৬ জন। মারা গেছেন ২১ জন।
২০২৩ সালে জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৮১৮, মারা গিয়েছিলেন ৯ জন।
বাংলাদেশ ডেঙ্গু ফিভার নামের সঙ্গে পরিচিত হয় ২০০০ সালে। তার আগে ঢাকা ফিভার নামে পরিচিত ছিল। সেই ২০০০ সাল থেকে ডেঙ্গু শুরু হয়ে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা পাওয়া যাচ্ছে।
ডেঙ্গু রোগীর আগে যে প্যাটার্নটা ছিল তা হলো কোনো বছর বাড়লে তার পরের বছর কম থাকত। অল্টারনেটিভ বছর এ সংখ্যাটা বেশি থাকত। ২০০০ সালে প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর তার পরের কয়েকটা বছর ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ওঠানামা করত। মাঝে অনেকটা কমে গিয়েছিল আক্রান্তের সংখ্যা মৃত্যুর সংখ্যা। তার পর ২০১৯ সালে ডেঙ্গু রোগী সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ল। আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখের বেশি।
এরপর কোভিডের সময় ২০২০সালে আক্রান্তের সংখ্যা কমে গিয়েছিল, তার পর ২০২৩ সালে সংখ্যা ভয়াবহ ধারণ করলো মৃত্যু অনেক বেশি ছিল।
গতবছর ডেঙ্গু তার ধরন পরিবর্তন করেছিল। আগের মত প্রচন্ড জ্বর মাথাব্যথা ছাড়াই দেখা যেত ডেঙ্গু রোগী।
এই ধরন পরিবর্তন হওয়ার পরে উপসর্গগুলো নতুন হওয়ার কারণে মানুষ সহজে বুঝতে পারত না এবং চিকিৎসকের শরণাপন্ন দেরি করে আসত, তাই মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি ছিল।
সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। তাই অবশ্যই অবহেলা করা যাবে না ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু ফিভারে প্রচন্ড জ্বর মাথাব্যথা ব্যথা হতে পারে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় হালকা জ্বর অথবা ডায়রিয়া হচ্ছে। রোগী বুঝতেও পারছে না যে সে জন্য যদি সামান্য জীবনযাত্রার ব্যাহত হয়, যদি অসুস্থ অনুভব করে মাথাব্যথা অথবা অন্য কোনো উপসর্গ তাহলে শুরুতে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে এবং ডেঙ্গু টেস্টটা করে নিতে হবে।
আরও পড়ুন: পিল বন্ধ করার পরও গর্ভে সন্তান না এলে কী করবেন?
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় ডেঙ্গু রোগীর জন্য প্রস্তুত করা আছে আলাদা করে ডেঙ্গুকর্নার। দেশের সব সরকারি হাসপাতাল তৈরি করে রাখা আছে।
ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে প্রতিটি মানুষকে দায়িত্বশীল হতে হবে। নিজের ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বালতির পানি প্রতি ৩ দিন পর পর ফেলে দিতে হবে এবং পানিটা ঢেকে রাখতে হবে এবং কোথাও পানি জমতে দেওয়া যাবে না
ভয় নয়, আতঙ্ক নয়, ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে চাই সতর্কতা।
লেখক: আয়েশা আক্তার
উপ-পরিচালক
২৫০ শয্যার টিবি হাসপাতাল।