স্ট্রেস নেওয়া, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করা, অপরিচ্ছন্ন থাকা, বিভিন্ন হরমোনের তারতম্যের কারণে টিনএজার ও মধ্যবয়সি নারীদের মধ্যে অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রতি মাসের শেষে নির্দিষ্ট সময়ের অর্থাৎ ২৮ দিন পর পর মাসিক হওয়া মানে আপনার শরীর সুস্থ এবং সন্তান ধারণের যোগ্য অবস্থায় আছে।
কিন্তু অতিরিক্ত মানসিক চাপে ভুগলে অনেক সময় হাইপোথ্যালামাস ঠিকমতো কাজ করে না। যার ফলে মাসিক অনিয়মিত হতে পারে।
ওজন বেশি হলে যেমন সমস্যা, ওজন অতিরিক্ত কম হলেও সমস্যা হতে পারে।
পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম
হরমোনের তারতম্যের কারণে মাসিকের সমস্যা দেখা যায়-
মাসিক চক্র ডিম্বাশয় এবং জরায়ুতে পরিবর্তন ঘটে;
মাসিক চক্র আমাদের মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস এবং পিটুইটারিগ্রন্থি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
হাইপোথ্যালামাস গোনাডোট্রপিন-রিলিজিং হরমোন (GnRH) নিঃসরণ করে। ফলে পিটুইটারি ফলিকল-স্টিমুলেটিং হরমোন (FSH) এবং লুটিনাইজিং ও লুটিনাইজিং হরমোন (LH) নিঃসরণ করে।
বিভিন্ন কারণে অনিয়মিত হতে পারে মাসিক
১) যখন প্রথম মাসিক শুরু হয়। মেয়েদের ১-২ বছর অনিয়মিত হতে পারে মাসিক।
২) মেনোপজ হওয়ার আগের ৪-৫ বছর হরমোনের তারতম্যের জন্য।
৩) ব্রেস্ট ফিডিং মাদার যারা আছেন, তারা যখন বাচ্চাকে বুকের দুধপান করান, তখন আট মাস মাসিক বন্ধ থাকতে পারে।
৪) অতিরিক্ত টেনশনে থাকলে।
৫) হঠাৎ খুব ওজন বেড়ে বা কমে গেলে।
৬) হরমোনজনিত রোগ পিসিওএস হলে।
৭) থাইরয়েড সমস্যা দেখা দিলে।
৮) জরায়ুতে টিউমার, পলিপ অথবা অন্য কোনো সমস্যা থাকলে।
অনিয়মিত মাসিক হলে বাচ্চা নিতে সমস্যা হয়। কারণ প্রত্যেক মাসে ওভারি বা ডিম্বাশয় থেকে একটা ম্যাচিউর বা পরিপক্ব ডিম্বাণু বের হয়।
অনেক সময় দেখা যায় অনিয়মিত মাসিক তাদের ওভারিতে অনেক ছোট ছোট সিস্ট তৈরি হয়, সেখানে কোনো ম্যাচিউর ফলিকল থাকে না।
তখন বিভিন্ন হরমোনের তারতম্যের জন্য শরীরে হাতে পায়ে মুখে অবাঞ্ছিত লোম গজায় তাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় বন্ধ্যত্ব তৈরি হয়।
এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করতে হবে
লেখক: সহকারী পরিচালক, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টিবি হাসপাতাল।